কালের গহ্বরে হারিয়ে গেল আরো একটি বছর। নতুন প্রভাতের আলো নিয়ে দুয়ারে হাজির নতুন আরেকটি বছর। শতাব্দির ভয়াবহ মহামারির কবলে পড়া বিদায়ী ২০২০ সালটি যেন ছিল এক বিষময় বছর। মহামারির বিষাক্ত ছোবলে এক বছরে পৃথিবী নামের ব্যস্ত এক গ্রহ অচেনা রূপ পেয়েছে। সর্বগ্রাসী করোনা এ পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে ১৮ লাখের বেশি মানুষের জীবন। আট কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই ভাইরাসে। খাতা-কলমের এই হিসাবের বাইরে মৃত্যু আর শনাক্তের সংখ্যা আরো ঢের বেশি। বিদায়ী বছরটি বিশ্ববাসীর মতো বাংলাদেশেও ছিল ঘটনাবহুল। মহামারির ছোবলে নীল হয়ে যাওয়া জনজীবন এক বছরেও স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেনি। বছরজুড়ে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে- এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। শিল্প-বাণিজ্যে স্থবিরতা। রাজনীতির মাঠ যেন খাঁ খাঁ মরু। জীবন-জীবিকার কঠিন এক যুদ্ধে মানুষ। যে প্রবাসীদের পাঠানো ডলারে সচল অর্থনীতি সেই প্রবাসীরা আছেন মহা মুসিবতে। তাদের অনেকে দেশে ফিরে কর্মহীন। কেউ আবার বিদেশেই বেকার জীবনের ঘানি টানছেন। যারা কাজ করতে পারছেন তাদের সামনেও আছে নানা অনিশ্চয়তা। এমন অবস্থায় নতুন বছরকে বরণ করা হচ্ছে দুনিয়ার দেশে দেশে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিধিনিষেধের মধ্যে বন্দি এবারের বর্ষবরণ।

নতুন বছরকে বরণ উৎসবের জৌলুসও কেড়ে নিয়েছে ভয়াল করোনা। দেশে বর্ষবরণে এবার বড় কোনো আয়োজন ছিল না। উন্মুক্ত অনুষ্ঠান হয়নি। ছাদে অনুষ্ঠান করারও অনুমতি ছিল না। সন্ধ্যার আগেই চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয় নগরীর প্রাণ বলে খ্যাত হাতির ঝিলে। তারপরও মানুষ যে যেভাবে পারেন নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছেন নতুন আশা-আর প্রাপ্তির স্বপ্ন জড়িয়ে।

সবার আশা নতুন বছরটা অন্তত  যেন ২০২০-এর বিষমুক্ত হয়। করোনা মহামারি কাটিয়ে আগের মতোই যেন মুক্ত পৃথিবী ফিরে আসে। পৃথিবীর দেশে দেশে বর্ষবরণও করা হয়েছে এমন প্রত্যাশা নিয়ে। বিশেষ করে বিদায়ী বছরের শেষটা ছিল আশা জাগানিয়া। এক বছর করোনায় পুরো পৃথিবী কাবু হয়ে থাকলেও ভ্যাকসিন পেয়ে নতুন আশা জাগতে শুরু করেছে মানুষের মনে। দেশে দেশে শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ। অচেনা এক ভাইরাস মানুষকে ঘরবন্দি করতে পারলেও দমিয়ে রাখতে পারেনি। মাত্র ১১ মাসের মধ্যেই অদম্য মানুষ আর বিজ্ঞানের জাদুকরী শক্তিতে হাতে এসে করোনা প্রতিরোধের ভ্যাকসিন। এটি বলতে এই শতকের বড় এক বিস্ময়। এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো নতুন বছরে পুরো বিশ্বের মানুষকে এই ভ্যাকসিনের আওতায় আনা। ধনী-গরিব সব মানুষ আর কাছে-দূরের সব দেশ যেন সমানভাবে এই ভ্যাকসিনের ন্যায্য হিস্যা পায় তা নিশ্চিতই হচ্ছে নতুন বছরের সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা। দেশে এই চ্যালেঞ্জটি আরো বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ কতো মানুষ কখন কীভাবে করোনার ভ্যাকসিন পাবে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। করোনার ভ্যাকসিন ঠিক কবে দেশে আসবে তারও দিন তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। তবে সবার আশা নতুন বছরের শুরুতেই দেশে ভ্যাকসিন পৌঁছাবে। এ বছরের মধ্যেই সবার জন্য করোনার ভ্যাকসিন নিশ্চিত হবে। নতুন বছরে মানুষ করোনামুক্ত জীবনে ফিরতে পারবে। করোনার শিকল থেকে বেরিয়ে আসবে মানুষের জীবন আর জীবিকা।

নতুন বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ দুয়ার খুলবে- এমন আশা দেশের কোটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক আর অভিভাবকের। অর্থনীতির মন্থর চাকা নতুন বছরে সচল হবে এমন আশা নিয়ে তাকিয়ে সবাই। করোনার কারণে রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীদের জন্য শ্রমবাজার আবার উন্মুক্ত হবে- এমন প্রত্যাশা সবার। একইসঙ্গে ঝিমিয়ে পড়া দেশের রাজনীতির মাঠ আবার সচল হবে, মাঠের রাজনীতি মাঠে গড়াবে- এমন প্রত্যাশা রাজনৈতিক দলগুলোর।
মহামারিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কৌশলের কারণে সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিধিনিষেধ ছিল বিদায়ী বছরজুড়ে। নতুন বছর মানুষ আবার আগের মতোই সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনে জাগবে, সামাজিক কর্মসূচিতে একে অন্যের পাশে দাঁড়াবে সশরীরে- এমন আশা আমাদের সবার।

ফিচার বিজ্ঞাপন

ইংরেজি নতুন বছর ২০২১ সাল উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৃথক বাণীতে তারাও মহামারির ধকল কাটিয়ে নতুন বছরে নতুন প্রাপ্তি আর সম্ভাবনায় এগিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন।
নতুন বছরটি সবার জন্য অমিত সম্ভাবনা আর প্রত্যাশিত প্রাপ্তি নিয়ে আসুক- এটাই সবার চাওয়া।

Source: Mzamin

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

Online Shopping BD (Facebook Live)



২৪৭ বার পড়া হয়েছে