হ্রদের মাঝে জল মহল। শহরের বাড়ি-ভবন, হোটেল-মোটেল, সড়ক, গেট গোলাপি রঙে ভরপুর। লাল ফুলে ভরা সড়কের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া সড়ক বিভক্তিকরণ লম্বা দেয়াল। শহরের নাম ‘পিংক সিটি’। ভারতের জয়পুর রাজ্যের একটি অনন্য শহর এটি। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকেরা ছুটে যান এই শহরে। সকালে আজমির থেকে সড়কপথে পিংক সিটির জয়পুর শহরে ঢুকেই মনটা ভরে গেল। যেদিকেই তাকাই, আদি নিদর্শন আর স্থাপত্যশিল্পে ভরপুর; পাহাড়ি এই জয়পুর। জয়পুরের সপ্তাশ্চর্যের কথা শোনাই এবার।
আমবার প্যালেস
পিংক সিটির ভেতরে ‘আমবার
প্যালেস’। মহাসড়কের দুই পাশে বিশাল উঁচু পাহাড়। পাহাড়গুলো মার্বেল পাথরে
ভর্তি। বলা যায়, পাথরের পাহাড়। আর এই পাথরের পাহাড় খোদাই করে তৈরি করা হয়
‘আমবার প্যালেস’। দূর থেকে পাহাড়চূড়ার এই প্যালেস দেখলে মন জুড়িয়ে যায়।
পাহাড়চূড়ায় ওঠার জন্য তৈরি করা আছে সিঁড়িযুক্ত আঁকাবাঁকা বহু পাকা সড়ক।
পাহাড় খোদাই করেই এই সড়ক তৈরি করা হয়। দেখা গেল, শত শত বিদেশি পর্যটক এই
প্যালেস দেখতে পাহাড়ে উঠছেন হাতির পিঠে চড়ে। পর্যটকদের প্যালেস ঘুরে
দেখানোর জন্য সেখানে লাল কাপড়ে সাজানো বৃহদাকৃতির হাতি রয়েছে শতাধিক। এ
ছাড়া এখানে রয়েছে বিশাল একটি হ্রদ। তার তিন পাড়ে মসজিদ আকৃতির পাঁচ-ছয়টি
গম্বুজ। সেখানে হাজার হাজার কবুতর উড়ে বসছে।
জল মহল
তিন দিকে
পাথরের পাহাড় আর মাঝখানে ছয় কিলোমিটার লম্বা বিশাল নীল জলের হ্রদ। এই
হ্রদের মাঝখানে জল মহলটি নির্মাণ করেন মহারাজ প্রতাপ সিং। মহলের তিন দিকে
হ্রদের পাশে উঁচু পাহাড়। আরেক দিকে পর্যটকদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র। এর
প্রবেশমুখে চলছে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গানের আসর। মহল থেকে হ্রদে নামার জন্য
একাধিক সিঁড়ি রয়েছে। সবুজ পাহাড়ের গায়ে হলুদ রঙের এই মহল বেশ নজর কাড়ে।
হাওয়া মহল
পিংক সিটির প্রাণকেন্দ্রে মহাসড়কের একেবারে পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে অপূর্ব
সুন্দর হাওয়া মহল। স্থাপনাটি দূর থেকে গলার হারের মতো দেখায়। বলা হয়, গরমের
দিনে ঠান্ডা হাওয়া খাওয়ার জন্য এই মহলটি তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে এটি
জাদুঘর হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে।
জন্তর-মন্তর
প্রাচীন আমলে ব্যবহূত
সব ধরনের যন্ত্রপাতি নিয়ে জন্তর-মন্তর। টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকে নজরে পড়ে
বিশাল দুটি ঘণ্টা। তারপর অতিকায় ঘড়ি, সে সময়কার সেনাপতিদের ব্যবহারের
গোলাবারুদ, কামানসহ নানা যন্ত্রপাতি।
সিটি প্যালেস
জয়পুরের
পুরোনো শহরের প্রাণকেন্দ্রে সিটি প্যালেসের অবস্থান। এটি মোগল আমলের
স্থাপত্য। মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরি। এখানে উঁচু ঘড়ি টাওয়ার ছাড়াও দেখার বহু
কিছু রয়েছে।
সেন্ট্রাল মিউজিয়াম
জাতীয় জাদুঘর বা সেন্ট্রাল
মিউজিয়ামটি শহরের রাম নিয়াজ গার্ডেনের পাশে অবস্থিত। এখানে সংরক্ষিত রয়েছে
সেই আমলের রাজা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ব্যবহূত কাপড়-চোপড়, গয়না, আসবাবসহ
বিভিন্ন কিছু।
ফিচার বিজ্ঞাপন
মৈনট ঘাট প্রাইভেট ডে লং ট্যুর
বালি ৫দিন ৪ রাত
Kolkata – Gangtok (Sikkim) 5D/4N
চন্দ্রা মহল
এটি শহরের অন্যতম একটি সুন্দর
কমপ্লেক্স। এটি আজ পর্যন্ত জয়পুরের মহারাজার ঘর হিসেবে স্বীকৃত। এই ভবনটি
সাততলা। প্রতিটি তলা ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে তৈরি। একেবারে ওপরের তলায় একটি
প্যাভিলিয়ন আছে, যাকে ‘মুকুট মহল’ অথবা ‘ক্রাউন প্যালেস’ বলে জানেন অনেকে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বিমান, বাস বা ট্রেনে কলকাতা যাওয়া যায়। কলকাতা থেকে বিমান অথবা
ট্রেনে দিল্লি। দিল্লি থেকে বাস অথবা ট্রেনে ২৮০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে
জয়পুর পৌঁছাতে সময় লাগে সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা। জয়পুরে থাকা ও খাবারের ভালো
ব্যবস্থা রয়েছে। দিল্লি থেকে সকালে জয়পুর গিয়ে রাতের ট্রেনে আবার দিল্লি
ফিরে আসা যায়। দিল্লি থেকে জয়পুর পর্যটকদের যাতায়াতে আলাদা ট্যুরিস্ট বাস
সার্ভিস এবং প্যাকেজ ট্যুর চালু আছে। নিউ দিল্লি রেলস্টেশনের পাশে এসব
প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়।
আবদুল কুদ্দুস
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারি ৩১, ২০১২
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
শক্তিশালী ইলেকট্রিক গ্রাইন্ডারের দাম জেনে নিন৯৬৬ বার পড়া হয়েছে