‘আবার এল যে সন্ধ্যা
শুধু দুজনে
চলো না ঘুরে আসি অজানাতে
যেখানে নদী এসে থেমে গেছে।’

সঙ্গীর প্রতি এমন আবেদন অনেকেরই থাকে। তবে সবাই সেটা করে উঠতে পারেন না। যাব যাব করেও সময় বের করতে পারেন না অনেকে। তাঁদের জন্য এই সময়টা আদর্শ। ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন কাছে কিবা দূরে—শুধু দুজনে। গত কয়েক বছরে দেশের মানুষের ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে জানাচ্ছে ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এই পর্যটকদের বড় একটা অংশ তরুণ দম্পতি।

ঢাকার অদূরেও রয়েছে ঘুরে বেড়ানোর নানা জায়গা

অনলাইনভিত্তিক ভ্রমণ প্রতিষ্ঠান ঘুরব ডটকমের সহপ্রতিষ্ঠাতা আশ্রাফ আবির মনে করেন, ‘দেশের মধ্যে কয়েক দম্পতি মিলে দল বেঁধে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা আজকাল বেড়েছে। পাশাপাশি কাপলরা আলাদাভাবেও ঘুরতে যাচ্ছে নিয়মিত। অনেকেই দুই দিনের ছুটি কাজে লাগিয়ে ঘুরে আসছে।’

একটা সময় ছিল বাবা-মায়েরা অপেক্ষায় থাকতেন সন্তানদের স্কুল ছুটির জন্য। গ্রীষ্মের ছুটি বা স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার পর মিলত ঘুরতে যাওয়ার সময়। তা-ও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘দাদাবাড়ি’ বা ‘মামাবাড়ি’ পর্যন্ত। অনেকে কয়েক বছর পরিকল্পনা করে কক্সবাজার আর সুন্দরবন ঘুরে আসতেন। তবে এখন চিত্রটা আলাদা। বিশেষ করে শেষ আট-দশ বছরে চিত্রটা বড় হয়েছে। লোকজন ঘুরতে যাচ্ছে বছরের সব সময়। শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বা এক দিনের ছুটি পেলেও অনেকে ঘুরতে যাচ্ছেন কাছেপিঠে। গাজীপুরের গ্রিনটেক রিসোর্টের জেনারেল ম্যানেজার নয়ন তালুকদার বলেন, ‘ঢাকা থেকে অল্প সময়ে আসা যায়, আবার নিরিবিলি হওয়ায় ছুটির দিনগুলোতে রিসোর্টে জায়গা দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। পরিকল্পনা করে এক দিনের ছুটিতেও অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী মিলে অফিস শেষ করে সোজা চলে আসেন রিসোর্টে। একটা দিন নিজেদের মতো করে কাটিয়ে আবার ফিরে যায়।

দুজনে মিলে বেড়াতে গেলে পুরোনো দিনগুলোর অনুভূতি পাওয়া যাবে

দেশের মধ্যে কক্সবাজার, সুন্দরবন, রাঙামাটি বা বান্দরবানের বাইরে এখন অনেক ঘোরার জায়গা আছে। সিলেটের রাতারগুল, বিছনাকান্দি, জাফলং বা মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা—দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ঘোরার জায়গা বাড়ছে নিয়মিত।

দেশে ও দেশের বাইরে প্রতিবছর প্রচুর ঘোরাঘুরি করেন মডেল ও অভিনেত্রী জান্নাতুল পিয়া। স্বামী ফারুক হাসানকে সঙ্গে নিয়ে সম্প্রতি ঘুরে এসেছেন আমেরিকা থেকে। এখন আবার এই দম্পতি যাচ্ছেন ব্যাংকক। ঈদের আগেই আবার ফিরবেন ঢাকায়। পিয়া বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়াটা খুব জরুরি। একসঙ্গে সংসার করলেও ব্যস্ততার কারণে অনেকেই ঠিকমতো সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন না। দুজনে কর্মজীবী হলে সেই পরিবারে এটা আরও প্রবল। তাই বেড়ানোর ছলে নিজেদের মধ্যে দূরত্বটা ঘুচিয়ে নেওয়া সহজ হয়। সংসারেও সুবিধা হয়।’

ফিচার বিজ্ঞাপন

Singapore Tour with Universal Studio 4D/3N

মূল্য: ২৬,৯০০ টাকা

Ho chi minh -Hanoi – Halong Cruise 5D/4N

মূল্য: 49,900 Taka

দুজনেই ব্যস্ত থাকার ফলে অনেক সময় একই বাসায় থেকেও কথা হয় কম। তাই একবেলা সময় করে ‘লং ড্রাইভে’ গেলেও ভালো লাগবে দুজনের। পিয়ার মতে, দুজনে মিলে বেড়াতে গেলে প্রেমের দিনগুলোর মতো ফিলিংস কাজ করে। গল্প করার মধ্য দিয়েই দুজনের অনেক জরুরি বিষয়ে কথা হয়ে যায়। বেড়ানোর খরচও কমে অর্ধেক হয়ে যায়।

একসঙ্গে ঘুরতে গেলে দূরত্ব কমে আসে

ঢাকার অদূরে অনেক ঘোরার জায়গা আছে এখন। চাইলে নৌকা নিয়ে ঝিলের জলে ভেসে আসতে পারেন একদিন। খোলা মাঠের সবুজ ঘাসে বসে স্ত্রীর সঙ্গে না হয় প্রেম করলেন একবেলা। সময়টা মন্দ কাটবে না। বেঙ্গল ট্যুরসের সহকারী ব্যবস্থাপক আরিফুজ্জামান জানালেন, গভীর অরণ্যের টানে অনেক কাপলই সুন্দরবন ঘুরতে যান। সে ক্ষেত্রে তাঁদের চাহিদা থাকে একটু প্রাইভেসি। বয়স্কদের তুলনায় ইয়াং কাপলদের ঘোরার প্রতি ঝোঁক বেশি দেখা যায়।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মার্কেটিং অ্যান্ড কমার্শিয়াল বিভাগের উপব্যবস্থাপক জুবায়ের আল ইমরানেরও ঘোরার শখ। স্ত্রী তাসনিম জাহানকে নিয়ে এ পর্যন্ত অনেকগুলো দেশ ঘুরে ফেলেছেন। এবার ঈদে কোথাও যাওয়া হচ্ছে না, বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া টেস্ট ক্রিকেটের কারণে। তাই খেলার পর সময় করে ছুটি নিয়ে ছুটবেন নতুন কোথাও। জুবায়ের আল ইমরান মনে করেন, একসঙ্গে ঘুরতে গেলে দুজনের মধ্যে দূরত্ব কমে আসে। বোঝাপড়া পাকা হয়। তাই বছরে কমপক্ষে দুবার ঘুরতে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

কাছে বা দূরে যেখানেই হোক ঘুরে আসুন প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে। মন ভালো থাকবে, গতি আসবে কাজেও।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১,০০৯ বার পড়া হয়েছে