করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে পাবলিক পরীক্ষাগুলো। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট অষ্টম শ্রেণি শেষে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংকোচন এবং বিষয় কমিয়ে আগামী ডিসেম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরীক্ষা ছাড়াই নবম শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাসংক্রান্ত প্রস্তাব ঈদের আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে বেডু। জেএসসি ও জেডিসিতে এবার মোট পরীক্ষার্থী প্রায় ২৬ লাখ।
বেডুর দেওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সব দিক দেখেই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশের বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে বেডু। তারা মূলত জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে।
জেএসসি–জেডিসির মতোই পঞ্চম শ্রেণি শেষে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষা কবে হবে, সেটিও অনিশ্চিত। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যদি সেপ্টেম্বরেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে, তাহলে পাঠ্যসূচি কমিয়ে সেপ্টেম্বরে এ পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে।
প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনীতে এবার প্রায় ২৯ লাখ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেওয়ার কথা রয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে এইচএসসি পরীক্ষা নয় গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে. শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন হয়তো পরীক্ষা ছাড়াই হতে পারে। কিন্তু পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পরীক্ষা ছাড়া কঠিন। আবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী এবং জেএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। ফলে সহজ কোনো সমাধান নেই।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, বাস্তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া কঠিন হবে।
জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে যা আছে প্রস্তাবে
আগামী সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত যদি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু রাখা যায় তার ভিত্তিতে জেএসসি-জেডিসি নিয়ে বেডু প্রথম প্রস্তাবটি করেছ। ওই তিন মাস শ্রেণি কার্যক্রম চললেও নির্ধারিত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সমাপ্ত করা সম্ভব নয়। এ জন্য শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি সংকোচন করে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। তারা বলছে, সংকুচিত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে আগের মতোই ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব।
ফিচার বিজ্ঞাপন
কুয়ালালামপুর-লঙ্কাউ ৫দিন ৪ রাত
জাকার্তা ও বালি ৭দিন ৬ রাত
Dubai (City tour- Dhow Cruise- Desert safari- Abu Dhabi tour) 5D/4N
দ্বিতীয় প্রস্তাবটি করা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্তও করোনা সংক্রমণের বাস্তবতা ধরে নিয়ে। এ ক্ষেত্রে পাঠ্যসূচি সংকোচন করে ডিসেম্বরে শুধু বহু নির্বাচনী প্রশ্নের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় এক ঘণ্টার পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
তৃতীয় প্রস্তাবে পরীক্ষার মোট বিষয়ের সংখ্যা কমানোর কথা বলা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তারা বলছে, জেএসসি পরীক্ষা চালুর আগে অষ্টম শ্রেণিতে যে বৃত্তি পরীক্ষা হতো তাতে কেবল বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা হতো।
চতুর্থ প্রস্তাবে সব কটি বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে প্রশ্নপত্র ছাপার ক্ষেত্রে যে দীর্ঘ সময় লাগে, সেটা কমবে। এ ছাড়া সব বোর্ডের ফলাফলেও সাম্যতা আসবে।
পঞ্চম প্রস্তাবে সংকুচিত শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচির আলোকে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদি নভেম্বর থেকে এক মাসের জন্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে এটি করা যাবে। বিদ্যালয়কেন্দ্রিক এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে শুধু অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার ফল শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পাঠাতে হবে। এখানেও আসন বিন্যাসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ভিন্ন সেটে প্রতিদিন দুই পালায় পরীক্ষায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ১০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষার জন্য মনোনয়ন দেওয়া যেতে পারে।
সর্বশেষ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চলতি বছর বিদ্যালয়ে যদি শ্রেণি কার্যক্রম আদৌ চালু করা সম্ভব না হয় তাহলে কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীরা পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে। এ জন্য একটি শিক্ষাবর্ষকে বাতিল না করে শিক্ষাক্রমের অবশিষ্ট অংশকে পরবর্তী শ্রেণিতে সমন্বয় করা যেতে পারে।
অষ্টম শ্রেণিতে পড়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, পরীক্ষার বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কারণ, এটি নিয়ে শিক্ষার্থী–অভিভাবক সবাই চিন্তায় আছেন।
সার্বিক বিষয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিয়ে বেডু যেসব বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে সেগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া উচিত নয়। আর এই পরীক্ষার সনদ কাজেও আসে না। স্কুলের মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা যেতে পারে।
Source: ProthomAlo
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
২৩৩ বার পড়া হয়েছে