এইচআইভি (হিউম্যান ইমিউনোডেফিশিয়েন্সি ভাইরাস)। এই ভাইরাসের সংক্রমণ মানেই জীবন-মরণ সমস্যা। এটি ধীরে ধীরে শরীরে বাড়তে থাকে এবং এক সময় এইডস রোগে রূপ নেয়। এই ভাইরাস প্রতিহত করার উপায় এখনও আবিষ্কার করতে পারেনি চিকিৎসা বিজ্ঞান। চিকিৎসকদের মতে, বেশির ভাগ রোগী নিজের অজ্ঞতাবশত এই রোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যান। অথচ প্রাথমিকভাবে ধরা পড়লে এইচআইভি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
এইচআইভি ভাইরাসের তিনটি পর্যায় রয়েছে। এর সূচনা হয় ফ্লু-সদৃশ উপসর্গ দিয়ে এবং এক পর্যায়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ তন্ত্র (ইমিউন সিস্টেম) ধ্বংস করে দেয়। যারা ঘনঘন বহুজনের সঙ্গে অনিরাপদ যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হন অথবা ব্যবহৃত চিকিৎসা সরঞ্জামাদি (যেমন- ইনজেকশন বা নিডল) ব্যবহার করেন তাদের এইচআইভির সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। এখানে এইচআইভির পর্যায়, উপসর্গ, পরীক্ষা ও চিকিৎসা সম্পর্কে যা জানা থাকা ভালো তা সংক্ষেপে দেওয়া হলো।
এইচআইভির পর্যায়
এইচআইভির তিনটি পর্যায় হলো: অ্যাকিউট এইচআইভি ইনফেকশন, এসিমটম্যাটিক এইচআইভি ইনফেকশন এবং এইডস। অ্যাকিউট এইচআইভি ইনফেকশন: এইচআইভির সংস্পর্শে আসার দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণটি বিকশিত হয়ে থাকে। এটি প্রাইমারি এইচআইভি ইনফেকশন।এই সংক্রমণের উপসর্গের সঙ্গে অন্যান্য ভাইরাস সংক্রমণের (যেমন- ফ্লু বা মনোনিউক্লিওসিস) উপসর্গের মিল রয়েছে। একারণে অনেকে অনুধাবন করতে পারেন না যে তিনি এইচআইভিতে সংক্রমিত হয়েছেন। আবার এসময় অনেকের উপসর্গ প্রকাশ পায় না এবং এমনকি কিছু এইচআইভি টেস্টের রেজাল্ট নেগেটিভও আসতে পারে।
অধিকাংশ রোগী সংক্রমণের দুই থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফ্লু-সদৃশ উপসর্গে ভুগে থাকেন। এসব উপসর্গ ইঙ্গিত দেয়, রোগীর ইমিউন সিস্টেম ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এই সংক্রমণের স্থায়িত্ব সাধারণত এক বা দুই সপ্তাহ। এইচআইভির কিছু সর্বাধিক প্রচলিত লক্ষণ হলো- উচ্চ জ্বর, শরীরের উপরাংশে লাল ফুসকুড়ি, ক্লান্তি, গলা ব্যথা, তীব্র মাথাব্যথা ও পেশি দুর্বলতা।
এইচআইভির এই পর্যায়ে টেস্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এসময় ভাইরাসের পরিমাণ বেশি থাকে। এই পর্যায়ে একজন রোগী উচ্চ সংক্রামক থাকেন বিধায় অন্যদের মাঝে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। এসিমটম্যাটিক এইচআইভি ইনফেকশন: এটা এইচআইভির দ্বিতীয় পর্যায়। এসিমটম্যাটিকের অর্থ হলো উপসর্গবিহীন। এই পর্যায়ে উপসর্গ প্রকাশিত হয় না বলে আমরা এটাকে এইচআইভির সুপ্ত সংক্রমণ বলতে পারি। এসময় এইচআইভির প্রাথমিক সংক্রমণের বেশিরভাগ উপসর্গ দূর হয়ে যায় এবং রোগী ভালো অনুভব করতে শুরু করেন। কিন্তু তখনো ভাইরাসটি সক্রিয় থাকে এবং একজন রোগীর অসচেতনতায় যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।
এই পর্যায়ে একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাসটির সক্রিয়তার মাত্রা জানা যাবে। এটা ইমিউন সিস্টেমের ওপর কেমন প্রভাব ফেলছে তা সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে। এসময় চিকিৎসা না নিলে সংক্রমণটির অগ্রগতি হবে এবং ইমিউন সিস্টেম ধ্বংস হতে থাকবে।
এইডস: এইচআইভির শেষ পর্যায়কে এইডস বলা হয়। এইডসের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো- একুইয়ার্ড ইমিউনোডেফিশিয়েন্সি সিন্ড্রোম। কোনো মানুষের এইডস হলে তার ইমিউন সিস্টেম গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইমিউন সিস্টেমের চূড়ান্ত সর্বনাশ হয় বলে তিনি সহজেই বিভিন্ন সংক্রমণ বা রোগে আক্রান্ত হন। এসময় শরীর বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
এইডস রোগীরা খুবই সংক্রামক, কারণ এই পর্যায়েও শরীরে ভাইরাসের সংখ্যা বেশি থাকে। এইচআইভির চূড়ান্ত পর্যায় তথা এইডসের চিকিৎসা না করলে মৃত্যু প্রায় অবধারিত। সঠিক চিকিৎসা না পেলে অধিকাংশ এইডস রোগী মাত্র ১ থেকে ৩ বছর বেঁচে থাকেন। এইডসের কিছু প্রচলিত উপসর্গ হলো জ্বর, পুনরাবৃত্তিমূলক কাশি, ওজন কমে যাওয়া, জ্বরঠোসা, দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া ও নিউমোনিয়া।
ফিচার বিজ্ঞাপন
চায়না ভিসা (চাকুরীজীবী)
Thimpu-Paro-Dochala Pass-Punakha 5D/4N
Kandy- Negombo & Colombo 5D/4N
এইচআইভির পরীক্ষা
এইচআইভি টেস্টের রেজাল্ট পজিটিভ এলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার প্রয়োজন নেই। এটা ঠিক যে এইচআইভির নিরাময় নেই, কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার মাধ্যমে ভাইরাসটিকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং দীর্ঘসময় সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব। এজন্য নিউক্লেইক অ্যাসিড টেস্ট, অ্যান্টিবডি টেস্ট এবং অ্যান্টিবডি অ্যান্ড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা প্রয়োজন।
নিউক্লেইক অ্যাসিড টেস্ট: এই টেস্টে শরীর থেকে রক্ত নিয়ে ভাইরাস আছে কিনা দেখা হয়। রক্তে এইচআইভির উপস্থিতি শনাক্ত করতে এবং ভাইরাসের সংখ্যা পরিমাপ করতে নিউক্লেইক অ্যাসিড টেস্ট করা হয়। এই টেস্টের মাধ্যমে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পর ১০ থেকে ৩৩ দিনের মধ্যে ভাইরাসটি শনাক্ত করা সম্ভব। তবে রেজাল্ট পেতে কিছু সময় লাগতে পারে।
অ্যান্টিবডি টেস্ট: এই টেস্টে এইচআইভি অ্যান্টিবডি খুঁজে পেতে রক্ত বা লালা পরীক্ষা করা হয়। অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে ভাইরাসের সংস্পর্শ আসার পর ২৩ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ভাইরাসটি শনাক্ত করা সম্ভব। অ্যান্টিবডি অ্যান্ড অ্যান্টিজেন টেস্ট: এই টেস্টে এইচআইভি অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন খুঁজে পেতে রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হয়। এটা হলো এইচআইভি টেস্টের সবচেয়ে প্রচলিত ধরন। এই টেস্টের মাধ্যমে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার ১৮ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ভাইরাসটি শনাক্তকরণ সম্ভব হতে পারে।
এইচআইভির চিকিৎসা
এইচআইভির ওষুধ শরীর বা রক্ত থেকে ভাইরাসের সংখ্যা কমাতে সাহায্য করে। এইচআইভি ওষুধের কাজ হলো সেই এনজাইমকে বাধা দেওয়া বা পরিবর্তন করা যার মাধ্যমে এইচআইভি ভাইরাস নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে। এইচআইভির জন্য এফডিএ অনুমোদিত কিছু চিকিৎসা হলো: প্রোটিজ ইনহিবিটরস, নন-নিউক্লেওসাইড রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ ইনহিবিটরস, নিউক্লেওসাইড রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ ইনহিবিটরস, ফিউশন ইনহিবিটরস, ইন্টিগ্রেজ ইনহিবিটরস ও অ্যাটাচমেন্ট ইনহিবিটরস।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
শক্তিশালী ইলেকট্রিক গ্রাইন্ডারের দাম জেনে নিন২১৩ বার পড়া হয়েছে