ইন্টু দ্যা নাইজার বেন্ড

শহরের সবকটা দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হলো খবরটা। সেন্ট্রাল ব্যাংকে দুঃসাহসিক ডাকাতি। সাঙ্ঘাতিক ঘটনাটা ঘটল স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে থ্রেডনীডল কোণে সেন্ট্রাল ব্যাংকের ডিকে ব্রাঞ্চে। ম্যানেজার লুই রবার্ট ব্লেজন, বিখ্যাত লর্ড ব্রেজনের ছেলে। বিশাল একটা ঘরকে ভাগ ভাগ করে নিয়ে এই ব্যাংক। ওক কাঠের কাউন্টার। কাঁচের দরজা দিয়ে ঢুকলেই চোখে পড়বে বাদিকে লোহার গরাদ দিয়ে ঘেরা…

ফেঞ্চগিনির রাজধানী মানে কোনাক্রি অঞ্চলের নিতান্তই একটা ছোট গ্রাম। অথচ এখানেই বাস করেন এদেশের গভর্নর জেনারেল। ২৭ নভেম্বর। মহাহট্টগোল সমস্ত গ্রাম জুড়ে। উৎসব হবে। কিসের? সোজা ব্যাপার নয়, কয়েকজন অতি মান্যগণ্য লোক আসবেন গ্রামে। পর্যটক। গভর্নর আদেশ দিয়েছেন, বয়স্ক সকল পুরুষকে জাহাজ ঘাটায় গিয়ে অভ্যর্থনা করে আনতে হবে অতিথিদের। ইচ্ছে করলে বাচ্চা ছেলেমেয়ে কিংবা মহিলারাও…

দেহমন দুইই ভেঙে পড়েছে বৃদ্ধ লর্ডব্লেজনের। প্লেনর কাসলের অধিবাসী তিনি। কিন্তু এখানে আর থাকতে মন চাইছে না। মুখ দেখাতে পারছেন না লজ্জায় ! আকাশচুম্বী সুনাম ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তার। চব্বিশ ঘণ্টাই দরজা বন্ধ করে নিজের ঘরে বসে থাকেন। কারও সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ নেই। অথচ পূর্বপুরুষদের নাম-যশ, শৌর্য বীর্য, অটুট রেখে এই লর্ড ব্লেজনই নৌবাহিনীর অতি উচু…

অদ্ভুত প্রবন্ধটা লা এক্সপ্যানসন ফ্রাঁসে পত্রিকায় ছাপা হলো পহেলা জানুয়ারি। লিখেছেন পত্রিকার নিজস্ব সংবাদদাতা আমিদী ফ্লোরেন্সঃ বারজাক মিশন (বিশেষ সংবাদদাতা প্রেরিত) ডিসেম্বর ১। জঙ্গল। আগেই জানিয়েছি, আজ ভোর ছটায় যাত্রা শুরু করবে বারজাক মিশন। মিশনের আটজন সদস্য ছাড়াও আমাদের সঙ্গে আছেন দুজন স্বেচ্ছা অভিযাত্রী। এদের মধ্যে একজন ইংল্যান্ডে শিক্ষিতা সুন্দরী ফরাসী তরুণী মিস জেনব্লেজন। অন্যজন…

বারজাক মিশন (বিশেষ সংবাদদাতার খবর) ডিসেম্বর ১৬, দাউহেরিকো। ২ ডিসেম্বর ভোর পাঁচটায় তাঁবু গোটালাম আমরা। বেশ খুশি খুশি লাগছে মালিককে। সারাক্ষণই হাসছে। রাস্তা ভাল, কিন্তু চলার পথের গ্রামগুলোর অকল্পনীয় দারিদ্র্য বড় বেশি পীড়া দিচ্ছে চোখ আর মনকে। দুধারে বেশির ভাগ জমিই সমতল। দূরে অবশ্য টিলাটক্কর যথেষ্ট আছে। জমিতে ছোট ছোট গাছ, আগাছা আর দুতিন গজ…

লা এক্সপ্যানসন ফ্রাঁসে পত্রিকায় আমিদী ফ্লোরেন্সের লেখা তৃতীয় অধ্যায় বেরোয়। ৫ ফেব্রুয়ারি। এবং সেটাই তাঁর শেষ খবর। এরপর আর লেখা পাঠাননি রিপোর্টার। কারণ রহস্যাবৃত। বারজাক মিশন (নিজস্ব সংবাদদাতার খবর) ডিসেম্বর ২৪। কানকান। গতকাল এসে পৌঁছেছি এখানে। আগামীকালই ছেড়ে যাচ্ছি এ জায়গা। বড়দিন এই দুর্গম এলাকায়ই কাটাতে হচ্ছে। মন কেমন করছে দেশের জন্যে। সেখানে বাইরে নিশ্চয়ই…

(জানুয়ারি ১২। সমুদ্র উপকূল থেকে বারোশো মাইল দূরে সিকাসোতে এসে পৌঁছেছে বারজাক মিশন। চৌমৌকির হাত দিয়ে খবর ঠিকই পাঠিয়েছেন কিন্তু পত্রিকা অফিসে আর পৌঁছাচ্ছে না আমিদী ফ্লোরেন্সের খবর। এই কথা কিন্তু কিছুই জানতে পারছেন না রিপোর্টার।) আমিদী ফ্লোরেন্সের নোট বই থেকে : নিরাপদেই সিকাসো এসে পৌঁছেছি। নতুন আর কোন ঘটনা ঘটেনি পথে? সিকাসোতে তো এসে…

(আমিদী ফ্লোরেন্সের নোটবই থেকে) জানুয়ারি ২২। সিকাসো থেকে রওনা দেবার পর থেকেই আবার ওঝার চিন্তাটা মনে এসে ভর করেছে। ধীরে ধীরে যেন ফলতে চলেছে তার কথা। দেখছি, অল্পেতেই কাহিল হয়ে পড়ছে কুলিরা, বার বার জিরিয়ে নিতে চাইছে। চলার কোন উদ্যমই যেন আর নেই ওদের মধ্যে। জানুয়ারি ২৩। চলার গতি অতি ধীর আমাদের। পথের অবস্থা খুবই…

(আমিদী ফ্লোরেন্সের নোটবই থেকে।) পাহারাদারদের জিজ্ঞেস করেও কোন হদিস পাওয়া গেল না। মোরিলিরেকে কেউ পালাতে দেখেনি। নাকি মিছে কথা বলছে ওরা, কে জানে! সাংঘাতিক রেগে গেলেন ক্যাপ্টেন। এই সময় পাহারারত চারজনেরই কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করলেন। তারপর কাগজের টুকরোটা নিয়ে নিজের তাঁবুতে চলে গেলেন তিনি। ঘণ্টাখানেক পরেই ডাক পড়ল আমার ক্যাপ্টেনের তাঁবুতে। আমাকে ঢুকতে দেখেই বললেন,…

ফেব্রুয়ারি ১৪। সন্ধ্যা। পরিষ্কার বুঝতে পারছি বিপদে পড়েছি। কিন্তু বুঝতে পারছি না বিপদটা কি ধরনের। কাদের সঙ্গে চলেছি আমরা? আমার মন বলছে, সশস্ত্র প্রহরীর বেশে যারা এসেছে আমাদের পথ দেখানোর জন্যে, তারা আর যাই হোক, ফরাসী সরকারের অধীনস্থ কর্মচারী নয়। তাহলে কারা এরা? ক্যাপ্টেন মারসিনে জোর দিয়ে বলেছেন যে চিঠিটা কর্নেল অবানেরই লেখা। কিন্তু বারজাকের…