দ্য ভ্যালি অফ ফিয়ার (আতঙ্ক উপত্যকা) প্রথম খণ্ড বির্লস্টোন ট্র্যাজেডি ০১. হুঁশিয়ারি আমি ভাবতে বাধ্য হচ্ছি যে–বললাম আমি। অধীর কণ্ঠে বলল শার্লক হোমস–আমিও তাই ভাবতাম। মরদেহদের মধ্যে আমিই সবচেয়ে বেশিদিন যন্ত্রণা সয়ে আছি, এ-বিশ্বাস আমার আছে। তাও সেদিনকার শ্লেষবঙ্কিম বাধাপ্রদানে মেজাজ খিচড়ে গেল। কড়াগলায় বললাম, হোমস, মাঝে মাঝে সত্যিই তোমাকে বরদাস্ত করা যায় না। হোমস…
দ্য ভ্যালি অফ ফিয়ার
০২. আলোচনায় বসলেন মি. শার্লক হোমস
আলোচনায় বসলেন মি. শার্লক হোমস এইসব নাটকীয় মুহূর্তের জন্যেই যেন ওত পেতে থাকে বন্ধুটি। বিস্ময়কর ঘোষণাটি শুনে সে চমকে উঠেছিল বললে বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে–এমনকী উত্তেজিতও হয়নি! দীর্ঘকাল অতি-উত্তেজনার মধ্যে থাকার ফলেই যেন কড়া পড়ে গিয়েছে ভেতরটা। তার অসাধারণ চরিত্রের মধ্যে ক্রূরতার ছিটেফোঁটাও নেই–অথচ চোখ-মুখ এই কারণেই এত সহানুভূতিহীন। আবেগের ধার ভোতা হলে কী হবে, ধীশক্তিগ্রাহ্য…
০৩. বির্লস্টোন ট্র্যাজেডি
বির্লস্টোন ট্র্যাজেডি পাঠকের অনুমতি নিয়ে কিছুক্ষণের জন্যে এবার আমার অতি-নগণ্য ব্যক্তিত্ব সরিয়ে রাখছি কাহিনির মধ্যে থেকে। আমরা খবর পেয়ে দৌড়েছিলাম অকুস্থল অভিমুখে। কিন্তু তার আগে ঘটনাটা যেভাবে ঘটেছিল হুবহু সেইভাবে বর্ণনা করছি। তাতে পাঠকেরই সুবিধে। অদ্ভুত এই রহস্যে যারা জড়িত তাদের চিনতে পারবেন। কী ধরনের দৃশ্য আর পরিবেশের মধ্যে বিচিত্র এই রহস্য-নাটিকা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা…
০৪. অন্ধকার
অন্ধকার বির্লস্টোনের সার্জেন্ট উইলসনের জরুরি তলব পেয়ে চিফ সাসেক্স ডিটেকটিভ রাত তিনটের সময় এক-ঘোড়ার হালকা গাড়ি চেপে দ্রুত গতি নিরুদ্ধ-নিশ্বাস ঘোড়ার পেছন পেছন এসে পোঁছোলেন অকুস্থলে। আলো ফুটতেই পাঁচটা চল্লিশের ট্রেনে খবর পাঠালেন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে আমাদের স্বাগত জানানোর জন্যে বির্লস্টোনে স্টেশনে হাজির রইলেন বারোটার সময়ে। হোয়াইট ম্যাসোন লোকটা শান্তশিষ্ট প্রকৃতির স্বচ্ছন্দ-চেহারার মানুষ। পরনে ঢিলেঢালা টুইড…
০৫. নাটকের পাত্রপাত্রী
নাটকের পাত্রপাত্রী বাড়িতে ফিরে আসার পর হোয়াইট ম্যাসোন জিজ্ঞেস করলেন, পড়ার ঘরের সব কিছু দেখেছেন তো? ইনস্পেকটর বলল, এখনকার মতো যা দেখবার দেখছি। মাথা নেড়ে নীরবে সায় দিল হোমস। এবার নিশ্চয় বাড়ির লোকের জবানবন্দি নেবেন? ডাইনিংরুমে বসা যাক। অ্যামিস, আগে তোমার পালা। বলো কী জানো। খাসচাকরের বক্তব্য সরল এবং পরিষ্কার। আন্তরিকতার জন্য বিশ্বাস জাগায়। মি….
০৬. প্রকাশমান সত্য
প্রকাশমান সত্য ছোটোখাটো অনেক বিষয় তদন্ত করার ছিল তিন গোয়েন্দার। আমি তাই–গ্রাম্য সরাইখানার দীনহীন আস্তানায় একাই ফিরে এলাম। আসার আগে প্রাচীন ভবনসংলগ্ন অদ্ভুতদর্শন পুরোনো আমলের বাগানে একটু পায়চারি করে নিলাম। বাগান ঘিরে সারি সারি অতি প্রাচীন ইউ গাছ–অদ্ভুত সব ডিজাইন কাটা ডালপালা। মাঝখানে সবুজ ঘাস ছাওয়া সুন্দর একফালি। মাঠ… ঠিক মাঝখানে একটা মান্ধাতার আমলের সূর্যঘড়ি।…
০৭. সমাধান
সমাধান পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট খাওয়ার পর স্থানীয় পুলিশ সার্জেন্টের ক্ষুদ্র বৈঠকখানায় গভীর পরামর্শ করতে দেখলাম ইনস্পেকটর ম্যাকডোনাল্ড আর মি. হোয়াইট ম্যাসোনকে। সামনের টেবিলের ওপর ছড়ানো ভূপীকৃত টেলিগ্রাম আর চিঠি সতর্কভাবে বাছাই করে সাজিয়ে রাখছিলেন দু-জনে। একপাশে রয়েছে বাছাই করা চিঠির তিনটে থাক। প্রফুল্লকণ্ঠে শুধোয় হোমস, ধোঁকাবাজ সাইক্লিস্ট বেচারার পেছনে ছুটছেন দেখছি? কদ্দূর খবর পাওয়া…
০৮. লোকটা
দ্বিতীয় খণ্ড স্কোরারস্ ০৮. লোকটা ১৮৭৫ সালের চৌঠা ফেব্রুয়ারি। দারুণ শীত পড়েছিল, গিলমারটন পর্বতমালার গিরিখাতে জমে রয়েছে রাশি রাশি তুষার। বাষ্পীয় লাঙলের দৌলতে রেললাইন এখনও খোলা রয়েছে। ভারমিসা উপত্যকার মাথার দিকে অবস্থিত কেন্দ্রীয় নগরী ভারমিসা সমতল থেকে স্ট্যাগভিল পর্যন্ত যে-রেললাইনটা ঢালু পাহাড়ের ওপর কয়লাখনি আর লোহার কারখানাকে জুড়ে রেখেছে, সন্ধের ট্রেন টিকিয়ে টিকিয়ে চলেছে সেই…
১০. লজ ৩৪১, ভারমিসা
লজ ৩৪১, ভারমিসা এতসব চাঞ্চল্যকর ঘটনা যে-রাতে ঘটল, তার পরেই ম্যাকমুর্দো বৃদ্ধ জ্যাকব শ্যাফটারের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে এল শহরের একদম শেষে বিধবা ম্যাকনামারার আস্তানায়। এর কিছুদিন পরেই ট্রেনের বন্ধু স্ক্যানল্যান চলে এল ভারমিসায়, উঠল সেই আস্তানাতেই, একসাথেই রইল দু-জনে। আর কোনো বোর্ডার ছিল না সেখানে। গৃহকত্রী নিজেও খুব উদার প্রকৃতির বৃদ্ধা, আইরিশ মহিলারা যেমন…
১১. ভ্যালি অফ ফিয়ার
ভ্যালি অফ ফিয়ার পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙার সঙ্গেসঙ্গে ম্যাকমুর্দোর মনে পড়ল, হ্যাঁ, গতকাল তার লজ-অন্তভুক্তির দীক্ষাই হয়েছে বটে। হাড়ে হাড়ে তা টের পাওয়া যাচ্ছে। মদ্যপানের ফলে মাথা দপদপ করছে, এবং বাহুর যে অংশে ছ্যাকা দেওয়া হয়েছে, সেখানটা ফুলে ঢোল হয়ে দারুণ টাটিয়েছে। যেহেতু তার রোজগারের উৎস একটু অদ্ভুত, তাই কাজে বেরোনোর মধ্যে কোনো বাঁধা…