নিয়ম না থাকলেও প্যাকেজ করে পণ্য বিক্রি করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)র ডিলাররা। এতে একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে সরকারের উদ্দেশ্য, অন্যদিকে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য ক্রয় করতে পারছেন না দরিদ্ররা। তবে পেঁয়াজের স্টক শেষ হয়ে গেলে এ অবস্থা আর থাকবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, মৌচাক, মতিঝিল কাকরাইল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্যাকেজ করে বিক্রি করা হচ্ছে টিসিবির পণ্য। বেশ কিছু ক্রেতা তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী পণ্য কিনতে চাইলেও বিক্রেতারা পণ্য বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানান। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, আমদানি করা পেঁয়াজ আগামী সপ্তাহে শেষ হয়ে যাবে। এরপর থেকে ডিলারদের এ প্যাকেজের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে টিসিবি।

রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় টিসিবির ট্রাকে ৮৫০ টাকা প্যাকেজ করে ৬টি পণ্য বিক্রি করে ডিলারের প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে ছিল ১০০ টাকা লিটার দরে ৪ লিটার তেল, ৫৫ টাকা দরে ২ কেজি করে ছোলা, মসুর ডাল ও চিনি, ৮০ টাকা দরে এক কেজি খেজুর এবং ২০ টাকা দরে ২ কেজি পেঁয়াজ। লকডাউনের মধ্যেও ক্রেতারা তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে পণ্য সংগ্রহ করেন। তবে প্যাকেজ করে পণ্য বিক্রি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। টিসিবির পন্য কিনতে আসা সাইদুল হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, টিসিবি থেকে ডাল, তেল ও চিনিসহ বাজার থেকে অন্যান্য পণ্য কিনতে তিনি বাসা থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে বের হয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও তাকে টিসিবি থেকে ৮৫০ টাকা দিয়ে পণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে তার অন্য পণ্য কিনতে টাকার ঘাটতি হবে বলে এরকম সিস্টেমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

প্যাকেজ করে কেন পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে জানতে চাইলে ট্রাকের বিক্রয়কর্মীরা ভোরের কাগজকে জানান, আমাদের সবকিছু সমন্বয় করে পণ্য বিক্রি করতে বলা হয়েছে, তাই করছি। তা না হলে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য বিক্রি হবে, আর অন্য পণ্যগুলো অবিক্রীত থেকে যাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ডিলার। কে সমন্বয় করে পণ্য বিক্রি করতে বলেছে এমন প্রশ্নে নিশ্চুপ থাকেন ওই বিক্রেতা। বিক্রেতা নিজের নামটিও গোপন করেন। এক ব্যক্তি আসেন খেজুর কিনতে। কিন্তু ওই ব্যক্তির কাছে খেজুর বিক্রি করেননি বিক্রেতারা। বিক্রয়কর্মীরা বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষেরা প্যাকেজ কিনতে আর্থিক অসঙ্গতির কথা জানাচ্ছে। অথচ অনেকেই একসঙ্গে ৫ লিটার, ১০ লিটার করে তেল কিনতে আসে। অথচ পেঁয়াজ কিনতে চায় না। এর আগে গত বছর এই বড় বড় পেঁয়াজ নেয়ার জন্যই মানুষ হাহাকার করেছে। তারা বলেন, পেঁয়াজ পঁচনশীল পণ্য। আমাদেরকে টিসিবি থেকে এ পণ্যটাও নিয়ে আসতে হয়। ক্রেতারা না নিলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। ইতিমধ্যে কয়েকবস্তা পেঁয়াজ ফেলে দিতে হয়েছে বলেও জানান তারা।

একই অবস্থা দেখা যায় মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থানরত টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে। এখানকার বিক্রেতারাও নিজেদের নাম বলতে চাননি। তারা বলেন, পণ্য নিতে হলে প্যাকেজের সব পণ্যই নিতে হবে। পণ্য কিনতে আসা মাসুদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, তার ছোলার প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে তাকে। গোলাম রসুল নামে আরেক ব্যক্তি জানান, তার চিনির প্রয়োজন নেই; কিন্তু প্যাকেজ ছাড়া ডিলারের লোকজন পণ্য বিক্রি করছেন না বলে সবই নিতে হচ্ছে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Maldives (Hulhumale Island) 3D/2N

মূল্য: ১৩,৯০০ টাকা

USA Visa (Private Job Holder)

মূল্য: 5,000 Taka

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির ভোরের কাগজকে বলেন, প্যাকেজ করে পণ্য বিক্রির কোনো নিয়ম নেই। কোনো ডিলার এটা করে থাকলে তারা তা অন্যায় করছে। আমাদের কাছেও ইতিমধ্যে কিছু অভিযোগ এসেছে। আমরা তদারকিতে আছি। তবে এ ধরনের ডিলারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, পচনশীল পণ্য পেঁয়াজ। তাই পেঁয়াজ বিক্রির জন্য তারা হয়তো এ ধরনের পন্থা অবলম্বন করছেন। আগামী শনিবার থেকে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হবে। তখন হয়তো এ অনিয়ম থাকবে না।

নাম না প্রকাশের শর্তে টিসিবির একটি সূত্র জানায়, টিসিবিতে বিপুল পরিমাণ আমদানি করা পেঁয়াজ রয়ে গেছে। ডিলারদের সেইসব পেঁয়াজ বিক্রির জন্য বলা হয়েছে। ডিলাররাও তাই ক্রেতাদের প্রথমদিকে ১৫ টকা কেজি দরে ১০ কেজি করে পেঁয়াজ কেনার শর্তে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা শুরু করেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখির পর ১০ কেজির বদলে তা ২/৩ কেজিতে নামিয়ে আনে ডিলাররা। তবে সেইসাথে টিসিবি পেঁয়াজের দামও ৫ টাকা বাড়িয়ে কেজি প্রতি করে ২০ টাকা। শুধু পেঁয়াজই নয়, দাম হয় অন্যান্য পণ্যেরও। টিসিবি গত ১৭ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি লিটার সয়াবিন ৯০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এখন তা ১০০ টাকায় বিক্রি করছে। প্রতি কেজি চিনির দাম ৫০ টাকা থাকলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। জানা যায়, সারা দেশে বর্তমানে ৫০০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যে ৬টি পণ্য বিক্রি শুরু করে। এই কার্যক্রম চলবে ৬ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে রাজধানীতে রয়েছে ১৩০টি ট্রাক।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১৯৬ বার পড়া হয়েছে