বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যাওয়ার পথে যানবাহনকে আর ফেরিতে চড়তে হবে না। আজ রোববার পটুয়াখালীর লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে সেতুটির উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে যেতে একসময় ১০টি জায়গায় নদী পার হতে হতো ফেরিতে। বরিশাল থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ছিল ছয়টি ফেরি পারাপারের পথ। আর ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে বরিশাল পর্যন্ত ছিল চারটি ফেরি পারাপারের পথ।

সব জায়গায় সেতু হওয়ার পর বাকি ছিল লেবুখালী ও পদ্মা। লেবুখালীতে আজ সেতু উদ্বোধন হচ্ছে। পদ্মা সেতুর কাজ শেষের পর্যায়ে। আগামী জুনের মধ্যে সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার।

পরিবহন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। এখন ফেরিঘাটে জট না থাকলে ১০ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। তবে জট থাকেই। কখনো কখনো ১৫ ঘণ্টায়ও পৌঁছানো যায় না। পায়রা নদী পার হতে যানবাহনকে এক থেকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংগঠন পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও পটুয়াখালী সদর পৌরসভার মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বরিশাল থেকে পটুয়াখালীকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল পায়রা নদী। সেই পায়রা নদীর ওপর সেতু হয়েছে। এখন পদ্মা সেতু হলেই নির্বিঘ্নে ঢাকা থেকে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা আসা যাবে। তিনি বলেন, এখন পায়রা বন্দরের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।

কক্সবাজারের পর দেশের বড় সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা। শুধু পর্যটন সম্ভাবনা নয়, সেখানে শিল্পায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। পায়রায় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র হয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শেরেবাংলা ত্রিমাত্রিক নৌঘাঁটির কাজ চলছে। কুয়াকাটায় পর্যটন খাতে নতুন নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে। সবার আশা, আগামী দিনগুলোতে কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা অনেক বাড়বে।

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ প্রথম আলোকে বলেন, সড়কপথে ভোগান্তির কারণে দূরের জেলা থেকে মানুষ এত দিন কুয়াকাটা যেতে চাইতেন না। এবার তাঁদের বিড়ম্বনা কমবে। কুয়াকাটায় পর্যটক বাড়বে।

ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এই পায়রা সেতু। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর শাহ আমানত সেতুর আদলে নান্দনিক নকশায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। চার লেনের এই সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার, প্রস্থ ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার। জলতল থেকে সেতুটি ১৮ দশমিক ৩০ মিটার উঁচু।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Cairo, Alexandria & Sharm El Sheikh 6D/5N

মূল্য: 57,900 Taka

Day Long Package

মূল্য: ৩,০০০ টাকা

Email Marketing

মূল্য: ৫,০০০ টাকা

সেতুর উভয় পারে সাত কিলোমিটারজুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে সংযোগ সড়ক। নদীর মাঝখানে মাত্র একটি খুঁটি বা পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ কারণে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে না। এ ছাড়া এই সেতুতে ‘ব্রিজ হেলথ মনিটর (সেতুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণব্যবস্থা)’ স্থাপন করা হয়েছে। এতে বজ্রপাত, ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচলে সেতুর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হলে আগেভাগেই সংকেত পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সরকার ২০১২ সালের মে মাসে পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শুরুতে সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৪১৩ কোটি টাকা। পরে নকশা পরিবর্তন করে ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ১৭০ কোটি টাকা। অবশ্য সেতুটি নির্মাণে খরচ হয়েছে মোট ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা।

নির্মাণে অর্থায়ন করেছে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট। নির্মাণকাজ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন।

পায়রা সেতু প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।

পায়রা সেতু এলাকায় গত শুক্রবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, দৃষ্টিনন্দন এই সেতু দেখতে অনেকেই ভিড় করেছেন। সন্ধ্যায় নানা রঙের ঝলমল আলোয় আলোকিত করা হয় সেতুটি। এলাকার মানুষের মধ্যেও উৎসবের আমেজ। তাঁরা একে দেখছেন স্বপ্নপূরণ হিসেবে।

পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নপূরণ হবে।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



২১৮ বার পড়া হয়েছে