রোজা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চলছে কঠোর লকডাউনও। এই অজুহাতে বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বাধ্য হয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি নিম্ন মধ্যবিত্ত-মধ্যবিত্তরা ভিড় করছেন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর ট্রাকের সামনে। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর রামপুরা, হাতিরপুল, শান্তিনগর, নিউমার্কেট, ইত্তেফাকের মোড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিসিবির ট্রাকের সামনে মানুষকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় টিসিবির ১০০টি খোলা ট্রাকে নিত্য প্রয়োজনীয পণ্য বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন টিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে প্রায় ৫০০ এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। তবে, প্রতিদিনের পণ্যের স্টকের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি।’
ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে টিসিবির খোলা ট্রাক থেকে বিক্রি করা পণ্যের মূল্য বাজারের চেয়ে কম। চিনি কেজি ৫৫ টাকা, মশুর ডাল কেজি ৫৫টাকা, সয়াবিন তেল লিটার ১০০টাকা, পেঁয়াজ কেজি ২০টাকা, ছোলা কেজি ৫৫টাকা এবং খেজুর কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
এদিকে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকায় বাজারে মালামালের ঘাটতি বা দামের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানালেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পণ্যের মজুত, সরবরাহ ও দামও স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর নিয়মিতভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করছে।’ হুজুগে পড়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে স্টক না করার জন্যও ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।
লকডাউন ও রোজার জন্য প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। নিত্যপণ্যের বাজারে পণ্যের সরবরাহ থাকলেও দাম কমছে না। বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিভিন্ন বাজারে মানভেদে সব ধরনের চাল, সয়াবিন তেল, মশুর ডাল, পিঁয়াজ, খেজুর, আলু, দেশি রসুন, আদা, লেবু, কলা, কমলা, তরমুজ, মালটাসহ সব পণ্যেরে দাম বেশি দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারে নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল ৬৪-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাইজাম প্রতি কেজিতে ২- ৪ টাকা বেড়ে ৫৬- ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২-৪ টাকা পর্যন্ত।
খোলা সয়াবিন তেল লিটারে ৫ টাকা বেড়ে ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২৫-১৩০ টাকা, ৫ লিটারে ১০ টাকা বেড়ে আজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫০- ৬৬০ টাকায়। মান ভেদে প্রতি কেজি মশুর ডালের দাম ৯০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-৯০ টাকা।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Australia Visa (for Govt Service Holder)
Day Long Package
সাজেক ভ্রমণ ৩ রাত ২ দিন
নিউমার্কেটে ক্রেতা ও পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোজার কারণে দাম একদফা বেড়েছে। তার ওপর লকডানে হয়েছে ব্যবসায়ীদের জন্য সোনায় সোহাগা। লকডাউনের কারণে মানুষ একসঙ্গে বেশি করে পণ্য কিনছে। ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে যার কাছে যেভাবে পারছেন, দাম নিচ্ছেন।
ঢাকার রামপুরা, নিউমার্কেট, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের বেশি পরিমাণ পণ্য কেনার কারণে, বাজারে পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। অতিরিক্ত চাহিদার কারণে পাইকারি বাজার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পণ্য কিনে মজুত করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। ফলে পাইকারি ব্যবসায়ীরাও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
এদিকে, রমজান উপলক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবি ১ এপ্রিল থেকে খোলা বাজারে ট্রাক ও ডিলারের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। বাজারের চেয়ে কম দামের কারণে তেল, চিনি, পেঁয়াজ, ছোলা, ডাল কেনার জন্য টিসিবির ট্রাকের কাছে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।
লকডাউন ও রোজা এই দুই কারণে বাজারে পণ্যের দাম ইচ্ছেমতো ব্যবসায়ীরা বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আলী আকবর ভুঁইয়া বলেন, ‘জানা মতে, পর্যাপ্ত পরিমাণে সব পণ্য মজুত আছে। তারপরও ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন। এটা অনৈতিক। ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ, লকডাউন বা রোজার কারণে কেউ অতিরিক্ত পণ্য কিনবেন না। তাহলেই আর পণ্যের মূল্য বাড়বে না।’
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
২০৮ বার পড়া হয়েছে