বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর নিষেধাজ্ঞার সপ্তম দিন ছিল গতকাল মঙ্গলবার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই নিষেধাজ্ঞার সময় যত গড়াচ্ছে, মানুষের ঘরের বাইরে বের হওয়ার প্রবণতাও তত বাড়ছে। জরুরি প্রয়োজন না থাকলেও কেউ কেউ নানা অজুহাতে বের হচ্ছে। মহানগরীতে কোথাও কোথাও সড়কের চিত্র দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে দেশে চলাচলে এমন কঠোর বিধিনিষেধ চলছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহিদুল আলম বলেন, ‘আমরা অনেককে পাচ্ছি, যারা অযথাই বাইরে বের হচ্ছেন। এমন অনেককে পেয়েছি, যাদের মুভমেন্ট পাশ নেই এবং তারা উপযুক্ত কোনো কারণও দেখাতে পারেননি। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ইতিমধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। যেহেতু বিধিনিষেধের সময়সীমা আরো বাড়ানো হয়েছে, আমাদের চেকপোস্টের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এক্ষেত্রে কোনো শিথিলতার সুযোগ নেই।’

সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যরা প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস থামিয়ে ভেতরে থাকা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। সন্তোষজনক কারণ বলতে না পারলে সেই সব যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

কাফরুল থানার প্যাট্রল ইন্সপেক্টর মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, যারা প্রাইভেট কার বা মোটরসাইকেলে যাতায়াত করছেন, তাদের কাছে মুভমেন্ট পাশ আছে কি না, নিশ্চিত হয়ে যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে। আর যারা রিকশায় যাতায়াত করছেন, তাদের মধ্যে যারা রোগী বা ভ্যাকসিন নিতে যাচ্ছেন, তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।

দিশেহারা পরিবহন শ্রমিকেরা: কঠোর বিধিনিষেধের কারণে মানবেতর দিন পার করছেন গণপরিবহন শ্রমিকেরা। ভুক্তভোগী শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, জমানো টাকা যা ছিল, তা দিয়ে দিন পার করছেন। আগামী দিনগুলো কীভাবে পার করবেন, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না। প্রজাপতি পরিবহনের বাসচালক মুক্তার হোসেন বলেন, ‘লকডাউনে অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করেছি। আমরা বাসচালকেরা দিন আনি দিন খাই। আমাদের জমানো টাকা থাকে না। এজন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। টেম্পোচালক সোহাগ বলেন, বিধিনিষেধের প্রথম দুই দিন টেম্পো চলেছিল। কিন্তু এখন আর চালাতে পারছি না, সকালবেলা পুলিশ বাধা দেয়। তাই আমরা এখন আর টেম্পো চালাই না। অথচ আমাদের রুটিরুজি টেম্পো চালিয়ে জোগাড় করতে হয়।’

ফেরিঘাটে ছোট গাড়ি, যাত্রীর চাপ: বিআইডব্লিউটিসির আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতেও সকাল হলেই পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ছোট গাড়ির চাপ পড়ে। এখন প্রশ্ন, গাড়িগুলো কীভাবে মহাসড়ক পার হয়ে ঘাটে আসছে? সকাল থেকে তিন-চারটি অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ি নৌপথ পারের অপেক্ষায় ছিল, কিন্তু নৌপথ পাড়ি দিতে আসা যাত্রীদের চাপে পার করতে পারিনি ঐ জরুরি সেবার যানবাহনগুলো। কারণ, পারের জন্য গাড়িগুলো ফেরিতে ওঠাতে গেলেই মানুষজন হুড়মুড় করে উঠে পড়ে। এ অবস্থায় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে জরুরি সেবার গাড়িগুলো ফেরিতে উঠিয়ে পার করা হচ্ছে।’

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১৭৮ বার পড়া হয়েছে