ভোলাগঞ্জ সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানিগঞ্জে অবস্থিত। ভোলাগঞ্জের আরেকপাশে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উঁচু উঁচু পাহাড়। সেই পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানির প্রবাহ ধলাই নদের উৎস। সবুজ পাহাড়, মেঘের হাতছানি আর বর্ষার পাহাড়ি ঢলের সাথে নেমে আসা সাদা পাথর ধলাই নদের বুকে মিলে মিশে সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। এই নদের উৎস মুখের পাথরের জায়গাটুকু ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট বা “সাদা পাথর” নামে পরিচিত। অনেকের মতে সাদা পাথর বিছনাকান্দির চেয়েও সুন্দর। সাদা পাথর এলাকা ছাড়াও কাছেই রয়েছে উৎমাছড়া, তুরুংছড়ার মত সুন্দর স্থান। এইসব কিছু মিলে ভোলাগঞ্জ এখন আকর্ষনীয় এক পর্যটন স্থান।
উপযুক্ত সময়
ভোলাগঞ্জ যাবার সবচেয়ে ভাল সময় হচ্ছে বর্ষাকাল ও তার পরবর্তী কিছু মাস অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই সময় যাওয়ার জন্যে সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। অন্যসময় গেলে সেখানে পাথরের সৌন্দর্য দেখতে পেলেও নদীতে বা ছড়ায় পানির পরিমাণ কম থাকবে। আর শীতকালে সাদা পাথর এলাকায় নৌকা চলাচল করার মত পানি থাকেনা তখন পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখতে হবে।
কিভাবে যাবেন
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। দেশের যেখান থেকেই ভোলাগঞ্জ যেতে চান আপনাকে প্রথমে সিলেট শহরে আসতে হবে। সিলেট থেকে সিএনজি, লেগুনা বা প্রাইভেট কারে করে যাওয়া যায় ভোলাগঞ্জ। বর্তমানে অল্প একটু জায়গা ছাড়া রাস্তার অবস্থা অনেক ভালো।
ঢাকা থেকে বাসে সিলেট : ফকিরাপুল, সায়দাবাদ ও মহাখালী বাস স্টেশন থেকে গ্রীন লাইন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলি ও এনা পরিবহনের এসি বাস যাতায়াত করে, এগুলোর ভাড়া সাধারণত ৮০০ থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে। এছাড়াও ঢাকা থেকে সিলেট যেতে শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, এনা পরিবহনের নন এসি বাস জনপ্রতি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা ভাড়ায় পাবেন।
ঢাকা থেকে ট্রেনে সিলেট : ঢাকা থেকে ট্রেনে করে সিলেট যেতে কমলাপুর কিংবা বিমান বন্দর রেলওয়ে স্টেশান হতে উপবন, জয়ন্তিকা, পারাবত অথবা কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনকে বেছে নিতে পারেন আপনার ভ্রমণ সঙ্গী হিসাবে।
চট্টগ্রাম থেকে সিলেট : চট্টগ্রাম থেকে বাস ও ট্রেনে সিলেট যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে সিলেট যেতে পাহাড়িকা এবং উদয়ন এক্সপ্রেস নামের দুটি ট্রেন সপ্তাহে ৬ দিন চলাচল করে।
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ
সিলেটের আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ যাবার সিএনজি পাওয়া যায়। লোকাল সিএনজি তে করে জনপ্রতি ভাড়া ১৩০-১৫০ টাকা ভাড়ায় ভোলাগঞ্জ যেতে পারবেন। চাইলে রিজার্ভও যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে যাওয়া আসা মিলে ১২০০-১৩০০ টাকা। এক সিএনজিতে ৫ জন বসা যায়। আম্বরখানা থেকে ভোলাগঞ্জ যেতে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মত সময় লাগবে। ভোলাগঞ্জ বাজারে নেমে দশ নম্বর নৌকা ঘাটে যেতে হবে। নৌকা ঘাট থেকে যাওয়া ও আসা সহ ৮০০ টাকা নৌকা ভাড়ায় ঘুরে আসতে পারবেন সাদা পাথর। প্রতি নৌকায় সর্বোচ্চ ১০ জন যেতে পারবেন। আপনি যদি একা বা কম মানুষ নিয়ে ঘুরতে যান তাহলে কম খরচে নৌকা ভাড়া করতে চাইলে অনেক নৌকা আছে যারা ১ জন ২ জন করে ৮-১০ জন মিলিয়ে নিয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ভাড়া ভাগ করে দিলে নৌকা ভাড়ারে খরচ কমে যাবে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Maldives (Centara Ras Fushi Resort & Spa) 3D/2N
USA Visa (for Businessman)
Moscow & St.Petersburg 6D/5N
চাইলে সরাসরি মাইক্রো বা কার রিজার্ভ করেও যেতে পারেন ভোলাগঞ্জ দশ নম্বর। এক্ষেত্রে খরচ হবে ২৫০০-৩০০০ টাকা। এমনকি বর্ষাকালে নদীপথে ছাতক হয়ে নৌকাযোগেও যাতায়াত করা যায় ভোলাগঞ্জে।
উৎমাছড়া ও তুরংছড়া
ভোলাগঞ্জের কাছেই আরও দুইটি পর্যটন স্থান উৎমাছড়া ও তুরংছড়া। অনেকেই সাদা পাথর ভ্রমণ করে উৎমাছড়া ও তুরংছড়া ঘুরতে যান। ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর ঘুরে উৎমাছড়ায় যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে দয়ারবাজার। আপনি যেই নৌকায় ভোলাগঞ্জ যাবেন সেই নৌকার মাঝিকে বললেই তিনি দয়ারবাজার ঘাটে নামিয়ে দিবে। সেক্ষেত্রে অল্প কিছু টাকা বেশি দিতে হতে পারে। অথবা আগেই নৌকা ঠিক করার সময় বলে দিবেন।
দয়ার বাজার গিয়ে সেখান থেকে সিএনজি/বাইক নিয়ে জনপ্রতি ৩০-৫০ টাকা ভাড়ায় চলে যান চরার বাজার। চরার বাজার নেমে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই উৎমাছড়ার পথ দেখিয়ে দিবে। সেখান থেকে ১০-১৫ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন উৎমাছড়া পয়েন্টে। আর চরারবাজার থেকে তুরংছড়া হেঁটে যেতে সময় লাগে ৩০-৪০ মিনিট। চাইলে চরারবাজার থেকে বাইক নিয়েও যেতে পারবেন।
সিলেটে ফিরে আসার সময় আপনার অবস্থান অনুযায়ী চরারবাজার/দয়ারবাজার/ভোলাগঞ্জ থেকে সরাসরি সিএনজি নিয়ে চলে আসতে পারেন সিলেটের আম্বরখানায়।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
৬৩৯ বার পড়া হয়েছে