আধুনিক সময়ে ঘর সাজানোর কৌশলকে তুলনা করা যেতে পারে যে কোনো শিল্প মাধ্যমের সঙ্গে। কেননা শত শত বছর ধরে স্থাপত্যশৈলীতে যোগ হয়েছে নানা মাত্রা। যার প্রভাব পড়েছে গৃহসজ্জায়। বাড়ির বাহিরটা দেখতে সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যও গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কিছুদিন আগেও গৃহসজ্জার জন্য পেশাদার লোকের কথা অনেকেই ভাবত না। কিন্তু এখন বাড়ি তৈরির জন্য প্রথমেই যেমন একজন আর্কিটেক্টের কথা ভাবা হয়, তেমনই এখন বাড়ি তৈরি হয়ে গেলে ঘর সাজানোর জন্য চাই একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। কেউ চাইলে নিজেই অনায়াসে নিজের ঘর সাজানোর ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু গৃহসজ্জার গোপন মন্ত্রটি হলো রুচিশীলতার সঙ্গে ব্যবহারিক সুবিধার সমন্বয়। তাই আপনার সাধের বাড়িটি শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই নয়, উপভোগ করার স্থানও বটে।
সুন্দর করে যে কেউ নিজের আবাসস্থল সাজাতে চায়। শুধু মানুষ কেন, পশুপাখিরাও তাদের বাসা বা থাকার জায়গাটা গুছিয়ে তৈরি করতে ভালোবাসে। তবে কখনও কখনও অনেকেই সাধারণ একটি ভুল করে বসে। নিজের আবাসস্থলকে বেশি সুন্দর করতে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ অনেক জিনিস দিয়ে ঘরের জায়গা ভরিয়ে ফেলে। যা রুচিশীলতার পরিচায়ক নয় তো বটেই, পাশাপাশি অসুবিধারও কারণ। এবার জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ভুলের কথা।
শূন্যস্থান পূরণ
যদি কোনো দেয়াল খালি থাকে অথবা কোনো টেবিল বা তাক খালি খালি লাগে, দুম করে যেন সেই শূন্যস্থান পূরণের জন্য কোনো ঘর সাজাবার সামগ্রী কিনে ফেলবেন না। এটা হলো এক ধরনের জঞ্জাল জমানো। আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না যে, আপনার বাড়িটি এক সময় হয়ে উঠুক আবর্জনাপূর্ণ। এই ভুলটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, যদি ছবি অথবা টুকিটাকি সাজানোর জিনিসের পরিবর্তে আপনি শুধু ঘর ভরানোর জন্য কিনে আনেন আসবাবপত্র। এ ধরনের অপরিকল্পিত কেনাকাটা গৃহসজ্জাকে খুব সহজেই নষ্ট করে দিতে পারে।
একঘেয়েমি দূর করা
মনে করুন, আপনার কেনা আসবাবপত্র আপনার ভীষণ প্রিয়। কিন্তু তাই বলে কি সেগুলোকে চিরকালের জন্য অপরিবর্তিতভাবে রেখে দেবেন ঘরের নির্দিষ্ট কোনো জায়গায়? আসবাব যদি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে না সাজানো হয়, তাহলে অল্প কিছুদিন পরেই সেগুলোর সুশৃঙ্খল পরিবেশে আপনি এতটাই অভ্যস্ত হয়ে যাবেন যে, তখন হয়তো আপনার অতি পছন্দের আসবাবের দিকে ফিরেও তাকাবেন না। তখন ঘরজুড়ে থাকবে শুধু একঘেয়েমি। তাই মাঝে মাঝেই পাল্টে ফেলুন আপনার বাড়ির অন্দরসজ্জা।
স্বকীয়তা বজায় রাখা
মনে করুন, পত্রিকায় সাজানো ঘরের ছবি দেখে আপনি মুগ্ধ। কিন্তু যদি ছবির সঙ্গে মিলিয়ে ঘর সাজাতে চান তাহলেই বিপদ। ছবি আর ঘরের নকশাটা ভালো করে খুঁটিয়ে দেখুন। দেখবেন, ঘরগুলো যেন একেবারে ছকে আঁকা দেয়ালের ঠিক যেখানে জানালা রয়েছে আর তার থেকে মাপা দূরত্বে দরজাটি। আপনি যে ঘরটিকে ওই ছবি অনুযায়ী সাজাবেন বলে ভেবেছিলেন, সেটির আয়তন ও আকার কি ছবির মতো? ঘর সাজানোর সময় এই পার্থক্যটি সব সময় মাথায় রাখতে হবে। যেমন ধরুন, আপনার পছন্দ হলো একটি অতি আধুনিক নকশা, কিন্তু আপনার বাড়িটি পুরনো ধাঁচের, তাহলে ঘরকে আধুনিক করে সাজাবেন কী করে? হালফ্যাশনের নকশা অনুযায়ী সাজাতে গেলে সবকিছুই কেমন বেখাপ্পা এবং বেমানান মনে হবে। তাই ঘর সাজান বাড়ির কাঠামো অনুযায়ী।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Maldives (Hulhumale Island) 3D/2N
ইস্তানবুল ও কাপাডোসিয়া ৫দিন ৪ রাত
ইস্তানবুল ৪দিন ৩ রাত
পুরনো এবং নতুন আসবাব আলাদা করা
যদি আপনার বাড়িতে পুরনো এবং আধুনিক দু’ধরনের আসবাবই থাকে, তাহলে পুরনোগুলো বিক্রি করে শুধু আধুনিক অথবা আধুনিকের পরিবর্তে শুধু প্রাচীন আসবাব রেখে ঘর সাজানোর চেষ্টা করবেন না। এতে শুধু একটা গৎ বাঁধা ধারাই আসবে, নিজের সৃজনশীলতা প্রকাশ পাবে না। যদি পুরনো আসবাবগুলো ভালো জাতের এবং ভালো কাঠের হয়, তাহলে সেগুলো বিক্রি করে না দিয়ে বরং আধুনিক আসবাবের সঙ্গে সমন্বয় করে রাখুন। এতে আপনার আভিজাত্যই ফুটে উঠবে।
বুঝেশুনে কেনাকাটা করা
নতুন বাড়িতে ওঠার পর প্রথমেই একটা পাগলামি ভাব থাকে, সেটা সাজানো নিয়ে। কিন্তু এ সময় যদি নিজের পছন্দ, রুচি এবং চাহিদার সমন্বয় না করা হয়, তাহলেই সমস্যা! ‘কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনব’- এ রকম দিশেহারা অবস্থার প্রবণতা থাকে, যা চোখে পড়ে তাই কিনে ফেলার। ক্রমে ক্রমে জমা হয় অনেক বেমানান ও অপ্রয়োজনীয় জিনিস। একবার ঘর সাজানো হয়ে গেলে আর খারাপ লাগবে না, এটা ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দেন অনেকেই। কিন্তু এই বেমানান জিনিসপত্র একবার সাজানো হয়ে গেলে অত সহজে আর বদলাতে পারবেন না। তাই সাবধান হোন প্রথমেই। কেনাকাটার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো লিপিবদ্ধ করে ফেলুন। বেছে বেছে সুন্দর ও টেকসই জিনিস কিনে ফেলুন, যা সুন্দরের পাশাপাশি অনেক দিন টিকে থাকবে আপনার গৃহে।
লেখা : ইসমাইল হোসেন বাদল
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
৬২৮ বার পড়া হয়েছে