কথায় আছে মক্কার মানুষ হজ পায় না। দেশের ভেতর কত দূরদূরান্ত জেলা-উপজেলাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেড়ালেও খোদ ঢাকার পাশেই বিক্রমপুরের [মুন্সীগঞ্জ] আড়িয়াল বিল নৌভ্রমণে গিয়েছিলাম মাত্র কয়েকদিন আগে। নিয়মিত বিক্রমপুরে যাতায়াত করা যাদের এতকাল দায়িত্ব দিয়েছিলাম আয়োজন করার, তাদের ওপর এবার ভরসা না করে নিজেই ভ্রমণ আয়োজনের প্রস্তুতি নিলাম। শুক্রবার ফজরের পরপরই বিভিন্ন মহল্লা থেকে বাইকার বন্ধুরা সবাই একেএকে জড়ো হই যাত্রাবাড়ী। এরপর সকাল ৮টায় ছুটি শ্রীনগরের পথে। যাওয়ার সময় নাশতা সারব হাসারা বাজারের এক হোটেলে। জনৈক বন্ধুর তথ্যমতে সেই হোটেলের পরোটা-ভাজি নাকি সেই টেস্ট। হোটেলটা খুঁজতে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা পুরাই বেহুদা। খাবারের মান নাইবা লিখলাম। কোনো মতে পেটে পুরে আবারও ছুটলাম। শ্রীনগর বাজারের হালকা যানজট এড়িয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গাদিঘাট পৌঁছি। জুমার দিন তাই সময় ক্ষেপণ না করে দ্রুত ট্রলার ছাড়ি। সেই চিরচেনা ভটভট শব্দ। এখন আর বিরক্ত লাগে না। তবে নৌভ্রমণের সুন্দর মুহূর্তগুলোতে ট্রলারের এ বিকট আওয়াজের পরিত্রাণ কামনা করি।

ধীরে ধীরে ট্রলার বিশাল জলরাশির বুক চিরে এগোতে থাকে। ট্রলার ভেসে ভেসে যতই এগোয় ততই মুগ্ধতা আচ্ছন্ন করে। মাথার ওপর শরৎকালের ঝকঝকে আকাশ। উড়ে এসে জুড়ে বসা মৌসুমি পানির ছলছল শব্দ। যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। মাঝেমধ্যে বিলের মাঝে মাথা জেগে থাকা সবুজে ঘেরা গ্রাম। ধর্মজালে জেলেদের মাছ ধরার মনোরম দৃশ্য। এত কিছু মিলিয়ে অসাধারণ সব নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য। আড়িয়াল বিলের বুকে বয়ে যাওয়া খালের প্রান্তরে উঁচু ডিবির মতো সুবিধাজনক একটি স্থানে ট্রলার থামিয়ে সবাই জলকেলিতে মেতে উঠি। পায়ের তলা থেকে কাদা তুলে তা চেহারায় মাখামাখি করি। মনে হয় যেন সেই সময়টাতে শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। কিন্তু তা আর ফিরে পাওয়ার নয়। আড়িয়াল বিল হলো বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল। পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদী দুটির মাঝখানে বিলটির অবস্থান। শুকনো মৌসুমেও বিলে যথেষ্ট পানি থাকে। আর বর্ষাতে হয় ভয়াল রূপ। চারদিকে তখন শুধু থইথই পানি। আড়িয়াল বিল মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা থেকে শুরু। এর আয়তন প্রায় ১৩৬ বর্গ কিলোমিটার। ধারণা করা হয় প্রাচীনকালে এখানে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র সঙ্গমস্থল ছিল। পরে উভয় নদী দুটি প্রবাহ বদলানোর কারণে ওই স্থানটি শুষ্কতায় রূপ নিয়ে বিলে পরিণত হয়েছে।

হাজার বছর ধরেই আড়িয়াল বিল পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে আসছে। বিলটি মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। আড়িয়াল বিলে মিলে প্রচুর পরিমাণে হরেক রকমের দেশি মাছ। যা দেশের চাহিদার অনেকখানিই আসে এ বিল থেকে। ভোজন রসিকদের কাছে বিলের সুস্বাদু মাছের খ্যাতিও রয়েছে বেশ। তাহলে ভ্রমণ বন্ধুরা আর দেরি কেন? পানি থাকতে থাকতেই ঘুরে আসতে পারেন নান্দনিক সৌন্দর্যের উজাড় করা প্রকৃতির মৎস্য ও শস্য ভান্ডারখ্যাত আড়িয়াল বিল থেকে।

পানি নেমে যাওয়ার পরও আড়িয়াল বিল তার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য হারায় না। শীতে ধরা দেয় ভিন্ন রূপে। তখন শুধু বিভিন্ন সবজির ক্ষেত। আড়িয়াল বিলের মিষ্টিকুমড়ার নামডাক দেশজুড়ে। যার এক একটির ওজন ৩-৪ মণ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

কুনমিং ৪ দিন ৩ রাত

মূল্য: ৪২,৯০০ টাকা

Moscow, Novosibirsk & Irkutsk 7D/6N

মূল্য: 147,000 Taka

US Visa (Spouse)

মূল্য: 5,000 Taka

যাবেন কীভাবে

ঢাকার গুলিস্তানসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে মাওয়াগামী বিভিন্ন পরিবহণ চলাচল করে। সেই গাড়িতে চড়ে শ্রীনগর বাস স্টপিজে নেমে অটো/সিএনজিতে গাদিঘাট গ্রাম। এরপর ঘাটে থাকা ট্রলার রিজার্ভ করতে হবে। দিনে দিনে ঘুরে আসা যাবে। সব মিলিয়ে জনপ্রতি খরচ ৫০০ টাকা হলেই যথেষ্ট

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১৫৯ বার পড়া হয়েছে