মাথা উঁচু করে যে মেঘ আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি! তাকে যদি হাত দিয়ে ছুঁই, তার পরশে নিজেকে আলিঙ্গন করে আসতে পারি, তবে কেমন অনুভব হয়? বলছি মেঘের রাজ্য খ্যাত রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক ভ্যালির কথা। গত ২৩ ডিসেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সদস্যরা ভ্রমণ করার জন্য সাজেক ভ্যালিকে বেছে নেই।

সেদিন যে যার মতো প্রস্তুতি নিয়ে ঠিক ১২টায় প্রেস কর্নারে জড়ো হলাম। প্রত্যেকের নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিলাম। গাড়ি ক্যাম্পাস ক্রস করল ঠিক ২টা ৪৫ মিনিটে। আমাদের ভ্রমণে প্রতিবারের মতো এবারও ড্রাইভার হিসেবে আছেন ক্যাম্পাসের পাকা ড্রাইভার হাসমত ভাই।

গাড়ি ছুটে চলছে অবিরাম গতিতে। দুঃখের বিষয়, এবার কোনো সাউন্ড বক্সের ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু আমার মতো গান প্রেমিকরা আর স্থির থাকতে পারল না। শুরু হলো গানের আসর। সন্ধ্যা নেমে এলো। শীতের প্রকোপ একটু বেশি হওয়ায় আমরা গরম পোশাক পরে জবুথবু হয়ে অবস্থান করছি গাড়িতে।

গাড়ি রাজবাড়ী এসে ব্যাপক জ্যামে পড়ল। প্রায় সোয়া একঘণ্টা পর জ্যাম কাটিয়ে অবশেষে ফেরিতে উঠলাম। চারিদিকে ঘন কুয়াশা, অথৈ জলরাশির মধ্যদিয়ে ছুটে চলছে ফেরি। নদীর সাথে মানুষের যে মিতালি, সেটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অবলোকন করছিলাম।

ফেরি পার হওয়া মাত্রই আবার হৈ-হুল্লোড়ে মেতে উঠল সবাই। শুরু হলো জারি গান, লালনগীতি, ফোক আর জেমস প্রেমিকদের পছন্দের সব গান। দেখতে দেখতে রাত ১টা বেজে গেল। সবাই ক্লান্ত শরীরে এবার ঘুমের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত হয়ে গেল। চোখ মেলে দেখি খাগড়াছড়ির আঁকাবাঁকা, উঁচু-নিচু পাহাড়ের মধ্যদিয়ে গাড়ি ছুটে চলছে অবিরাম গতিতে।

পথিমধ্যে আমরা আলুটিলার দেখা পেলাম। যেখান থেকে পুরো খাগড়াছড়ি শহর দেখা যায়। শহর থেকে সকালের নাস্তা শেষ করে গাড়ি দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলল সম্মুখপানে। উদ্দেশ্য ঠিক ১০টায় দিঘীনালা হতে ছেড়ে যাওয়া চান্দের গাড়িতে (জিপ) ওঠা।

আমরা তিনটি গাড়ি ভাড়া করলাম। দিঘীনালা বাজার থেকে সাজেকে যেতে ৩ ঘণ্টা পথ পাড়ি দিতে হবে। আমরা গাড়ির ছাদে উঠে পড়লাম। চোখ যতদূর যায়, ততদূর দেখি শুধু পাহাড় আর পাহাড়। গাড়ি কখনো বিশাল উঁচুতে আবার কখনো নিচুতে ওঠা-নামা করে এগিয়ে চলছে গন্তব্যের পথে।

নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আমরা পৌঁছলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। এসময় দুটি রিসোর্ট ভাড়া করলাম রাত যাপনের জন্য। রুইলুইপাড়ার ঐতিহ্যবাহী বাঁশের খোলসে চা আর বাম্বু চিকেন খেলাম। দিনভর ঘোরাঘুরি আর আড্ডাবাজিতে মেতে রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম।

ভোর ৫টা ৫ মিনিট। বেজে উঠলো মোবাইল ফোনের অ্যালার্ম। সবাই দ্রুত উঠে তৈরি হয়ে নিলাম। উদ্দেশ্য কংলাক পাহাড়ে মেঘের বিচরণ দেখা। সকাল ৬টায় চান্দের গাড়িতে করে মেঘের সাথে সখ্যতা করতে যাবো। আগের দিন বলা হয়েছিল, কেউ গাড়ি মিস করলে তাকে রেখে যাওয়া হবে। রেডি হয়ে রুম থকে বেরিয়ে পড়লাম সবাই।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Kathmandu-Pokhara-Nagarkot-Bhoktopur 5D/4N

মূল্য: ১৮৯০০ টাকা

USA Visa (for Businessman)

মূল্য: 5,000 Taka

Kathmandu-Nagarkot 4D/3N

মূল্য: ১২,৯০০ টাকা

রাস্তায় গাড়ির সামনে সবার সমাগম। ড্রাইভার আসছে না। সবাই অস্থির, কখন যাবো মেঘের ভেলায় ভাসতে? এদিকে কেউ একজন লক্ষ্য করলো, রাস্তার ধার থেকে মেঘমালা দেখা যাচ্ছে। অনেকে আবার কোনোভাবেই বিশ্বাস করছে না এগুলো সাদা মেঘ। কেউ কেউ কুয়াশা বলে হাসাহাসি করছে। একেকজন একেক ধরনের যুক্তি দিচ্ছে পক্ষে-বিপক্ষে।

পাল্টাপাল্টি যুক্তি দিতে দিতেই ড্রাইভার এলো। তখন ৬টা ১৭ মিনিট। এদিকে কারো আর অপেক্ষা সইছে না। মেঘের সাথে মিতালি করতে গাড়িতে উঠে পড়লাম। চান্দের গাড়ি চলল কংলাক পাহাড়ের উদ্দেশে। কংলাকে যাওয়ার পথে মিজরাম সীমান্তের বড় বড় পাহাড়, আদিবাসীদের জীবনযাপন, চারদিকে মেঘের আনাগোনা দৃষ্টি কেড়ে নেয়।

গাড়ি এসে থামলো পাহাড়ের নিচে। বাকি পথ হেঁটে উঠতে হবে। গাড়ি থেকে নেমে পাহাড়ি পথ বেয়ে সবার হাঁটা শুরু হলো। কেউ আবার ভিডিও করছে পাহাড়ি রাস্তা। একপর্যায়ে উঠে পড়লাম কংলাক পাহাড়ের চূড়ায়। যেখান থেকে মেঘমালার ভেসে বেড়ানোর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। কংলাকের চূড়ায় ওঠার সাথে সাথেই দৃশ্য উপভোগ করার পাশাপাশি অনেকে সেলফি, ছবি তোলা, ভিডিও করায় মেতে উঠেছে।

সূর্য ওঠার সাথে সাথে যেন আরেক অপরূপ দৃশ্য হাজির। সূর্যের আলোয় মেঘমালা যেন নতুনভাবে সজ্জিত হয়ে উঠলো। তুলার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘ। পাহাড়ের গায়ে যেন আটকে যাচ্ছে। মেঘে ঢেকে যাচ্ছে পাহাড়। এভাবেই আমাদের সময় ফুরিয়ে এলো। যে যার মতো দৃশ্যগুলো মনের দৃশ্যপটে ধারণ করে চলে এলাম রেস্টুরেন্টে।

সকালের নাস্তা সেরে ব্যাগপত্র গুছিয়ে গাড়ির সামনে হাজির হলাম। গাড়ি ঠিক ১০টায় ছেড়ে যাবে! সবকিছু অল্প সময়ের মধ্যে দেখে শেষ করলেও মনের তৃপ্তিটা যেন অপূর্ণ থেকে গেল। এভাবেই শেষ হলো মেঘের রাজ্যে দু’দিনের বসবাস।

মাহবুব আলম রায়হান
লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত আয়োজন এখানে অপেক্ষা করছে

পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত ...



৩৫১ বার পড়া হয়েছে