বর্ষায় প্রকৃতি সেজে ওঠে নানা রঙে। ফুল, ফল গাছ-পালা সবই নিজের রং বদলে আরও সজীব হয়ে ওঠে। এ সময় প্রকৃতি দর্শনে সবারই চোখ জুড়িয়ে যায়। এ সময় বাংলার গ্রামগুলো যেন হয়ে ওঠে একেকটি অপূর্ব পর্যটন কেন্দ্র।
প্রকৃতি দর্শনের জন্য এ সময় ঘুরে আসতে পারেন মুন্সিগঞ্জে। রাজধানীবাসীর জন্য অল্প সময়ে যাওয়ার সেরা গন্তব্য হলো মুন্সিগঞ্জ। ভেজা মাটির গন্ধ ও বৃষ্টি উপভোগ করতে চাইলে একদিনের ট্যুরে ঘুরে আসতে পারেন মুন্সিগঞ্জের ৫টি দর্শনীয় স্থানে।
মুন্সিগঞ্জে আছে ইছামতী নদী। নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন সেখানে। নদীর সঙ্গেই নিমতলা বিল। হালকা স্রোতের নদী থেকেই দেখবেন বিলের জলে ফুটে আছে তারার মতো শাপলা। এ ছাড়াও আড়িয়াল বিল, ষোলআনী সৈকত সবই দেখার মতো স্থান। জেনে নিন একদিনের ট্যুরে মুন্সিগঞ্জের কোন কোন স্থানে যেতে পারবেন-
নাটেশ্বরের হারানো নগরী: মুন্সিগঞ্জের দর্শনীয় স্থানসমূহের মধ্যে নাটেশ্বর প্রত্নতাত্তিক খননকৃত বৌদ্ধ মন্দির ও স্তুপ অন্যতম। টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং টংগিবাড়ী ইউনিয়নের নাটেশ্বর গ্রামে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের প্রত্নতাত্তিক খননে আবিস্কৃত হয় মন্দির এবং স্তুপ স্থাপত্যের অংশবিশেষ।
সেখানে আবিষ্কৃত হয়েছে- অসাধারণ বৌদ্ধ মন্দির, তিনটি অষ্টোকোণাকৃতির স্তুপ, পিরামিড আকৃতির বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ স্তুপ, কেন্দ্রীয় মন্দির, হাজার বছর আগের রাস্তা, নালা প্রভৃতি।
মুন্সীগঞ্জের অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে জাহাঙ্গীরনগর ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রত্নখনন কাজ করেন।
বিক্রমপুর বৌদ্ধ বিহার, রঘুরামপুর: নাটেশ্বর ঘুরে রঘুরামপুরে অবস্থিত বিক্রমপুর বৌদ্ধ বিহার দেখতে যেতে পারেন। বিক্রমপুর বিহার হলো বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার, বিক্রমপুরের অন্তর্গত রঘুরামপুর গ্রামে অবস্থিত একটি প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার। এটি মহারাজ ধর্মপালের শাসনামলে নির্মিত ৩০টি উল্লেখযোগ্য বিহারের মধ্যে অন্যতম। ধর্মপাল ছিলেন পাল সম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট।
ঐতিহাসিকভাবে এই মঠটি, অতীশ দীপঙ্করের সঙ্গে সম্পর্কিত। যিনি তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের ইতিহাসে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এই অঞ্চলটি অতীতে বৌদ্ধ ধর্ম শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু এবং চীন, তিব্বত, নেপাল ও থাইল্যান্ডের মত দূরবর্তী অঞ্চল থেকেও প্রায় ৮ হাজার অধ্যয়নকারী ও অধ্যাপক এখানে অধ্যাপনা করতে আসতেন।
অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন কর্তৃক চালানো দীর্ঘ ৪ বছরব্যাপী এক প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের পর ২০১৩ সালের ২৩শে মার্চ তারিখে, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ যৌথভাবে এই নিদর্শনটি আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়।
মুক্তারপুর সেতু: রঘুরামপুরের বৌদ্ধ বিহার পরে যেতে পারেন মুক্তারপুর সেতুতে। অল্প সময়ের মধ্যে এটি ঘুরে দেখা যায়। ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু মুন্সিগঞ্জ জেলার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। এটি ৬ষ্ঠ মুক্তারপুর সেতু নামেও পরিচিত।
মুন্সিগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে মুক্তারপুর নামক স্থানে ধলেশ্বরী নদীর উপর দিয়ে নির্মিত এ ব্রীজটি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এবং মুন্সীগঞ্জ এর যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ন মাইলফলক।
ইদ্রাকপুর কেল্লা: মুন্সিগঞ্জের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এটিও অন্যতম। মুন্সিগঞ্জ শহরে অবস্থিত একটি মুঘল স্থাপত্য। বাংলার সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রীস্টাব্দে বর্তমানে মুন্সিগঞ্জ জেলা সদরে ইদ্রাকপুর নামক স্থানে এই দুর্গটি নির্মাণ করেন।
দুর্গটি নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ ও সোনাকান্দা দুর্গের চেয়ে আয়তনে কিছুটা ছোট। এই দুর্গটি তৎকালীন মগ জলদস্যু ও পর্তুগিজ আক্রমণের হাত থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ সমগ্র এলাকাকে রক্ষা করার জন্য নির্মিত হয়।
ফিচার বিজ্ঞাপন
US Visa (Spouse)
নির্ভেজাল ও নিস্কন্টক প্লটে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা
শ্রীলংকা ভিসা (চাকুরীজীবী)
সুরঙ্গপথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে এই দুর্গের যোগাযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। সুউচ্চ প্রাচীরবিশিষ্ট এই দুর্গের প্রত্যেক কোনায় রয়েছে একটি বৃত্তাকার বেষ্টনী।
দুর্গের মূল প্রাচীরের পূর্ব দেয়ালের মাঝামাঝি অংশে একটি গোলাকার উঁচু মঞ্চ আছে। এই মঞ্চকে ঘিরে আর একটি অতিরিক্ত প্রাচীর মূল দেয়ালের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। দুর্গের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সূদৃঢ় করার জন্য এটি নির্মিত হয়েছিল।
এই কেল্লার ৩ কিলোমিটারের মধ্যেই আছে ইছামতী, ধলেশ্বরী, মেঘনা এবং শীতলক্ষ্যা নদী। মুঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য কীর্তি হিসেবে ইদ্রাকপুর দুর্গটি ১৯০৯ সালে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয়।
অতীশ দীপঙ্করের বাস্তুভিটা: অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলেন একজন প্রখ্যাত পণ্ডিত। যিনি পাল সাম্রাজ্যের আমলে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধধর্মপ্রচারক ছিলেন। তিনি ৯৮২ খ্রিস্টাব্দে বিক্রমপুর পরগনার বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত।
তার জন্মস্থানের বাস্তুভিটাকে এখনো স্থানীয় জনগণ ‘পণ্ডিতের ভিটা’ বলে অভিহিত করে। মুন্সিগঞ্জে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান আছে। তবে একদিনের ভ্রমণে এই ৫ স্থানই ঘুরতে পারবেন। আরও বেশি স্পট ঘুরতে হলে, হাতে সময় নিয়ে সেখানে থাকতে হবে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার গুলিস্থান থেকে বাসে করে সরাসরি মুন্সীগঞ্জ সদরে যেতে হবে। এরপর অটো নিয়ে সবগুলো জায়গা ঘুরে দেখা যাবে। মুন্সীগঞ্জ সদরেই আছে ইন্দ্রাকপুর কেল্লা, তাই এটি আগে দেখে নেওয়া ভালো।
থাকবেন কোথায়?
ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জ গিয়ে একদিনেই ঘুরে আসা যায়। তবুও প্রয়োজনে রাত কাটাতে হলে ৩০০-৬০০ টাকার মধ্যে ঘর পেয়ে যাবেন বিভিন্ন হোটেলে। চাইলে পদ্মা রিসোর্টেও গ্রামীণ পরিবেশে রাত কাটাতে পারেন।
Source: Jagonews24
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
১২৩০ বর্গফুটের দক্ষিণমুখি ফ্ল্যাট মাত্র ৩৭ লক্ষ টাকায়!১২৩০ বর্গফুটের দক্ষিণমুখি ফ্ল্যাট মা...
২৫১ বার পড়া হয়েছে




