দীঘা পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র সমুদ্র কেন্দ্রিক ভ্রমণ কেন্দ্র। খুবই কম খরচে ঘুরে আসতে পারেন। কলকাতা থেকে মাত্র ১৮৯ কিলোমিটার দূরে মেদিনীপুর জেলায় এ সমুদ্রসৈকত। কাজের ফাঁকে কিংবা কলকাতা এলে কয়েকদিনের জন্য কাটিয়ে আসতে পারেন দীঘা থেকে। খুঁজে নিতে পারেন সমুদ্রসৈকত আর ঝাউবনের মাঝে প্রকৃতির কোলে মনের শান্তি।
বৈশিষ্ট্য: ৭ কিলোমিটার লম্বা সমুদ্রতট একপাশে গভীর সমুদ্র অন্যপাশে ঝাউ গাছের অগভীর জঙ্গল। ভেঙে পড়া ঢেউয়ের পানিতে পা ভিজিয়ে হেঁটে যাওয়া যায় দীর্ঘ পথ। দীঘায় দুটি সৈকত রয়েছে। একটি পুরোনো দীঘার সৈকত, অপরটি নতুন দীঘার সৈকত। বাঙালির এই পর্যটন কেন্দ্রের রয়েছে এক লম্বা ইতিহাস।
রেলপথে যাবেন: প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে বহু পর্যটক দীঘায় বেরাতে যান। কলকাতা থেকে ১৮৯ কিলোমিটার দূরত্বের এই সমুদ্র শহরে যাওয়ার জন্য আছে রেলপথ। দীঘা যাওয়ার এটাই সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। কলকাতার হাওড়া স্টেশন থেকে রেলে চেপে পৌঁছানো যায় ৩ ঘণ্টার মধ্যে। চোখ জুড়িয়ে যাবে পথের প্রাকৃতিক শোভায়। সবুজ ধান ক্ষেত, মেঠোপথ, রেল লাইন থেকে দূরের ছোট গ্রাম আর সেই গ্রামকে জড়িয়ে চলছে ছোট নদী।
যেতে পারেন সড়ক পথেও: যাওয়া যায় সড়ক পথেও। কলকাতা নিউমার্কেটের পাশেই ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে দীঘার বাস আছে এসি বা নন এসি। আছে সোনালি ত্রিভুজের রাস্তা। ঝড়ের গতিতে ছুটতে ছুটতে মাঝপথে একটু বিশ্রাম। জাতীয় সড়কের ধারে কোন হোটেলে বা পাঞ্জাবি ধাবায় জমিয়ে করা যেতে পারে খাওয়া-দাওয়া। তারপর আবার দীঘা অভিমুখে যাত্রা শুরু। কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে আছে সরকারি-বেসরকারি বাসের ব্যবস্থা। বাসে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগবে দীঘা যেতে।
রাত যাপন: পুরোনো দীঘা এবং নতুন দীঘায় অনেক হোটেল আছে ৫০০ থেকে ১২০০ রুপির মধ্যে। রেল স্টেশনটি নতুন দীঘায়। বাস থামে পুরোনো দীঘায়। হোটেলগুলোতে আছে আধুনিক সব ব্যবস্থা। পছন্দমতো কোন একটি বেছে নিলেই হলো। তবে আগে থেকে বুক করে রাখলে সুবিধা হবে। বুক না করলে শুধু সাপ্তাহিক ছুটির দিন (শনি ও রোববার) ছাড়া হোটেল পাওয়া যায়।
সমুদ্রস্নান: একদিন পুরোনো দীঘায়, আরেক দিন নতুন দীঘায় স্নান করে দেখতে পারেন। সমুদ্রের তীরে ছাউনির নিচে বসে ডাব খেতে ভুলবেন না যেন।
সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত: কোনভাবেই সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতাটি হাতছাড়া করবেন না। দীঘার সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য সবার মনে স্বর্গীয় অনুভূতি সৃষ্টি করে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Singapore Tour with Universal Studios & Sentosa 5D/4N
ভুঁড়ি কমান, সুস্থ থাকুন
ব্যাংকক-ফুকেট-ফিফি আইল্যান্ড-সাফারি ওয়ার্ল্ড
কেনাকাটা: সন্ধ্যা বেলায় পুরোনো দীঘার সমুদ্রতটের ধারে বসে হরেক রকমের দোকান। ঝিনুকের গয়না, ঘর সাজানো, নানা ধরনের শঙ্খ, শামুক, প্রবাল ইত্যাদি দিয়ে বানানো অপূর্ব সব জিনিস। এছাড়াও আছে মেদেনীপুরের বিখ্যাত মাদুর এবং বাঁশের নানা ধরনের শিল্পকর্ম।
খাওয়া-দাওয়া: ভোজন রসিক বাঙালি কথাটা দুই বাংলায়ই সমানভাবে প্রযোজ্য। নানা ধরনের মাছ থেকে শুরু করে চাইনিজ, মোগলাই, থাই কিংবা ইতালিয়ান খাবার পাওয়া যায়। সমুদ্রের ধারে পাবেন মাছ ভাজার দোকান। সেখানে পাবেন রকমারি সব ভাজা মাছ। তবে মুসলিম হোটেল নেই বললেই চলে। তার জন্য আপনাকে যেতে হবে ১ কিলোমিটার দূরে রতনপুর।
মেরিন অ্যাকুরিয়াম: দীঘায় গেলে অবশ্যই একবার যাবেন ‘দ্য মেরিন অ্যাকুরিয়াম অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে’। সমুদ্রতলার গোটা জগৎ নিয়ে তৈরি এ অ্যাকুরিয়াম। জানতে পারবেন বিভিন্ন গবেষণার তথ্যও। ১৯৮৯ সালে ভারতের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এ রিসার্চ সেন্টার তৈরি করা হয়। যেটা আজ ভারতের সমুদ্র গবেষণার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র।
নদী দর্শন: দীঘা থেকে কিছু দূরেই আছে অমরাবতি লেক। এখানে কিছুটা সময় নৌকা ভ্রমণ করতে পারেন। এর পাশেই আছে সর্প উদ্যান। দীঘা থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরে আছে সুবর্ণরেখা নদী। পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা সীমান্তে এ নদীর রূপ মাধুরী মুগ্ধ করবে।
আরও যা দেখবেন: এছাড়াও দেখে আসতে পারেন ঐতিহাসিক চন্দনেশর মন্দির। দীঘার আশেপাশে আছে আরও কয়েকটি সমুদ্রসৈকত। প্রতিটি সৈকতই একে অপরের থেকে আলাদা। উড়িষ্যা সীমান্তের কাছে উদয়পুর বিচেও ঘুরে আসতে পারেন। চাইলে এখানে মোটরবাইকে ঘুরতে পারবেন ঘণ্টায় ১০০ রুপি দিয়ে।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
৭৬৭ বার পড়া হয়েছে