এক সময় রাত জেগে শ্যালো মেশিন ঘরে চাষীদের বসে থাকত হতো, কখন বিদ্যুত আসে। আর বিদ্যুত আসলেই শ্যালো মেশিনে পানি তুলে খেতে দিতে হবে। সেই দিন আর এখন নেই। যশোরের সব উপজেলায় শতভাগ গ্রাম বিদ্যুতায়িত হয়েছে। নেই লোডশেডিং। প্রতি গ্রামে বিদ্যুতের সুবিধা পাওয়ায় বদলে গেছে যশোরের গ্রামের অর্থনীতি। সেই সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের হয়েছে উন্নতি। শহরের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে যশোরের গ্রামের মানুষ। গত ১০ বছরে যশোরের গ্রামের চেহারা পাল্টে গেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ যশোর জেলায় ১ হাজার ৪শ’ ৭৭ গ্রামেই বিদ্যুত আছে। আগে গ্রামের কৃষকরা ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র দিয়ে জমিতে সেচ দিতেন। এখন সব গ্রামে বিদ্যুত পৌঁছে যাওয়ায় কৃষকরা বিদ্যুত চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার করছে। এতে তাদের খরচ সাশ্রয় হচ্ছে। জেলা মোট বিদ্যুত চালিত সেচযন্ত্র রয়েছে প্রায় ৫ লাখ। যা খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিদ্যুত সুবিধা গ্রামে স¤প্রসারণের ফলে গ্রামীণ জনমানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। আধুনিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি (লাইট, টিভি, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার প্রভৃতি) ব্যবহার করে মানুষ আধুনিক নাগরিক সুবিধাদি ভোগ করছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রগতিতে একটি মাইলফলক স্থাপন করেছে যশোর জেলা। মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেবার জন্য ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে জেলা প্রশাসকের অফিসে ই-সেবা কেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়। এর ফলে প্রযুক্তির ব্যবহার কঠিন কিছু নয় এটা খুব সহজে প্রমাণ হয়ে গেছে। এছাড়া এতদিন যে সেবার পিছনে মানুষ ছুটছে এখন সেই সেবাই সাধারণ মানুষের ঘরের দরজায় এসে হাজির হয়েছে। এর ফলে বড় অর্জন হচ্ছে জেলা প্রশাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসার বিষয়টি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হয়ে গেছে। দুশ বছরের অধিককালের সনাতন পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করে মানুষের কাছে ঝামেলাবিহীন তথ্য ও সেবা দ্রæত পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে চালু করা হয় ই-সেবা।

২০১১ সালের ১৪ নবেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মধ্যে যশোর জেলা ই-সেবা কেন্দ্রে অবস্থানরত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জেলা ই-সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এটা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করে। যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, জেলার ৮টি উপজেলার ৯৩টি ইউনিয়নে ই-সেবা চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে একজন নাগরিক ডিসি অফিসের বা উপজেলার ই-সেবা কেন্দ্রে না গিয়ে বাড়ির কাছের যে কোন ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন ডিজিটালকেন্দ্র অথবা পৌরসভার পৌর ডিজিটাল কেন্দ্রতে গিয়ে জমির পর্চা বা খতিয়ান আদেশ নামার নকল প্রাপ্তির আবেদন করতে পারছেন। অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে নাগরিকরা মাত্র তিন দিনের মধ্যেই জমির পর্চা বা খতিয়ান বা আদেশ নামার নকল পাচ্ছেন, যা পেতে আগে অন্তত এক মাস অপেক্ষা করতে হতো এবং এ কাজে ডিসি অফিসে কয়েকবার যাতায়াত করা লাগত বা কোন মোহরারের পেছনে ধরনা দেয়া লাগত।

রেকর্ড রুম থেকে পর্চা বা খতিয়ানের বা মামালার আদেশনামার কপির আবেদন করলে আবেদনে কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হয়। এ কোর্ট ফি সংগ্রহ করতে স্ট্যাম্প ভেন্ডারের নিকট গিয়ে সংগ্রহ করে পেস্ট করতে হতো। স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতে জেলা সদরে আসতে হতো। পর্চা বা খতিয়ানের বা মামলার আদেশনামার কপির আবেদন ইউআইএসসি তে আবেদন জমা কালে উদ্যোক্তা স্ট্যাম্প ফি বাবদ অর্থ গ্রহণ করে এবং তার হিসাব থেকে স্ট্যাম্প বাবদ গৃহীত অর্থ গ্রহণ করে এবং তার হিসাব থেকে স্ট্যাম্প বাদ গৃহীত টাকার রিচার্জ জেলা ই-সেবা সেন্টারের হিসাবে প্রেরণ করে। জেলা ই-সার্ভিস স্টোর তা দিয়ে কোর্ট ফি কিনে সংশ্লিষ্ট আবেদনে পেস্ট করে। এ সার্ভিসের মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি হ্রাস হয়েছে।

যশোরে ৯৩টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে যাতায়াতের জন্য এখন পাকা রাস্তা ব্যবহার করা হয়। প্রায় ৮৫ ভাগ গ্রামে পাকা রাস্তা রয়েছে। গরু গাড়ি নয়, এসব রাস্তায় ব্যাটারি চালিত ভ্যান-ইজিবাইক চলাচল করে। দ্রæত সময়ের মধ্যে মানুষ উপজেলা সদরে পৌঁছাতে পারেন। যশোরের ৮টি উপজেলা রয়েছে। সেখানকার মানুষকে উপজেলা সদরে আসতে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টা সময় লাগে। আর জেলার সবচেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জেলা সদরে আসতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা।

যশোর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম আনিছুজ্জামন জানান, পল্লী সড়কসহ অন্যান্য উন্নয়ন বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে এলজিইডি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে গ্রামের চেহারা পাল্টে গেছে। আরও অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। গত ১০ বছরে যশোর এলজিইডি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। টেকসই ও সময়োপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জীবিকা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থা তথা মানব সম্পদ উন্নয়নে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।

এলজিইডির দফতর সূত্রে জানা যায়, টেকসই গ্রামীণ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাস্তবায়িত এসব সড়ক সারা বছরের জন্য চলাচলের উপযোগী করে রাখার জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করে যাচ্ছে যশোর এলজিইডি। ফলে চাঙ্গা থাকে গ্রামীণ অর্থনীতি ও সামাজিক সকল কর্মকাণ্ড, কমে যায় যানবাহন পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, সাশ্রয় হয় অর্থের, আর মানুষ পায় নিরাপদ ও শান্তিময় পথ চলার আনন্দ। নদ-নদী ও খালের ওপর ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ করে যশোর এলজিইডি জনজীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মেচন করেছে। সৃষ্টি করছে অবাধ ও নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক। বৃক্ষরোপণ করাসহ নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরির কাজেও এলজিইডি নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

অন্যদিকে যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত ৫ বছরে ১ হাজার ৩৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। ফলে যশোরের সড়ক যোগাযোগ অন্য যেকোন সরকারের আমলেও চেয়ে বেশি উন্নত। সংস্কার করা হয়েছে যশোর শহরের দড়াটানা থেকে বেনাপোল, যশোর শহরের পালবাড়ি থেকে অভয়নগরের রাজঘাট, যশোরের চুড়ামনকাটি-চৌগাছা, খাজুরা বাজার থেকে কালীগঞ্জ, কেশবপুর-বেতগ্রাম সড়ক। এছাড়া যশোরের রাজারহাট থেকে মণিরামপুর কেশবপুর হয়ে চুকনগর সড়কের প্রশস্তকরণের কাজ চলছে।

ঢাকা যশোরের সঙ্গে সরাসরি রেলপথ থাকলেও তা ঘোরাপথ হওয়ায় সময় লাগে ৬/৭ ঘণ্টা। তবে পদ্মা সেতু রেলওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অল্প সময়ে রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ যশোরের মানুষ। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় যশোরের মানুষ ঢাকা যেতে পারবেন। ইতোমধ্যে যশোর অংশের কাজ চলছে পুরোদমে। যশোরের পদ্মবিলা এলাকায় হচ্ছে নতুন জংশন। মাটি ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে জংশনের জায়গা। যশোর-খুলনা রেলপথের যশোর সদরের পদ্মবিলা তাই চলছে কর্মযজ্ঞ। এছাড়া যশোরে আর একটি রেলস্টেশন হচ্ছে বাঘারপাড়ার জামদিয়ায়। এই রেলপথ চালু হলে পুরো যশোরের চেহারা পাল্টে যাবে। বেনাপোলের সঙ্গে দ্রæত যোগাযোগ সুবিধা পাবে মানুষ।

যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি করা হয়েছে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহিন চাকলাদার বলেন, ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে একটি বিশ্বমানের আইটি পার্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন। এরপর ২০১৩ সালের ফেব্রæয়ারিতে যশোরের বেজপাড়া শংকরপুর এলাকায় এই আইটি পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১২ দশমিক ১৩ একর জমির ওপর আইটি পার্কটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৩০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই হাইটেক পার্কে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন।’

ফিচার বিজ্ঞাপন

Canada Visa for Businessman

মূল্য: 10,000 Taka

কানাডা ভিসা

মূল্য: ৭,০০০ টাকা

যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে রয়েছে ডেটা সংরক্ষণের জন্য দেশের দ্বিতীয় সার্ভার স্টেশন। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত প্রথম সার্ভার স্টেশনে কোন সমস্যা হলে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় ডেটা এখান থেকেই উদ্ধার করা যাবে।

১৫ তলা এমটিবি ভবন (প্রতিটি ফ্লোরে ১৪ হাজার বর্গফুট হিসেবে দুই লাখ ৩২ হাজার বর্গফুট স্পেস), ফাইভ স্টার মানের ১২ তলা ডরমেটরি ভবন, অত্যাধুনিক কনভেনশন সেন্টারের সঙ্গে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং ব্যবস্থা। জলাবদ্ধতা নিরসনে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেনেজ ব্যবস্থা। ডরমেটরি ভবনের ১১ তলার পুরোটাজুড়ে আন্তর্জাতিকমানের জিম স্থাপন করা হয়েছে। আর সব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ভূমিকম্প প্রতিরোধক কম্পোজিট (স্টিল ও কংক্রিট) কাঠামোতে। রাখা হয়েছে ৩৩ কেভি পাওয়ার সাব-স্টেশন, ফাইবার অপটিকাল ইন্টারনেট লাইন এবং অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের সুবিধা। বহু লোকের আয়ের উৎস হয়েছে এই পার্ক।

যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি মেডিক্যাল কলেজ। সেটা পূরণ হয়েছে। ২০১০ সালের অক্টোবরে মেডিক্যাল কলেজ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ৫৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ভবনে শুরু হয় যশোর মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। পরে মেডিক্যাল কলেজের নিজস্ব ভবন তৈরি হয় যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে হরিনার বিলে। ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে সেখানে প্রশাসনিক ভবন, ক্লাসরুম, হোস্টেলসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ১০ তলা ভবনের ছয়তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। নির্মিত ভবনে রয়েছে ৩য় তলায় পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে দুটি বড় গ্যালারি হল, বিভাগ ভিত্তিক ক্লাসরুম, ২য় তলায় ভবনের মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের অনুষ্ঠানের জন্য একটি বৃহৎ মাল্টিপারপাস হলরুম, এর পাশে ছোট-বড় ক্লাস রুম, ভবনের নিচ তলা ভবনের পূর্ব ও পশ্চিম দিকে উত্তর পাশে উপরে উঠার জন্য সিঁড়ি ও ভবনের মাঝামাঝি দুটি লিফট রয়েছে। সম্পূর্ণ ভবনে অফিস রুম বাদেও রয়েছে ২২টি ক্লাস রুম, একটি মেয়েদের কমন রুম।

এছাড়া যশোর আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালেরও আধুনিকায়ন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে অক্সিজেনের বড় ট্র্যাংকার। এছাড়া চালু হয়েছে ১১টি আইসিইউ বেড।

উন্নত হচ্ছে যশোর বিমানবন্দর। বিমান উড্ডয়ন, ল্যান্ডিং ও পার্কিং এরিয়া বৃদ্ধিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে তাই পুরোদমে চলছে উন্নয়ন কাজ। ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ সরকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে যশোরে বিমান ঘাঁটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। ছয় মাসের মধ্যে ব্রিটিশ বিমান বাহিনীর উপযোগী একটি বিমানবন্দর চালু হয়। ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত এই বিমান ঘাঁটি সচল ছিল। এরপর ভারত ভাগ হলে ১৯৫০ সালে যশোরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ঘাঁটি স্থাপন করে। ১৯৫৬ সালে যশোরে ২৮৭ একর জমির ওপর পূর্ণাঙ্গ বিমান বন্দর চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে যশোরে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর চালু হয় ১৯৬০ সালে। পিআইএ চট্টগ্রাম, যশোর ও ঈশ্বরদী থেকে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। শুরুতে প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশ বিমানের মাত্র দুটি ফ্লাইট চলাচল করত। বর্তমানে সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে দিনে নয়টি যাত্রীবাহী বিমান যাওয়া-আসা করে। সঙ্গত কারণে দিন দিন বাড়ছে যাত্রীসংখ্যাও। এছাড়া কার্গো বিমানের ৫-৬টি ফ্লাইটও যাতায়াত করছে। বর্তমানে যশোর বিমানবন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, ৬২ বছরের পুরাতন এ বিমানবন্দরটিকে আধুনিকায়ন করতে রানওয়ে স¤প্রসারণ, পার্কিং এরিয়া (এ্যাপ্রোন) বৃদ্ধি, পাপাটেক্স ও ট্যাক্সিওয়ের উন্নয়নসহ কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজ দ্রæতগতিতে চলছে। এছাড়া এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ভেরিহাই ফ্রিকোয়েন্সি ও মনিডিরেকশনাল রেডিও রেঞ্জ (ডিভিওর), নিরাপত্তা দেওয়াল, গেট, ভিআইপি গাড়ি পার্কিং এরিয়া স¤প্রসারণসহ কয়েকটি কাজ। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে অত্যাধুনিক টার্মিনাল ভবন, কনভেয়ার বেল্ট নির্মাণের কাজ। চলমান কাজগুলো সম্পন্ন হলে এটা আধুনিক ও মানসম্মত বিমানবন্দর হবে বলে মনে করেন যশোরের মানুষ।

প্রায় ৩৩ কোটি টাকা বাজেটের এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ। বন্দরের স¤প্রসারণের কাজ শেষ হলে একইসঙ্গে এটি ৬০০ যাত্রীর এ্যাকোমোডেশনের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হবে।

এসব উন্নয়ন ছাড়াও যশোরবাসীর দাবি অনুযায়ী ভৈরব নদ খননের কাজ চলমান রয়েছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ২৭২ কোটি টাকা। ভৈরব নদের নওয়াপাড়া অংশে ড্রেজিং করায় বড় বড় কার্গো এখন নওয়াপাড়াতে আসতে পারছে। এর ফলে চাল, কয়লা, গম, পাথরসহ বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের বড় অংশ নওয়াপাড়া থেকে দেশের উত্তরবঙ্গসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রæত চলে যাচ্ছে। এতে নওয়াপাড়ার ব্যবসা চাঙ্গা হয়েছে। নওয়াপাড়াবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সেখানে ভৈরব নদের ওপর ব্রিজ করা হয়েছে। এর ফলে নওয়াপাড়ার পাশে হলেও নড়াইলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল দীর্ঘদিন। এখন দ্রæত নড়াইলের মানুষ খুলনা যাবার জন্য এই পথ ব্যবহার করছে।

Source: dailyjanakantha

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



২৩৬ বার পড়া হয়েছে