হঠাৎই বদলে গেল গতকাল সোমবার রাতের দৃশ্য। আলো-আঁধারির খেলা। পানাম নগরী ঘিরে শত শত মানুষের কোলাহল। একদিকে ভুতুড়ে পরিবেশ অন্যদিকে ঐতিহ্যকে নিয়ে আগ্রহ। চলছে আনন্দ আয়োজন। বাংলাদেশের ঐতিহ্য দেখতে এসেছেন সবাই।
দি আর্কিটেক্টস রিজিওনাল কাউন্সিল এশিয়া (আর্কএশিয়া) সদস্য দেশগুলোর স্থপতিদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সভাপতিদের সমন্বয়ে গঠিত। ২১টি দেশের প্রায় কয়েকশ আর্কিটেক্ট ঐতিহ্যকে দেখতে এসেছেন। তারা মুগ্ধ হয়ে বাঙালি সংস্কৃতি উপভোগের পাশাপাশি পানাম নগরী সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করেন।
চারিদিকে নিস্তব্ধ। মৃত নগরীর পথে দু-একটা মানুষ। মৃত কোলাহল আর অব্যক্ত ইতিহাস যেন জড়িয়ে আছে এ নগরীর প্রতিটি ইটে। পথের দু’ধারে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন আর কাঠামোগুলো যেন হারানো জৌলুসের কথা জানান দেয় সবসময়। তবে আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিলো গতকাল সোমবার।
প্রায় ৪৫০ বছর আগে এ নগরী কতটা সমৃদ্ধ ছিল, তা বারবার ভাবতে বাধ্য করে রাস্তার দু’পাশের দু’তল-ত্রিতল ভবনগুলো। পানাম নগরের পথে হাঁটতে হাঁটতে মনে হতেই পারে, ঈশা খাঁর আমলে চলে এসেছি। কেমন যেন একটা রহস্য জড়িয়ে আছে জায়গাটিতে। প্রতিটি ধ্বংসস্তুপে যেন জড়িয়ে আছে একেকটা কাহিনি। ধ্বংসস্তুপ হলেও এর আকর্ষণের নেই কমতি। ভবনগুলোর নির্মাণশৈলী দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।
বর্তমানে দর্শনার্থীরা যে পানাম নগর দেখতে যান, সেখানে একটি মাত্রই পাকা রাস্তা। ৬০০ মিটার দীর্ঘ আর ৫ মিটার প্রস্থ এ রাস্তার দু’পাশে রয়েছে সব মিলিয়ে ৫২টি ভবন। ভবনগুলোতে স্থানীয় নিমার্ণ শিল্পের ছোঁয়া থাকলেও মূলত নিমির্ত হয়েছে ইউরোপীয় ও মোঘল স্থাপত্য রীতির মিশ্রণে। একতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত ভবন রয়েছে এখানে। ভবনের দেয়ালগুলো বেশ প্রশস্ত।
দেয়ালগুলো বিভিন্ন আকৃতির ইট আর সুরকি দিয়ে তৈরি। কিছু কিছু ভবনের দেয়ালের অলংকরণ দেখার মতো। নানা ধরনের নকশা, রঙিন কাচ, পাথর, কড়ি, চিনামাটি, টেরাকোটা ব্যবহার করা হয়েছে অলংকরণের জন্য। অধিকাংশ ভবনের মেঝে ধ্বংস হয়ে গেলেও কয়েকটি টিকে আছে, বিশেষ করে যে ভবনগুলোতে আনসারদের অবস্থান। মেঝেগুলোর বেশিরভাগই লাল-সাদা-কালো মোজাইক করা এবং কয়েকটিতে দেখা যায় সাদা-কালো মার্বেল।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Cairo, Alexandria & Sharm El Sheikh 6D/5N
Kandy- Negombo & Colombo 5D/4N
Kathmandu-Pokhara 5D/4N
ইতিহাসবিদ জেমস টেলরের মতে, আড়ংয়ের তাঁতখানা সোনারগাঁর পানাম নামক স্থানে ছিল এবং মসলিন শিল্প কেনাবেচার এক প্রসিদ্ধ বাজার ছিলো পানাম নগর।
প্রসঙ্গত, দি আর্কিটেক্টস রিজিওনাল কাউন্সিল এশিয়া (আর্কএশিয়া) সদস্য দেশগুলোর স্থপতিদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সভাপতিদের সমন্বয়ে গঠিত। সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর আঞ্চলিক কার্যক্রম ও সম্পর্ক প্রসারে কাজ করে থাকে।
এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৭ সালে নয়াদিল্লিতে। এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিটা সোহ। বর্তমানে ২১টি সদস্য দেশগুলো হলো- ভুটান, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়শিয়া, ব্রুনেই, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ম্যাকাউ, চীন, হংকং, জাপান, কোরিয়া ও মঙ্গোলিয়া।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
৫৩০ বার পড়া হয়েছে