কিছুদিন আগে এক বৃহস্পতিবার সকালে ঘুম ভাঙল বন্ধুর ফোনে। কণ্ঠে উত্তেজনা,

‘বন্ধু প্রস্তুত থাকো, এক দিনের জন্য মাঝি হয়ে যাব আমরা।’

মানে?

ওপাশ থেকে জবাব, ‘কাল কাপ্তাই যাব, ওখানে লেকে কায়াকিং চালু হয়েছে। আবার রাতে ফিরে আসব।’

ফোন কেটে গেল। উত্তেজনায় কখন যেন শোয়া থেকে বসে গেছি নিজেও জানি না।

কায়াকিং ব্যাপারটা সব সময় টিভি, ইন্টারনেটে দেখে আসছি। সেই অ্যাডভেঞ্চার এখন বাংলাদেশে চালু হয়ে গেছে!

কায়াক (Kayak) শব্দটা এ দেশে অতটা প্রচলিত নয়। ফাইবার, কাঠ ও পাটের তন্তু দিয়ে তৈরি ১০ ফুট লম্বা সরু নৌকাকে কায়াক বলা হয়। চালাতে হয় বৈঠা দিয়ে। কানাডায় প্রথম শুরু হয় কায়াক চালনা। বিদেশে সমুদ্র, নদীতে কায়াক চালনার প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। তবে এ দেশে বিনোদনের জন্যই কায়াকিং চালু হয়েছে।

রাতে কাপ্তাইয়ের বাসে চড়ে বসলাম। সকালে গিয়ে নামলাম জুম রেস্তোরাঁর সামনে। রেস্তোরাঁর পাশেই কাপ্তাই কায়াক ক্লাবের উদ্যোগে কায়াকিংয়ের আয়োজন।

নৌকায় চড়ার আগে কিছু নিয়ম পালন করতে হলো। ক্লাবের দেওয়া লাইফ জ্যাকেট পরে নেওয়া আবশ্যক। এটা ছাড়া কায়াকিং করতে দেওয়া হয় না। যেখান থেকে কায়াকিং শুরু হবে, সেখানেই শেষ করতে হবে। অন্য কোথাও থামালে গুনতে হবে জরিমানা। জানা গেল, পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং এলাকার মানুষের সুবিধার জন্যই এ নিয়ম করা। এ ছাড়া কীভাবে নৌকা চালাতে হবে, তার নির্দেশনাও দিয়ে দেওয়া হয় ভালোভাবে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

তুরস্ক ভিসা (বিজনেসম্যান)

মূল্য: ১৫,০০০ টাকা

Moscow, Novosibirsk & Irkutsk 7D/6N

মূল্য: 147,000 Taka

বালি ও লম্বক ৫দিন ৪ রাত

মূল্য: ২৯,০০০ টাকা

সবকিছু শুনে-বুঝে চড়ে বসলাম কায়াকে। সরু এই নাও বাওয়া যতটা জটিল ভেবেছিলাম, ব্যাপারটা ঠিক ততটাই সহজ। খুব অল্প সময়ে আয়ত্তে এসে গেল কায়াক। নৌকা আকৃতির কারণে এর গতি ভালো। ছোট ছোট টিলায় ঘেরা কাপ্তাই লেক। এর মধ্য দিয়ে কায়াকিং করছি, ব্যাপারটা দারুণ রোমাঞ্চকর। ঘণ্টাখানেক চালিয়ে আবার চলে এলাম তীরে।

কায়াকিং শেষ করে পাড়ে উঠে দেখলাম ইতিমধ্যে অনেক লোক চলে এসেছে। এখানে বোট আছে ১০টা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পর্যটক চলে এসেছে।

কায়াকিং শেষ করে জানতে পারলাম, কাছেই শেখ রাসেল ইকোপার্ক। আর সেখানে চালু হয়েছে কেব্‌ল কার। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চেপে বসলাম ইকোপার্কের পথে। ১০ মিনিট লাগল যেতে। সুন্দর সবুজে ঘেরা পার্ক, এখানে খাঁচায় নাকি কিছু পশু-পাখিও আছে। ওদিকে আর যাওয়া হলো না, আমাদের গন্তব্য কেব্‌ল কারের দিকে। উঠে বসলাম কেব্‌ল কারে। একটা কেবিনে ছয়জন বসতে পারে। প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্ব পার হলাম দড়িঝোলা এই গাড়িতে। নিচে ঘন বন। যেদিকে তাকাই সেদিকেই কেবল সবুজ। অসাধারণ এক অনুভূতি। ওপারে গিয়ে নেমে কিছুক্ষণ বিরতি পেলাম। আশপাশে সবুজে ঘেরা পরিবেশ আমাদের মতো শহুরে মানুষের কাছে অবাক করা বিষয়। ১০ মিনিট পর আবার ফেরার জন্য উঠে বসলাম কেব্‌ল কারে। পুরো ব্যাপারটায় সময় লাগল প্রায় ৩০ মিনিটের মতো। পাহাড়ি হ্রদে ঘেরা কাপ্তাই নিজের সৌন্দর্যে এমনি বিকশিত, তার মধ্যে কায়াকিং আর আর কেব্‌ল কার যোগ করে দিল অ্যাডভেঞ্চারের ভিন্ন স্বাদ।

কীভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে কাপ্তাই যাওয়ার সরাসরি বাস রয়েছে। কায়াক ক্লাবে কায়াকিং করতে ঘণ্টায় লাগবে ৩০০ টাকা। উল্লেখ্য, ফেসবুকে কায়াক ক্লাবের পেইজে আগে থেকে যোগাযোগ করে যাওয়া ভালো। কারণ, আবহাওয়া বা অন্যান্য বিশেষ কারণে কায়াকিং বন্ধ থাকতে পারে। কায়াকিং করা যায় সন্ধ্যা পর্যন্ত। সেখান থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জনপ্রতি ১৫ টাকা নেবে শেখ রাসেল ইকোপার্কে যেতে। কেব্‌ল কারে জনপ্রতি ২৩০ টাকা লাগবে।

মোজতাবা নাদিম
সূত্র – প্রথম আলো

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১,৭১৬ বার পড়া হয়েছে