রাজধানীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাদ বাগান। বাতাসে কার্বন-ডাই অক্সাইডের মাত্রা কমাতে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাড়ির ছাদে বাগান খুবই উপকারি। ইট-পাথরের এই যান্ত্রিক শহরের মানুষের ক্লান্তির নিঃশ্বাস ফেলার জন্য কয়েকটি পার্ক ছাড়া নেই কোনো খোলা জায়গা। আর নগরীর বেশির ভাগ ভবনের ছাদই খালি পড়ে থাকে। ফলে ফরমালিনমুক্ত ফলমূল ও শাক-সবজি খেতে অনেকেই ছাদ বাগানকে বেছে নিয়েছেন।
রাজধানীর মিরপুর -৬ নম্বরের খায়রুল বাশার প্রিন্স। পেশায় একজন ব্যবসায়ী। রাজধানীর কোলাহল পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে শখের বসেই নিজের ছয়তলা বাসার ছাদে গড়ে তুলেছেন ছাদ বাগান ও খামার। প্রায় ১৪শ স্কয়ার ফিটের ছাদ বাগানের একপাশে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ফলমূলের গাছ। তারমধ্যে রয়েছে কয়েক প্রকার আম গাছ, সবেদা গাছ, জামরুল, বড়ই, আনার, লেবু, ডালিম, আখ, কমলাসহ হরেক রকমের গাছ।
আর অন্য পাশে রয়েছে খামার। যেখানে চৌবাচ্চার মধ্যে সাতার কাটছে হাঁস, রয়েছে কয়েক প্রজাতির কবুতর ও মুরগী। এমন পরিবেশ দেখলে সবার মনই ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। এ ব্যাপারে প্রিন্স বলেন, ‘বয়স্ক মাকে রাজধানীর এই যান্ত্রিক পরিবেশে কোথাও ঘুরতে নিতে পারছি না। তাই তিনি যেন বাসায় বসেই কোলাহল মুক্ত পরিবেশ পান সেই সঙ্গে ছেলে-মেয়েগুলোও যেন গ্রামের স্বাদ পেতে পারে এমন ভাবনা থেকেই এই বাগান ও খামার করা।’
তাছাড়া হাঁস-মুরগীর ডিম ও কবুতরের বাচ্চা খাবারের অনেক বড় একটি চাহিদা মিটাচ্ছে বলেও জানান তিনি। এখন তাদের দেখাদেখি আশপাশের বাসাগুলোর মালিকরাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন ছাদ বাগানের প্রতি।
এদিকে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ঢাকা শহরেই আমরা যদি কোনো উদ্যানে প্রবেশ করি, তাহলে সেখানে এক রকম তাপমাত্রা আর সেখান থেকে বের হলে তাপমাত্রা কমপক্ষে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। এতেই বোঝা যায়, আমাদের জন্য গাছ কতটা প্রয়োজনীয়। গাছের অভাবে পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের বাড়ির ছাদে গাছ লাগাই, তাহলে খুব সহজেই এ সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’
এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ঢাকা শহরের প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গা কংক্রিটের কাঠামো, যা মূলত শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে। ঢাকার পরিবেশ দূষণ বিশ্বের অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় অনেক বেশি। অধিক জনসংখ্যা, অতিরিক্ত নগরায়ণ, যানবাহন, জলাধার ও গাছপালা কমে যাওয়াই এর মূল কারণ।
পরিবেশবাদীদের সংগঠন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠন পবা সভাপতি বলেন, ক্রমাগত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ঢাকা শহর ধীরে ধীরে হট চেম্বারে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু একটু উদ্যোগী হলেই আমরা ইটের বস্তি ঢাকাকে বাগানে পরিণত করতে পারি। ক্রমাগত বৃক্ষ নিধনের ফলে ঢাকা মহানগরী আশঙ্কাজনক হারে বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ঢাকার তাপমাত্রা বাড়ছে, জীব বৈচিত্র্য বিনষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া ছাদে বাগান থাকলে পরিবারের একটি বিনোদনের জায়গাও গড়ে ওঠে, সবার মধ্যে মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। বাচ্চাদের গাছপালা ও পশুপাখির প্রতিও ভালোবাসা বাড়ে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
শেনজেন ভিসা প্রসেসিং (চাকুরীজীবী)
Domain Registration
জাকার্তা ও বালি ৭দিন ৬ রাত
নগরীর মানুষকে ছাদ বাগানের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সিটি করপোরেশনও। এর আগে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দিয়েছিলেন, যারা বাড়ির ছাদে বা আঙিনায় বাগান গড়ে তুলবেন, তাদের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স ১০ শতাংশ মওকুফ করা হবে।
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এ সময়ের একটি বড় সমস্যা। বলা হচ্ছে, উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে যেসব দেশে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত দুর্যোগের ঝুঁকি বেশি, বাংলাদেশ তার সামনের সারিতে রয়েছে। ঢাকার তাপমাত্রা যে হারে বাড়ছে তাতে লাগাম টানতে বেশি করে গাছ লাগানোর ওপর জোর দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা।
অপরিকল্পিত আবাসন এবং রাস্তাঘাট নির্মাণের ফলে কমে যাচ্ছে উন্মুক্ত স্থান, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে গাছপালা। এতে এ মহানগরীর তাপমাত্রা দিন দিন অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। বিশুদ্ধ অক্সিজেনের যোগান কমছে। ঢাকায় উন্মুক্ত স্থানের যথেষ্ট অভাব বলে খালি জায়গায় গাছ লাগানোর সুযোগ কম। এ অবস্থায় ভবনের ছাদে বাগান করে ঢাকার পরিবেশ পাল্টে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
Source: ittefaq
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)২৭৯ বার পড়া হয়েছে