প্রথমদিনেই বিশ মাইল পথ পার হলেন ক্যাপ্টেন। সন্ধ্যা নামতেই বরফ দিয়ে ইগলু বানিয়ে রাত যাপনের ব্যবস্থা করা হল। সারাদিনের পথ চলায় সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। রাতের খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লেন ক্যাপ্টেন ও তার সঙ্গীরা। শীতের প্রকোপ কমার কোন লক্ষণই যেন নেই। আপাদমস্তক গরম কাপড়ে আবৃত থাকা সত্ত্বেও অভিযাত্রীরা সবাই যেন জমে যাচ্ছে! শ্বাস নিতেও কষ্ট…
দি ভয়েজেস এন্ড এডভেঞ্চার অফ ক্যাপ্টেন হ্যাটেরাস
১২. অশান্তি, অসন্তোষ চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে
অশান্তি, অসন্তোষ চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে অভিযাত্রীদের। সিম্পসনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। বাঁচার কোন আশাই নেই। ডক্টরকে চোখের সেই ছোঁয়াচে রোগে পেয়ে বসেছে। চোখের যন্ত্রণায় রীতিমত কাহিল অবস্থা তার বেশি অনিয়ম হলে অন্ধ হয়ে যাবার ভয় আছে। চলার পথ এখন আরও দুর্গম। মাঝে মাঝে স্লেজ ঘাড়ে করে অনেক উঁচু পাহাড়ে উঠতে হচ্ছে। তার ওপর তুষার ঝড়…
১৩. বিশাল বরফ প্রান্তর
বিশাল বরফ প্রান্তর। হাড় কাঁপানো শীত। জ্বলন্ত ফরওয়ার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ক্যাপ্টেন, ডক্টর ক্লবোনি, বেল আর জনসন। সতেরোজনের একজন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। বারোজন বিশ্বাসঘাতকতা করে নৌকা নিয়ে পালিয়েছে। আর অসহায় ওরা চারজন রয়ে গেছে বরফ রাজ্যে। সহায়-সম্বলহীন। না আছে রসদ, না জ্বালানি কিংবা আশ্রয়! ফিরে যাবার জন্যে জাহাজ তো দূরের কথা, একটা নৌকাও নেই।…
১৪. আবার নতুন করে যাত্রা শুরু হল
আবার নতুন করে যাত্রা শুরু হল। এবারের পথ প্রায় চারশো মাইল। সময় লাগবে দুসপ্তাহের কিছু বেশি। লক্ষ্যস্থল পরপয়েজ জাহাজ। আলটামন্টের কাছ থেকে জানা গেছে, জাহাজে খাবারের কোন অভাব নেই। নেই কয়লার অভাব। রসদপত্র যা প্রয়োজন সবই আছে। একবার কোনমতে পরপয়েজে পৌঁছতে পারলেই হল। শীতটা আরামে কাটিয়ে বরফ গলা শুরু হলে দেশে ফিরে যাওয়া যাবে। পরপয়েজ…
১৫. ডক্টর আর জনসন ভালুকটার মাংস কেটে
ডক্টর আর জনসন ভালুকটার মাংস কেটে টুকরো টুকরো করে নিলেন। প্রায় দেড়শো পাউন্ড ওজন ভালুকটির। ডক্টর কিছুটা আশস্ত হলেন, যাক অন্তত বেশ কিছুদিন খাবারের চিন্তা করতে হবে না। একগাদা মাংসের টুকরো নিয়ে ওরা ফিরে এল ইগলুতে। এতদিন অনাহারে থাকার পর একসঙ্গে এত মাংস দেখতে পেয়ে সবাই কাঁচা মাংসের ওপরই ঝাপিয়ে পড়ে আর কি! কিন্তু ডক্টর…
১৬. ডক্টর ক্লবোনির বুদ্ধির জোরে
ডক্টর ক্লবোনির বুদ্ধির জোরে অভিযাত্রীরা এযাত্রা রক্ষা পেল। ভালুকের মাংস খেয়ে সবাই হারানো শক্তি ফিরে পেতে লাগল। আলটামন্ট কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তিনি বললেন, পরপয়েজে পৌঁছতে আর মাত্র দুদিনের পথ। এবার নতুন উদ্যমে যাত্রা শুরু হল। ডক্টর কিন্তু একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে শঙ্কিত হয়ে পড়লেন। তিনি যেন দিব্যদৃষ্টিতে স্পষ্ট দেখতে পাঁচ্ছেন ক্যাপ্টেন ও আলটামন্টের সংঘাত।…
১৭. ডক্টর ক্লবোনির মাথায় নিত্য নতুন খেয়াল
ডক্টর ক্লবোনির মাথায় নিত্য নতুন খেয়াল চাপে। এবার তিনি ভাবলেন একটা লাইট হাউস তৈরি করা প্রয়োজন। আলোক-স্তম্ভ থাকলে ঘন কুয়াশা বা তুষার ঝটিকার মধ্যেও আলো দেখে বাড়ি ফেরা যাবে। পথ হারিয়ে বিপদের সম্ভাবনা থাকবে না। লাইট হাউস বসার জায়গাও বেছে নিয়েছেন ডক্টর। বরফ প্রাসাদের পেছনে যে পাহাড়টা, সেটার চূড়া যথেষ্ট উচু এবং লাইট হাউসের জন্যে…
১৮. সময় আর কাটতে চায় না
সময় আর কাটতে চায় না। প্রচন্ড শীত। বাইরে বের হওয়া যায় না। ঘরেও করার কিছু নেই। বসে থাকতে থাকতে আলসেমিতে পেয়ে বসল সরাইকে। ডক্টর ভাবছিলেন এই বিরক্তি দূর করার জন্যে কিছু একটা করা দরকার। পূর্ববর্তী অভিযাত্রীরা এ ধরনের পরিস্থিতিতে কি করে সময় কাটাতেন সেই কথাটাই তাঁর মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল। ডক্টর প্রস্তাব করলেন, আমরা যেভাবে…
১৯. হঠাৎ করেই যেন প্রকৃতি বদলে গেল
হঠাৎ করেই যেন প্রকৃতি বদলে গেল। একদিনেই তাপমাত্রা উঠে গেল শূন্য তাপাঙ্কের পনেরো ডিগ্রি উপরে। বরফ অল্প অল্প করে গলতে শুরু করেছে। পাখিদের কলকাকলিতে প্রাণহীন মেরু অঞ্চলে আবার প্রাণের স্পন্দন ফিরে এসেছে। নাম না জানা কত পাখি উড়ছে আকাশে জমির উপরও দেখা যাচ্ছে অনেক মেরুপ্রাণী। এমনকি নেকড়ের দল ও কোথা থেকে যেন এসে হাজির হয়েছে।…
২০. হরিণ ও খরগোসের নির্ভয় ছুটাছুটি দেখে
হরিণ ও খরগোসের নির্ভয় ছুটাছুটি দেখে কিছুদিন শিকার বন্ধ রাখলেও আবার একদিন শিকারে বের হলেন ডক্টর, আলটামন্ট ও ক্যাপ্টেন। সঙ্গে আছে ক্যাপ্টেনের প্রিয় সাথী ডাক। বেশ কিছুদূর যাবার পর ডাক দূরে দুটি জন্তুর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করল ওদের। মাটির খাঁজে শেওলা খেতে থাকা জন্তু দুটিকে ডক্টর দূর থেকেই চিনে ফেললেন, ওগুলো হচ্ছে কস্তুরী-ষাঁড়। দেখতে ভারি…