করোনাভাইরাস নিঃসন্দেহে ব্যবসার পক্ষে খারাপ। বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের আয়-রোজগারের পথ। সম্ভবত গুটিকয়েক ব্যবসা চিরতরে পরিবর্তিত হতে চলেছে। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতেও কিছু ব্যবসায় খুলেছে সম্ভাবনার দুয়ার। অনেক খাতের জন্য আশীর্বাদ বয়ে নিয়ে এসেছে মহামারী এই ভাইরাস। চলুন দেখে নিই, করোনার দুর্যোগেও যেসব ব্যবসার বাজার ভালো।

করোনা-পরবর্তী সময়ের পরিবর্তন: করোনা বদলে দিয়েছে বিশ্ব পরিস্থিতি। চাকরি হারিয়ে অনেকে বেকার জীবনযাপন করছেন। কিন্তু কতদিন চলবে এমন পরিস্থিতি? এর উত্তর কারও জানা না থাকলেও হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউর মে-২০২০ সংখ্যা জানাচ্ছে, করোনাভাইরাস-পরবর্তী সময় বৈশ্বিক পেশায় বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আসবে। সেই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারলে পেশাজীবনে কোনো ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হবে না।

অনিশ্চয়তা আর ভবিষ্যতের কথা গুরুত্ব দিয়েই নিজেকে তৈরি করতে হবে, জলদি। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, সামনের দিনগুলোয় কর্মীদের কাজে ঝুঁকি ও প্রতিবন্ধকতা থাকবে। তবে একজন কর্মীকে দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গে বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী হতে হবে। কর্মীদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কৌশলী হয়ে উঠতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো পেশায় আটকে না রেখে অনিশ্চয়তাকে বাস্তবতা ভেবে সেভাবে নিজেকে তৈরি করতে হবে দ্রুত।

পেশাগত জীবনে নানা সময় নানা কারণে পরিবর্তন আসতে পারে। করোনা-পরবর্তী সময় যদি কোনো পরিবর্তন আসে, তবে কোন কাজটি করতে হবে বা কী করা উচিত, তা আগে থেকে অনুধাবন করা শিখতে হবে। প্রয়োজনে অনলাইন থেকে তথ্য নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে সামনে কী হচ্ছে, কী হবে, সে সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। সামান্য সময়ের জন্য হয়তোবা স্থবিরতা দেখা যেতে পারে। সে সময় পরবর্তী সময়ের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। কোনোভাবেই নৈতিক ও মানসিক অবস্থানকে দুর্বল করা চলবে না।

করোনাকালীন নিজেকে নতুন নতুন কাজে সংযুক্ত করার চেষ্টা করুন। অনলাইন নেটওয়ার্কিং সাইট লিংকডইনসহ অন্য পেশাজীবীদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিজের দক্ষতাগুলো প্রকাশ করুন। সামনের সময়ের জন্য নতুন কিছু শিখতে পারেন এখনই। এক জরিপে দেখা গেছে, ১৬ শতাংশ নিয়োগকর্তা কর্মীদের ভার্চুয়াল দক্ষতা যেমন- কম্পিউটারের ব্যবহার, ই-মেইল বা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ পদ্ধতিগুলো পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। তাই ভবিষ্যতের পেশার ক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মীকে অবশ্যই ইন্টারনেট ওয়ার্কিং সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।

যেহেতু এখন একটি পরিবর্তিত সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা, এ সময় আপনার নেটওয়ার্কের যে সুপ্ত সংযোগগুলো আছে, যাদের সঙ্গে অনেক দিন যোগাযোগ নেই বা ভিন্ন কোনো পেশার ব্যক্তি আছেন, তাদের সঙ্গে নিজের সম্পর্কগুলো পুনরায় সক্রিয় করুন। ফোন করতে পারেন, ই-মেইলে যোগাযোগ স্থাপন করুন।

আপনার বিপদের কথা, ঝুঁকির কথা সুযোগ বুঝে তাদের জানানোর চেষ্টা করুন। নিজেকে যতটা সম্ভব উন্মুক্তভাবে সেসব সংযোগ স্থাপন করে তাদের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরি করুন। যে কোনো সংকটকালীন পরিস্থিতির পর নতুন সুযোগ, নতুন উদ্যোগের সম্ভাবনা তৈরি করে। সংকটকালের মধ্যেই আসলে পেশাজীবীদের মাঝে হতাশা তৈরি হয়। উদ্দেশ্যহীনতায় আমাদের মাঝে যেন হতাশা তৈরি না হয়, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।

পরিচ্ছন্নতা প্রতিষ্ঠান: কভিড-১৯ মহামারীতে রূপ নেওয়ার আগে পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে কেউ গুরুত্বের সঙ্গে দেখত না। তবে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় পরিচ্ছন্নতায় তোড়জোড় বেড়েছে সবার মাঝে। আর তাতে দিন যত যাচ্ছে পরিচ্ছন্নকর্মী এবং পরিচ্ছন্ন সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর কদর বাড়ছে। পরিচ্ছন্নকর্মীরা তাদের গ্রাহকদের বাসাবাড়িই শুধু নয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকেও করে তোলে জীবাণুমুক্ত।

উদাহরণস্বরূপ- অফিস বা বাসাবাড়ির স্কেলেটর, হ্যান্ডরেলিং, দরজার হ্যান্ডল, লিফট বোতাম এবং সুইচগুলো জীবাণুমুক্ত করা। চাকরি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইটগুলোয় ইতিমধ্যে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে ওয়েদারস্পুনস ও লেডব্রোকস ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। কলম্বাস ক্লিনিং সলিউশন এবং ওহাই ক্লিনিংয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ‘করোনাভাইরাসের কারণে পরিচ্ছন্নতার চাহিদা সত্যিই ভীষণ বেড়ে গেছে।

চাহিদা মেটাতে অনেক প্রতিষ্ঠান নতুন কর্মী নিয়োগ দিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী হলেও এই ব্যবসার জন্য আশীর্বাদ।’ কলম্বাস ক্লিনিং সলিউশনের সহ-মালিক ক্রিস্টাল হুগে বলেন, ‘আমাদের জীবনে এর আগে কখনো এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। বিশেষ করে আমাদের ব্যবসায় তো একদমই নয়! বর্তমানে আমাদের কোম্পানিতে প্রচুর লোক কাজ করছে।’ ইউনস্টার স্টার ক্লিনিং সার্ভিস তাদের ব্যবসায় পরিধি এতটাই বাড়িয়েছে যে, তারা অনেক নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছে।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১৭৭ বার পড়া হয়েছে