ট্রাফিক আইন ভাঙাসহ নানা কারণেই পুলিশ গাড়ি আটক করতে পারে। গাড়ি আটক হলে অনেকেই ঘাবড়ে যান, মনে করেন গাড়ি ছাড়িয়ে আনা বেশ ঝামেলার কাজ। তাই গাড়ি আটক যাতে না হয় সে জন্য ট্রাফিক আইন যথাযথ মেনে গাড়ি চালানো উচিত। অনেক সময় কাগজপত্র সব ঠিক থাকা সত্ত্বেও সন্দেহজনকভাবে পুলিশ গাড়ি আটক করে। ফলে না ঘাবড়িয়ে কারণে বা বিনা কারণে যা-ই হোক না কেন গাড়ি আটক হলে আইন অনুযায়ী যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে গাড়িটি ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করতে হবে।
কী করণীয়
ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের চারটি অঞ্চল (জোন) রয়েছে, উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিম। এ ছাড়া অন্যান্য মহানগরেও এ রকম অঞ্চলভিত্তিক ভাগ রয়েছে। গাড়ি আটক করার সময় পুলিশ আপনাকে একটি রসিদ দেবে। পুলিশের দেওয়া রসিদের পেছনেই লেখা থাকবে কোন জোনের ট্রাফিক পুলিশ আপনার গাড়িটি আটক করলেন। আপনাকে সেই জোনের অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে। কোথায়, কী অপরাধে জরিমানা করা হলো, কে জরিমানা করলেন, কত তারিখের মধ্যে হাজির হতে হবে—সবকিছুই লিখে দেওয়া হয় রসিদটিতে।
সংশ্ল্লিষ্ট জোনের ডেপুটি কমিশনার জরিমানা নির্ধারণের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি করে থাকেন। ডেপুটি কমিশনার পূর্ণ জরিমানার চার ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত জরিমানা নির্ধারণ করতে পারেন, এমনকি জরিমানা মওকুফও করে দিতে পারেন। তবে জরিমানা না দিলে বা যথাসময়ে হাজির না হলে অপরাধের ধরন, ঘটনাস্থল ইত্যাদির প্রতিবেদন সহকারে মামলাটি আদালতে পাঠানো হতে পারে। আদালতে পাঠানো হলে আদালত থেকে পরোয়ানাও জারি হতে পারে। আদালতে মামলাটি পাঠানো হলে আদালতে হাজির হয়ে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এ জন্য মোটরযান মামলাসংক্রান্ত শাখা রয়েছে। এ শাখায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট মামলা সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। আদালতের কোনো আদেশ অমান্য করা উচিত নয়। তা না হলে ঝামেলা বাড়ার আশঙ্কা বেশি।
অনেক সময় আদালতে উপস্থিত হয়ে দোষ স্বীকার করলে শাস্তির পরিমাণ কম হওয়ার সুযোগ থাকে। মোটরযানসংক্রান্ত মামলায় সাধারণত জরিমানা হয়ে থাকে। এ জরিমানার টাকা আদালতে জমা দিলে মামলা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। আপনি যদি মনে করেন গাড়িটি অহেতুক আটক করা হয়েছে, সে সম্পর্কে উপযুক্ত প্রমাণাদি আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। কোনো কারণে আদালতের আদেশ সঠিক মনে না হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার পাওয়ার অধিকার আপনার রয়েছে।
গাড়ি কীভাবে জিম্মায় নেবেন
সন্দেহজনক কারণে কিংবা নির্দিষ্ট অভিযোগে গাড়ি পুলিশ আটক করলে বা থানায় কোনো মামলা হলে গাড়িটি নিজের জিম্মায় নিতে সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করা যায়। থানা থেকে মামলার এজাহারের ফটোকপি তুলতে হবে প্রথমেই। সেই সঙ্গে গাড়ির নিবন্ধনের ফটোকপি নিয়ে একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হতে হবে। যেহেতু গাড়িটি থানায় আটক করা হয়েছে, আইনজীবী বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দিষ্ট শাখায় গিয়ে মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করবেন। প্রথম দিনে আবেদন শুনানির পর সাধারণত আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) বিআরটিএ (বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) থেকে গাড়ির মালিকানা নিরূপণ করে কোনো অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা যাচাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদেশ দেবেন।
ফিচার বিজ্ঞাপন
মালয়শিয়া ভিসা প্রসেসিং (বিজনেসম্যান)
তুরস্ক ভিসা (চাকুরীজীবী)
Singapore Tour with Universal Studios & Sentosa 5D/4N
আদালতের আদেশ সাধারণত পরবর্তী কার্যদিবসে সংশ্ল্লিষ্ট থানায় পৌঁছে যায়। থানায় যোগাযোগ করতে হবে, যেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন অতি সত্বর থানা থেকে আদালতে প্রেরণ করেন। প্রতিবেদন থানা থেকে আদালতে পাঠানো হলে আইনজীবী নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন যে তা নথির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে কি না। এরপর আইনজীবী একটি দরখাস্তের মাধ্যমে আদালতকে অবহিত করবেন যে বিআরটিএ থেকে গাড়ির মালিকানা নিরূপণ করা হয়েছে। শুনানির সময় আদালতের সামনে উপস্থিত থাকতে হবে। আদালত বিআরটিএ প্রতিবেদন, তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন ও আইনজীবীর শুনানিতে সন্তুষ্ট হলে থানা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেবেন আটক গাড়িটি জিম্মায় দেওয়ার জন্য। পরবর্তী সময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে গাড়ি নিজের জিম্মায় নিতে পারবেন এই শর্তে যে পরবর্তী সময়ে মামলার তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন হলে তিনি তা থানায় হাজির করবেন। এভাবে গাড়িটি জিম্মায় নিতে প্রায় এক মাস সময় লাগতে পারে।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)২৯৩ বার পড়া হয়েছে