বড় একটা নৌকোর ডেকে দাঁড়িয়ে আছে অলসেন, রেলিঙে ঝুঁকে তাকিয়ে আছে সাগরের পানির দিকে। দিকচক্রবালের নীলচে সুতোর ওপর নাচছে প্রথম ভোরের রক্তলাল সূর্য, তীর্যক কিরণ ছড়াচ্ছে। পানির গায়ে লালের ছোঁয়া, মনে হচ্ছে রক্ত ছড়িয়ে পড়ছে সাগরে। স্বচ্ছ পানি, বহু নিচে দেখা যায়।
সুযোগটা কাজে লাগিয়ে সাগর-তলের সাদা বালিব ওপর মুক্তোর সন্ধানে ঝিনুক খুঁজে বেড়াচ্ছে কয়েকজন রেড ইন্ডিয়ান ডুবুরি। বারবার ভেসে উঠে দম নিয়ে আবার ডুব দিচ্ছে তারা। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের কাজ দেখছে অলসেন। তার মনে এখন নতুন একটা চিন্তা উদয়। হয়েছে। তাকে ডুবুরির কাজ শিখতে হবে। ভাল মতো জানতে হবে। কিভাবে মুক্তো শাহরণ করা হয়।
সারাদিন তো বাকিই রয়েছে, এই জাৈরেই ভ্যাপসা গরম পড়ে গেছে। মন থেকে সমস্ত দ্বিধা ঝেড়ে ফেলল অলসেন, তারপর কাপড় খুলে ঝাঁপিয়ে পড়ল সাগরের বুকে। একটু পরই বোঝা গেল এই কাজে নতুন হলেও ফুসফুস পোক্ত হওয়ায় বেশিরভাগ ডুবুরির চেয়ে বেশিক্ষণ পানির তলায় থাকতে পারে সে। উৎসাহ বেড়ে গেল তার, মেতে উঠল পরিশ্রমসাধ্য সুকঠিন এই কাজে।
কিন্তু একটু পরেই ঘটল ব্যতিক্রমী এক ঘটনা। ডুব দিয়েছে অলসেন, হঠাৎ দেখল সঙ্গের ডুবুরিরা ঝটপট ওপরের দিকে রওনা হয়েছে। হাঙর-টাঙর নাকি! করাত মাছ? না, ওই যে দেখা যাচ্ছে। আজব প্রাণীটাকে। হাত-পাগুলো ব্যাঙের মতো। অর্ধেক মানুষ, অর্ধেক মাছ। রুপোলি তার আঁশ। চোখ দুটো বড় বড়, কাচের মতো।
অলসেন বালির ওপর দাঁড়াতেই জন্তুটা এসে তার চেপে ধরল। ভয়ে হতভম্ব–অলসেন লক্ষ করল প্রাণীর মুখ মানুষের মতোই। রীতিমতো সুদর্শন বলতে হয় একেচোখ দুটো তার। চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট করে দিয়েছে। কি যেন বলছে ওটা তাকে। পানির তলায় তার গলার আওয়াজ পাওয়া গেল না। শুধু ঠোঁট নড়তে দেখল ও।
দম ফুরিয়ে গেছে অলসেনের। দ্রুত পা নেড়ে ওপরে উঠতে শুরু করল সে। জন্তুটাও তার সঙ্গে ওপরে উঠছে! ভেসে উঠে নৌকোর ধার ধরে ফেলল অলসেন, ঝাকি দিয়ে জটার হাত ছাড়িয়ে চট করে উঠে পড়ল নৌকোয়। হাত ফস্কে যাওয়ায় প্রাণীটা ঝপ করে সাগরের পানিতে পড়ে তলিয়ে গেল।
আবার ভাসল ওটা। স্প্যানিশ ভাষায় বলল, অলসেন, গুট্টিয়ারার ব্যাপারে তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা আছে।
বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠল অলসেনের। গুট্টিয়ারার কথা যখন বলছে এ মানুষ না হয়ে যায় না। কিন্তু কে ও? অশরীরী অথবা পিশাচ হলে তো….
কৌতূহলী অলসেন বলল, বলো, আমি শুনছি।
সাগর থেকে উঠে এলো প্রাণীটা, নৌকোর কিনারায় বসল। চোখ দুটো বড় নয় তার, ওগুলো চশমার কাঁচ, এখন মনে হচ্ছে।
প্রাণীটাই কথা শুরু করল, নাম আমার ইকথিয়ান্ডার। তোমার মনে পড়ে আমাকে? সেদিন গুট্টিয়ারার মুক্তোর মালাটা আমিই সাগর থেকে তুলে দিয়েছিলাম।
বিস্ময় শুধু বাড়ছে অলসেনের। বলল, কিন্তু তখন তোমার চোখ মানুষের মতোই ছিল!
হাসল ইকথিয়ান্ডার। চশমা দেখাল। এটা চশমা। খুলে ফেলা যায়।
ইন্ডিয়ান ডুবুরিরা কেউ নৌকোয় নেই। ইকথিয়ান্ডারকে দেখে ভয় পেয়ে নৌকো ছেড়ে সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা, তীরে পৌঁছে গেছে এতক্ষণে। সহজে আর এমুখো হবে না কেউ। দূরে, পাথরের আড়াল নিয়ে ইকথিয়ান্ডার আর অলসেনকে দেখছে তারা কৌতূহলী হয়ে। দেখতে পাচ্ছে ওদের, দূরত্বের কারণে কথা শুনতে পাচ্ছে না।
ইকথিয়ান্ডার বলল, গুট্টিয়ারাকে তুমি খুব ভালবাসো, তাই না?
হ্যাঁ, বাসি, স্বীকার করল অলসেন।
দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো ইকথিয়ান্ডাকের বুক চিরে। আর গুট্টিয়ারা? সে-ও কি তোমাকে ভালবাসে?
হ্যাঁ। মনে হয় আমাকেও গুট্টি ভালবাসে।
কিন্তু ও যে আমাকেও ভালবাসে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানাল ইকথিয়ান্ডার।
অলসেন বলল, সেটা তার একান্ত নিজের ব্যাপার। এব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।
নিজের ব্যাপার মানে! বিস্ময় প্রকাশ করল ইকথিয়ান্ডার। সে তোমার বাগদত্তা স্ত্রী নয়?
এবার অলসেনও বিস্মিত হলো। কই! কে বলল! না তো! গুট্টি আমার বাগদত্তা নয়।
কিন্তু সেই ঘোড়সওয়ার যে বলে গেল গুট্টিয়ারা বাগদত্তা? রাগ লাগছে ইকথিয়ান্ডারের। ওকে বোকা মনে করে খেলাচ্ছে নাকি অলসেন। কি তার উদ্দেশ্য?
আমার বাগদত্তা? বিস্ময় কাটছে না অললেনের।
ইকথিয়ান্ডারের মনে হলো কোথায় কি যেন একটা ভুল হয়েছে তার। একটু থতমত খেল ও। ঠিকই, ওই ঘোড়সওয়ার তো একথা বলেনি যে গুট্টিয়ারা অলসেনের বাগদত্তা। তাহলে কি সেই অশ্বারোহী লোকটাই গুট্টিয়ারার হবু স্বামী? কিন্তু তা কি করে সম্ভব! ওই লোকটা দেখতে ভাল নয়, তাছাড়া তার বয়সও গুট্টিয়ারার চেয়ে অনেক বেশি। না, সে নিশ্চই গুট্টিয়ারার কোন আত্মীয় হবে।
এখানে কি খুঁজছিলে? জানতে চাইল ইকথিয়ান্ডার। মুক্তো?
একের পর এক প্রশ্নে বিরক্ত বোধ করছে অলসেন। গম্ভীর চেহারায় বলল, এত প্রশ্ন যে করছ সেটা কিন্তু আমার ভাল লাগছে না। তবে তোমার কাছে আমার লুকাবার কিছু নেই। হ্যাঁ, আমি মুক্তো খুঁজছিলাম।
মুক্তো তোমার খুব পছন্দ?
অর্থনৈতিক বিষয়টির অবতারণা করল না অলসেন। একটু আপত্তির সুরেই বলল, আমি তো মেয়ে নই যে মুক্তো ভালবাসব। মেয়েরা মুক্তোর মালা গলায় পরে
দুজনের আলোচনা চলছে। ইকথিয়ান্ডারের সরলতা আর আন্তরিকতার কারণে অলসেনের মন থেকে বিরূপ ভাবটা ধীরে ধীরে কেটে গেল। দুই বন্ধুর মতো আলাপ জুড়ল ওরা। অলসেনের কাছ থেকে জানতে পারল ইকথিয়ান্ডার, পেদরো জুরিতা ইতোমধ্যেই জোর করে গুট্টিয়ারাকে বিয়ে করে ফেলেছে।
নিরব হাহাকার গুমরে মরল ইকথিয়াল্ডারের বুকের ভেতর। শুধু বলল ও, কিন্তু ও যে আমাকে ভালবাসত।
ধীরেসুস্থে পাইপে তামাক ভরল অলসেন। তিক্ত হেসে বলল, আমারও তা-ই ধারণা ছিল। কিন্তু সেদিন তুমি নাকি ওর চোখের সামনে সাগরে তলিয়ে গিয়েছিলে! ওর ধারণা তুমি মারা গেছ।
নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে হলো ইকথিয়ান্ডারের। কেন যে ও বলেনি সাগরের তলাতেও মাছের মতোই বেঁচে থাকতে পারে ও বহাল তবিয়তে! পাহাড়ী সৈকত থেকে সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়লে সেটাকে যে গুট্টিয়ারা আত্মহত্যা ভেবে নিতে পারে একথা একবারও মাথায় খেলেনি ওর।
কিন্তু বিয়েটা এত তাড়াতাড়ি করল কেন ও? ধরা গলায় জানতে চাইল ইকথিয়ান্ডার।
কারণ পেদরো জুরিতা তাকে বলেছে সেদিন সাগরে তলিয়ে যাওয়া থেকে সে-ই আসলে গুট্টিয়ারাকে বাঁচিয়েছে, বলল অলসেন। কিন্তু গুট্টিয়ারা বলেছিল অদ্ভুত এক ভয়ঙ্কর চেহারার প্রাণী নাকি তাকে বাঁচিয়েছিল!
থম মেরে কিছুক্ষণ বসে থাকল ইকথিয়ান্ডার। তারপর ধল, কেন রাজি হলো গুট্টিয়ারা এই বিয়েতে?
কারণ ওর বাবা বুড়ো বালথাযারেরও জামাই হিসেবে পেদরো জুরিতাকে খুব পছন্দ, কাজেই…
ইকথিয়ান্ডার বলল, তুমি তো তাকে ভালবাসতে, তুমি কেন তাকে বিয়ে করলে না?
হাসল অলসেন। প্রথমে আমি আর গুট্টিয়ারা শুধুই বন্ধু ছিলাম। সম্পর্কটা আস্তে ধীরে বদলে যাচ্ছিল। আর কদিন পরে কি হতো জানি। না, কিন্তু গুট্টিয়ারাকে আমি বলেছিলাম আমার সঙ্গে উত্তর আমেরিকায় চলে যেতে।
গেলে না কেন?
পথ খরচাও ছিল না আমার।
ইকথিয়ান্ডারের মনে পড়ে গেল, সাগরের নিচে মুক্তোর একটা টিলা গড়ে তুলেছে ও। সেখান থেকে কয়েকটা মুক্তো দিলেই তো ওদের পথখরচা হয়ে যেত। দীর্ঘশ্বাস ফেলল ইকথিয়ান্ডার, আফসোস করে বলল, শুধু আমি যদি আগে জানতাম!।
তবু জাহাজের টিকেট আমাদের কাটা হয়ে গিয়েছিল, বলল অলসেন। কথা ছিল সকালে বালথাযারের দোকানে গিয়ে ওকে জানিয়ে আসব সেরাতে দশটার সময় জাহাজ ছাড়বে। কিন্তু গিয়ে শুনলাম গুট্টিয়ারা সেখানে নেই। বালথাযার আমাকে বলল, সে আর কোনদিনই এ দোকানে আসবে না থাকতে। ক্যাপ্টেন পেদরো জুরিতা তাকে গাড়ি করে নিয়ে গেছে তার ডলোরেসের বাড়িতে। জুরিতার মা এখানেই থাকে। বউকেও সে ওখানে রাখবে।
বিস্মিত ইকথিয়ান্ডার বলে বসল, ঐ বদমাশ পেদরো জুরিতাকে খুন করে গুট্টিয়ারাকে তুমি মুক্ত করে আনলে না কেন।
তিক্ত হাসল অলসেন, তারপর মাথা নেড়ে বলল, খুনের কথা বলছ? আমি করব খুন? তুমি বোধহয় খুন-খারাপিতে অভ্যস্ত?
লজ্জা পেল ইকথিয়ান্ডার। দ্রুত বলল, না, তা নয়! আসলে আমি…ভাবতেই পারছি না। অসহ্য লাগছে আমার। ওরা এত অবিবেচক! ওই পেদরো আর বালথাযার, দুজনই।
ঠিকই বলেছ, সায় দিল অলসেন। দুজনই ওরা খুব খারাপ লোক। ওদের ওপর রাগ হওয়ায় তোমাকে দোষ দিতে পারছি না। কিন্তু জীবনটাকে তুমি যেমন ভাবছ আসলে তা তেমন নয়। বড় জটিল, বড় কষ্টদায়ক এই জীবন, অথচ দেখো, মরে যেতে চাইলেও মৃত্যুর আগের মুহূর্তে বাঁচতে ইচ্ছে করে। আসলে, হাসল অলসেন, গুট্টিয়ারা নিজেই শেষে পালিয়ে যেতে আপত্তি করেছিল।
ও আপত্তি করল নিজে?
হ্যাঁ।
কেন?
তোমার মৃত্যু হয়েছে একথা ভেবে মনটা ভেঙে গিয়েছিল ওর। আমার চেয়ে তোমাকেই বেশি ভালবেসেছিল গুট্টিয়ারা। ও আমাকে বলেছিল, আমার জীবনের সব কিছু শেষ হয়ে গেছে, অলসেন। আর কোন কিছুতেই আমার কোন আগ্রহ নেই। তাই পেদরোর আনা পাদ্রি, যখন আমাকে বিয়ের আঙটি পরিয়ে দিল, তখন স্রষ্টার এ-ই ইচ্ছে ভেবে মেনে নিলাম আমি। স্রষ্টা যাদের একসঙ্গে করছেন, তাদের একসঙ্গে থাকাই ভাল।
উত্তেজিত ইকথিয়ান্ডার ক্ললে উঠল, স্রষ্টা! কিসের স্রষ্টা? আমার বাবা বলেন, স্রষ্টার কাহিনী ভূতের কাহিনীর মতোই, গাঁজাখুরি কাহিনী: ছাড়া আর কিছু নয়। একথা তুমি গুট্টিয়ারাকে বোঝাতে পারলে না?
পারতাম না। গুট্টিয়ারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে। মিশনারিরা তাকে ভাল শিক্ষাই দিয়েছে। তবে একটা কথা, পেদারো জুরিতার মুখে শুনে আমাকে বলেছে গুট্টি, পাখি খাচায় ভরা গেছে, কিন্তু মাছটাকে এখনও ঘুরতে বাকি। মাছ বলতে পেদরো কাকে বোঝাচ্ছে কে জানে। সেই সাগর-দানোর কথা সম্ভবত। সে নাকি মাছের মতোই পানিতে থাকতে পারে। মাছেদের বন্ধু সে, ডুবুরি আর জেলেদের সেজন্যে ভয় দেখায়।
সতর্ক ইকথিয়ান্ডর নিজের সম্বন্ধে কিছু বলল না অলসেনকে। জিজ্ঞেস করল, ক্যাপ্টেন পেদরো জুরিতার সাগর-দানোকে, কিজন্যে দরকার?
পেরো দানোকে দিয়ে মুক্তো তোলাতে চায়, বলল অলসেন। ও চায় মুক্তো বিক্রি করে আর্জেন্টিনার সরচেয়ে ধনী লোক হতে। সেকারণেই তার সাগর-দানোকে দুরকার। তুমি সাবধান থেকো। চোখের দিকে তাকাল অলসেন। তুমিই সেই সাগর-দানো নও তো?
হ্যাঁ, আমিই সেই দানো, স্বীকার করল ইকথিয়ান্ডার। কিন্তু আমি তো মানুষও। গুট্টিয়ারাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি। ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না। যে করে হোক ওর সঙ্গে আমার দেখা করতেই হবে। উত্তেজনায় নৌকোর পাটাতনে দাঁড়িয়ে পড়ল ও।
ওর দিকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে অলসেন। ভাবছে এই যে সামনে দাঁড়ানো সুদর্শন যুবক, এ তো একেবারেই মানুষের মতো। তাহলে লোকে একে দানো বলে কেন? একে নিয়ে এত আলোচনা, লেখালেখির কারণ কি? পানির নিচে থাকতে পারার অস্বাভাবিক গুণই কি শুধু এর কারণ, নাকি সত্যি কোন দানবীয় কাণ্ড করেছে যুবক! কিন্তু দেখে তো তেমন মানুষ বলে মনে হয় না যুবককে।
পেদরোর বাড়িটা কোথায় জানো? ইকথিয়ান্ডারের কথায় বাস্তবে ফিরল অলসেন। জানো কিভাবে ওখানে পৌঁছোতে হয়?
অলসেন বিনা দ্বিধায় ইকথিয়ান্ডারকে পেরোর বাড়ির হদিস জানিয়ে দিল। তার সঙ্গে হাত মেলাল ইকথিয়ান্ডার। বিদায়ের আগে আবেগ জড়িত স্বরে বলল, আমাকে ক্ষমা কোরো, অলসেন। প্রথমে তোমাকে আমি শত্রু ভেবেছিলাম। এখন বুঝছি তুমি আসলে আমার বন্ধু। বিদায় তাহলে, বন্ধু!
কথা শেষ করে সাগরের পানিতে নেমে পড়ল ইকথিয়ান্ডার। ওর গন্তব্য এখন পারানা নদী। পারানা নদীর পাড়ে পারানা শহর, সেটাকে ছাড়িয়ে আরও উত্তরে যেতে হবে ওকে।
নৌকোয় দাঁড়িয়ে নতুন বন্ধুকে পেছন থেকে দেখছে অলসেন। দেখতে দেখতে ছোট একটা বিন্দু হয়ে গেল ইকথিয়ান্ডার। আস্তে আস্তে চোখের সামনে থেকে মিলিয়ে গেল।