করোনা এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। ভ্রমন প্রিয় বাংলাদেশিরা আর ঘরে থাকতে চায় না। মহামারির পর সারা বিশ্বের অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মতো আমাদের দেশের নাগরিকদেরও ভ্রমণে বেশ কিছু বিধিনিষেধ যুক্ত হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশই এখনো বাংলাদেশীদের জন্য দরজা খুলে দেয় নেই। অনেক দেশে গিয়ে আবার থাকতে হবে কোয়ারেন্টিনে। তাই বিদেশে ঘুরতে যাওয়ার আগে ভাল করে দেখে নিন সেখানে করোনার নিয়মের কড়াকড়ি ও সংক্রমণের হার কেমন।

বর্তমানে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে অনুমতি দিলেও মানুষকে প্রচুর বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। কারণ আরটিপিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু দেশে এমনও রয়েছে যারা টিকার দু’টো ডোজ নিয়ে নেওয়া ব্যক্তিকেও আরটিপিসিআর পরীক্ষা করিয়ে আসতে বলছে।

শেয়ারট্রিপ ট্রাভেল এজেন্সীর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাশেফ রহমানের কাছে বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য বিদেশে ভ্রমণের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল-

বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে কোন কোন দেশে ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে?

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে নেপাল, মিশর, তুর্কি, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কিছু দেশ ভ্রমনকারীদের জন্য খোলা আছে। এ ছাড়াও, সময়ের সঙ্গে -সঙ্গে বিভিন্ন দেশ তাদের সীমানা খুলতে শুরু করেছে।

নেপালে ভ্রমনের ক্ষেত্রে টিকা দেওয়া ভ্রমণকারীদের জন্য কোনো বাধা নেই। সেক্ষেত্রে তারা অন-এরাইভাল ভিসার জন্য প্রযোজ্য। যদি কোনো ভ্রমণকারী টিকা দেওয়া না হয় সেক্ষেত্রে তাকে দূতাবাস থেকে ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে নেপালে ১০ দিনের কোয়ারেন্টিন আবশ্যক।

মালদ্বীপ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিনের কোনো নির্দেশনা নেই, তবে সম্পুর্ণ ভাবে টিকা দেওয়া না থাকলে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে ফেরত আসার পরে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা রয়েছে।

শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে, সম্পূর্ণ ভাবে টিকা দেওয়া না থাকলে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। বিদেশী পাসপোর্টধারী পর্যটকগন (দ্বৈত নাগরিক /বৈধ আবাসিক ভিসা/ পর্যটক ভিসা) যদি শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ করতে ইচ্ছুক হন, সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা পর্যটন কর্তৃপক্ষ থেকে অনলাইনে আবেদন করে ভ্রমণের অনুমোদন নিতে হবে। শ্রীলঙ্কা ভ্রমণের পূর্বে বাংলাদেশ থেকে পিসিআর টেস্ট করতে হচ্ছে, শ্রীলঙ্কায় পৌঁছনোর পরে আবার পিসিআর টেস্ট করা লাগছে এবং শ্রীলঙ্কা থেকে মালদ্বীপ ভ্রমণের পূর্বে পুনরায় পিসিআর টেস্ট করার নির্দেশনা রয়েছে।

মালদ্বীপ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এ ধরনের নির্দেশনা নেই।

তুর্কি ভ্রমণের কমপক্ষে ১৪ দিন পূর্বে ভ্রমণকারীর ২ ডোজ টিকা পূর্ণ করা থাকতে হবে। যার ফলস্বরূপ, কোনো কোয়ারেন্টিনের প্রয়োজন হবে না। পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট সম্বলিত টিকা না দেওয়া ভ্রমণকারীর ক্ষেত্রে ১০ দিন কোয়ারান্টিনে থাকার নির্দেশনা রয়েছে। ১০ম দিনে পুনরায় পিসিআর টেস্ট করে ফলাফল অনুযায়ী তাদের রিলিজ দেওয়া হবে।

এই সময়ে বাংলাদেশি পর্যটকদের দেশের বাইরে বেড়াতে যাওয়ার হার কেমন?

করোনার কারনে দীর্ঘ সময় ধরে বেশিরভাগ দেশ তাদের সীমানা পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে রেখেছিল। বর্তমানে, করোনা ভাইরাসের নিম্ন সংক্রমন হার সেই সাথে ভ্রমণ বিধিনিষেধ ও ভ্রমণের শিথিলতার জন্য অনেক দেশ পর্যটকদের তাদের দেশে যেতে দিচ্ছে। তাই, আগের তুলনায় এখন বাংলাদেশি পর্যটকদের দেশের বাইরে বেড়াতে যাওয়ার বেড়েছে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Paradise island, Maldives, 4D/3N

মূল্য: ৯১,৯০০ টাকা জনপ্রতি

পর্যটকদের জন্য আইসোলেশনের প্রক্রিয়াটি কি? দেশ ভেদে কি এর পার্থক্য আছে?

ভ্রমণের পূর্বে নির্দিষ্ট দেশের পর্যটন নির্দেশিকা এবং নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।সাধারনত, দেশগুলোতে পৌঁছানোর পর পর্যটকদের পিসিআর টেস্ট করতে হয় সেই সাথে ১০-১৪ দিনের হোটেল কোয়ারেন্টিন করতে হয়। কোয়ারেন্টিন পিরিয়ড সম্পন্ন করার পর ভ্রমনকারীদের পুনরায় পিসিআর টেস্ট সমপন্ন করতে হয়।তবে, দেশ ভেদে আইসোলেশন প্রক্রিয়া ভিন্ন হয়ে থাকে।

মহামারিতে ভ্রমণে বের হলে কোন বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে?

বর্তমানে বিদেশ ভ্রমনের ক্ষেত্রে পিসিআর টেস্ট অত্যন্ত জরুরী একটি কার্যক্রম। সাধারণত, ভ্রমণের ৭২ ঘণ্টা পূর্বে পরীক্ষাটি সমপন্ন করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে, কোনো কোনো এয়ারলাইন্স ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে পিসিআর টেস্ট রিপোর্ট প্রদর্শনের জন্য নির্দেশনা জারি করেছে। এছাড়া, ভ্রমনের সময় যে কোনো জনসমাগমে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

ভ্রমণের আগে করোনা টেস্ট করতে হয় কি? কত দিন আগে টেস্ট করতে হয়?

তুরস্কে পৌঁছানোর ৭২ ঘণ্টা আগে ভ্রমণকারীদের অবশ্যই নেগেটিভ পিসিআর টেস্ট সম্পন্ন করতে হবে। তবে বাংলাদেশ থেকে তুরস্কে প্রবেশ করার সময় যাত্রীরা বাংলাদেশের সরকারী কর্তৃপক্ষের দ্বারা জারি করা একটি ডকুমেন্ট জমা দিলে তাদের নেগেটিভ পিসিআর টেস্টের রিপোর্ট জমা দিতে হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারী কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছেন যে, তুরস্কে প্রবেশের অন্তত ১৪ দিন আগে যারা টিকা নিয়েছেন এবং/ অথবা গত ৬ মাসের মধ্যে কোভিডে রোগাক্রান্ত হয়ে সেই সাথে আরোগ্য লাভ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা প্রযোজ্য।

কিছু দেশে ভ্রমনের সময়ে নেগেটিভ পিসি আর টেস্ট রিপোর্ট প্রদর্শনের প্রয়োজন হয়। এই পিসিআর টেস্ট সংশ্লিষ্ট দেশ-কর্তৃক অনুমোদিত হাসপাতাল কিংবা নির্ধারিত কোভিড-১৯ টেস্ট সেন্টারে করা যেতে পারে। কিছু কিছু দেশের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরেও এটি করা সম্ভব।

বিমানবন্দরে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্নের জন্য যাত্রীদের ফ্লাইট সময়ের কমপক্ষে ৫ ঘন্টা আগে সেখানে উপস্থিত থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।কারন, কোভিড সংক্রমণ রোধে জারি করা বিভিন্ন নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য অন্যান্য স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বিমানবন্দরে সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে প্রায় ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় নেয়।

দুবাই ভ্রমণের ক্ষেত্রে, ভ্রমণকারী সরাসরি এই মুহুর্তে বাংলাদেশ থেকে যেতে পারছেন না, কেননা ভ্রমণের পূর্বে আরটি-পিসি আর টেস্ট করতে হচ্ছে, যা এই মূহুর্তে বাংলাদেশে সম্ভব নয়।যার বিকল্প হিসেবে, বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ করে সেখানে ৩ দিন থেকে, অতঃপর আরটি-পিসিআর টেস্টটি সম্পন্ন করে দুবাই ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১৪৮ বার পড়া হয়েছে