মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে আজ শনিবার সকাল থেকেই ঘাটের উভয় পাড়ে অন্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি যানবাহন ও যাত্রী লক্ষ করা গেছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ফেরিতে পারাপার হচ্ছেন। সামাজিক দূরত্ব না মেনেই যাতায়াত করছেন অধিকাংশ যাত্রী। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট সূত্র জানায়, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর এই নৌপথে চলাচলকারী ১৭টি ফেরির মধ্যে ১০টির চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স ও সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পারাপারের ৭টি ফেরি সীমিত আকারে চলাচল করত। যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন চালু রয়েছে ১২ থেকে ১৪টি ফেরি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রী ভ্যান, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকে চড়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে এসে ভিড় জমাচ্ছেন। সাত কিলোমিটারের এই নৌপথে ছোট–বড় যানবাহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের চাপও রয়েছে। ঢাকা থেকে যেমন যাত্রীরা আসছেন, একইভাবে কাঁঠালবাড়ি ঘাট হয়ে অনেক যাত্রী ঢাকা ছুটছেন। যাঁদের অধিকাংশই বিভিন্ন কলকারখানা ও গার্মেন্টে কর্মরত।

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল আলিম বলেন, ‘ঘাটে অন্য দিনের তুলনায় আজ (শনিবার) যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি ছিল। প্রতিটি ফেরিতে এক হাজারের বেশি মানুষ পারাপার হয়েছে। মানুষ যেমন ঢাকায় ঢুকছে, তেমনি ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলেও মানুষ আসছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মীরা যাঁরা ঘাটে কাজ করছেন, তাঁরা সবাই ভয়াবহ ঝুঁকিতে আছেন। তবু চাকরি করি, তাই ভিড় সামলেই আমাদের থাকতে হচ্ছে। যাত্রীদের থামানোর বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারি না। এখানে প্রশাসন তো কিছুই বলছে না। তাই আমরাই বা কী বলব?’

এ সম্পর্কে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) নাসিরউদ্দিন সরকার বলেন, ‘ঘাটে আজ বেশি চাপ থাকলেও তা ছিল সকালে। দুপুর ১২টার পর চাপ কমতে শুরু করে। আর যাত্রীদের বলে বলে ফেরানো সম্ভব নয়। আমরা মাইকিং করে তাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচল করতে বারবার বলে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘাটে গণপরিবহন নেই। যা ফেরিতে পার হচ্ছে, তা বেশির ভাগই ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক।’

দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটে ৪টি পয়েন্টেই মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কেউ সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাচল করছে না। পুলিশ বা অন্য সদস্যদেরও দেখা নেই। ফেরিগুলোর ছাদে পর্যন্ত মানুষ উঠেছে বসার জন্য। অন্যদিকে যানবাহনের চাপ তো আছেই। তবে ঘাটের চারটি সংযোগ সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি দেখা যায়। অনেকে ফেরি না পেয়ে স্পিডবোটে পদ্মা পাড়ি দিতেও দেখা যায়।

ফিচার বিজ্ঞাপন

চায়না ভিসা (চাকুরীজীবী)

মূল্য: ১০,০০০ টাকা

বরিশাল থেকে আসা যাত্রী সোহেল আহমেদ বলেন, ‘করোনার মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বরিশাল থেকে ভেঙে ভেঙে ঘাট পর্যন্ত এসেছি। এখানে আসতে মোটরসাইকেল, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে ১ হাজার ৩০০ টাকা খরচ হয়েছে। তবু আজকের মধ্যে ঢাকা যেতে হবে চাকরি বাঁচাতে।’

সুজন ঘোষ নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘বাড়িতে তো প্রায় এক মাস ছিলাম। সংসার তো চালাতে হবে। তা ছাড়া কারখানা এক সপ্তাহ ধরে খুলেছে। কাজে না গেলে মালিক রাখবেন না। পরে চাকরি হারিয়ে পথে ভিক্ষা করতে হবে। তাই ঝুঁকি জেনেও ভিড় সামলে ঢাকা যাচ্ছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারের সাধারণ ছুটি বর্ধিত করার ঘোষণার পরেই গত ২৬ এপ্রিল থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। মাঝেমধ্যে এ চাপটা দীর্ঘতর হয়ে যায়। দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার সতর্ক থাকলেও পদ্মা নদীর কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথে যেন পারাপারের প্রতিযোগিতায় লেগেছে হাজার হাজার মানুষ।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



২৮০ বার পড়া হয়েছে