ওদের দেখেই চেঁচিয়ে বললেন স্পিলেট, ক্যাপ্টেনকে পাওয়া গেল না। অনেক খুঁজলাম, কিন্তু ক্যাপ্টেনের পায়ের ছাপ পর্যন্ত চোখে পড়ল না। একটু থেমে আবার বললেন, খাবার-খাবারের জোগাড় করেছ?
তা করেছি, জবাব দিল পেনক্র্যাফট, কিন্তু পানি? পানির কি হবে?
তার জন্যে ভাবনা নেই। একটা মিষ্টি পানির হ্রদ পেয়ে গেছি আমরা, আমি আর নেব প্রাণ ভরে পানি খেয়ে এসেছি, দুটো রুমাল ভিজিয়ে এনেছি তোমাদের জন্যে এগুলো নিংড়েই আপাতত সেরে নাও কাজটা।
শুকনো কাঠ জোগাড় করে গুহায় এসে ঢুকল ওরা। খেতে পাবে সেই আশায় উৎফুল্ল অভিযাত্রীরা। চিন্তিত কেবল পেনক্র্যাফট। ওর দেশলাইয়ের বাক্সটি হারিয়ে গেছে। ওর কথা শুনে মুচকি হাসলেন স্পিলেট। পকেটে হাত দিয়ে শেষ সম্বল একটা মাত্র কাঠি বের করে দিলেন নাবিকের হাতে। এটা পেয়ে দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে গেল পেনক্র্যাফটের। যদি অন্য কিছুতে আগুন ধরাবার আগেই কাঠিটা নিভে যায়?
স্পিলেটের নোট বইয়ের একটা পাতা ছিড়ে পাকিয়ে নিল পেনক্র্যাফট তারপর একটা শুকনো পাথর কুড়িয়ে নিয়ে ওতে ঘষল দেশলাইয়ের কাঠিটা। জ্বলল।
ভয়ে ভয়ে হার্বার্টকে ডাকল সে। ভয় পেয়েছে হার্বার্টও, তবে ঘষে ঘষে শেষ পর্যন্ত হার্বার্টই কাঠিটা জ্বালল। প্রথমে পাকানো কাগজটায় আগুন ধরিয়ে দিল। শুকনো ঘাস-পাতা এক জায়গায় জড়ো করে ওতে আস্তে করে রাখল জলন্ত কাগজ। দাউ দাউ করে আগুন ধরে গেল ঘাস-পাতায়। এবার একটা একটা করে শুকনো কাঠে আগুন ধরিয়ে বড়সড় আগুনের কুন্ড বানিয়ে ফেলা হলো। চুকল খাওয়া-দাওয়ার পাট।
ধীরে ধীরে রাত নামল অজানা জায়গায়। সেই সাথে কনকনে শীত আগুনের কুন্ড ঘিরে বসে একথা ওকথা আলোচনা করতে লাগল সবাই। কথা বলল না শুধু নেব। গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছে সে। ভাবছে মনিবের কথা।