চাকরি অনেকের পছন্দ নয়। পরাধীন জীবন। ঘড়ির কাঁটা ধরে এগিয়ে চলা। অন্যের নির্দেশে নিজেকে পরিচালিত করা। তাই চাকরির গণ্ডি পেরিয়ে অনেকে চান একটা স্বাধীন ব্যবসা। স্বাধীন নিজস্ব জগৎ। তারই পথ ধরে হাঁটেন তারা উদ্যোক্তা হওয়ার পথে। ক্ষুদ্র পরিসরে নিজের ব্যবসা শুরু করেন অনেকে। সেই পথে পরবর্তী সময়ে বিশ্বের খুব ভালো প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এমন উদাহরণ আমাদের সামনে প্রচুর রয়েছে। কারও অধীনে চাকরি না করে যদি নিজেই উদ্যোক্তা হতে চান, তবে ক্ষুদ্রঋণ আপনাকে এগিয়ে দেবে অনেকখানি। 

যখনই আপনি একটা কাজে অগ্রসর হওয়ার প্রস্তুতি নেবেন, প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে এই কাজে আদৌ আগ্রহ আছে কি-না? এই কাজে কতক্ষণ-কত বছর নিজেকে একাগ্র রাখবেন সেটা একটা ভাবার বিষয়। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রথমেই স্থির করুন কী ধরনের ব্যবসায় আগ্রহ আছে আপনার। যে বিষয়ে আগ্রহী আপনি পণ্যের বাজারে তার চাহিদা কেমন। পণ্যের ক্রেতা কে তাদের চাহিদা নিয়ে ভাবতে হবে। কোন পণ্য বা সেবা নিয়ে বাজারে উপস্থাপন করবেন? পাইকারি বাজারে যা পাওয়া যায় তাই উপস্থাপন করবেন? নাকি নতুন উপযোগিতা সৃষ্টি করে তা বাজারে আনবেন? তা নির্ধারণ করুন।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার সুবিধা চাইলেই এটি শুরু করা যায়। এতে আইনি ঝামেলায় পড়তে হয় না। যখন আপনি চাইবেন ব্যবসা শুরু করবেন, তখনই সেটা শুরু করতে পারবেন। নির্ধারিত ফি দিয়ে সিটি কপোরেশন বা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে হবে। যাকে ট্রেড লাইসেন্স বলা হয়। এই ট্রেড লাইসেন্স হলো ঋণ পাওয়ার প্রাথমিক তথ্য। ট্রেড লাইসেন্সের জন্য অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিতে পারেন।

প্রশিক্ষণ নিই বিসিকে : এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় মতিঝিল। কিন্তু এর নানা ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকে উত্তরাতে। এখানে প্রায় সারা বছরই উদ্যোক্তা তৈরির বিভিন্ন কোর্স পরিচালনা করা হয়। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি সহজে ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতেও সহায়তা দেয় বিসিক।

কোর্স করতে যা প্রয়োজন : বিসিকের এই কুটিরশিল্পের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সংক্ষেপে ‘স্কিটি’ এবং প্রধান কার্যালয়ের নকশাকেন্দ্র থেকে সাধারণত প্রশিক্ষণ কোর্সগুলো পরিচালনা করে। বিসিকের প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হতে খুব বেশি শিক্ষিত হতে হবে এমন নয়। এখানে যারা এসএসসি পাস করেছেন তারা ইচ্ছা করলেই এই কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারেন। নতুন ব্যবসা শুরু করতে চান কিংবা কেউ কেউ আছেন এরই মধ্যে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছেন। সবাই নিজ আগ্রহেই এ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। যারা আগ্রহী তারা বিসিকের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে এখানে প্রশিক্ষণের সুযোগ নিতে পারেন। 

কোর্সগুলো : এখানে নারী-পুরুষ যে কেউ অংশগ্রহণ করে প্রশিক্ষণ নিতে পারে। তবে নারীদের প্রাধান্য এখানে বেশি। যে কোর্সগুলোয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আর্থিক ব্যবস্থাপনা, বিপণন ব্যবস্থাপনা, শিল্প ব্যবস্থাপনা, সাধারণ ব্যবস্থাপনা, শিল্পোদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি। উত্তরার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে এসব কোর্স পরিচালনা করা হয়ে থাকে। এর সঙ্গে হস্তশিল্প, স্ট্ক্রিন প্রিন্ট, মৃৎশিল্প, ধাতব, পাটজতা, পুতুল তৈরি, বাঁশ ও বেতের কাজ, কাঠের কাজ, প্যাকেজিং, বুনন শিল্প, ব্লক ও বাটিক প্রিন্ট এবং চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন প্রভৃতি ১১টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় প্রধান কার্যালয় মতিঝিলে। 

কতদিনের কোর্স : মতিঝিল থেকে প্রশিক্ষণ ছাড়াও বিভিন্ন আধুনিক নকশা করা হয়ে থাকে। 

ফিচার বিজ্ঞাপন

Australia Visa (for Private Service Holder)

মূল্য: 20,000 Taka

এখানকার ফ্যাশন ডিজাইনিংসহ সব কোর্সের মেয়াদ তিন মাস। ১৫ জন করে প্রতি ব্যাচে প্রার্থী অংশ নিতে পারবে। স্কিটি ও নকশা কেন্দ্র ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ১৫টি নৈপুণ্য কেন্দ্র। 

উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী : এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী প্রদর্শনের সুযোগ রয়েছে। মতিঝিলের বিসিক ভবনে বছরে চারবার বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। দর্শক-ক্রেতারা এটাকে বিসিকের মেলা বলেই জানেন। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে কেবল পণ্য বিক্রি করাই যে মূল লক্ষ্য তা নয়। উদ্যোক্তাদের বাজারজাতকরণ দক্ষতা বাড়ানোই এর প্রধান। 

সুযোগ রয়েছে ঋণের : বিসিক থেকে যারা প্রশিক্ষণ নেন তাদের জন্য রয়েছে ঋণের ব্যবস্থা কাজ। 

এই প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ নেওয়া উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জামানত ছাড়াই ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা পেয়ে থাকে। বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ সহায়তা চুক্তি রয়েছে বিসিকের। বিসিক ও ব্যাংকের যৌথ আবেদন ফরম পূরণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঋণ পাওয়া সম্ভব। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ এক থেকে পাঁচ বছর। নারী উদ্যোক্তারা ১০ শতাংশ হারে এটা শোধ করতে পারবেন।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



৫৯৫ বার পড়া হয়েছে