সরকারি একটি সিদ্ধান্ত মোটরযান সেক্টরের বছরে অন্তত পাঁচশ’ কোটি টাকা জলাঞ্জলি থেকে রক্ষা পাবে। তেমন গুরুত্বপূর্ণ না হলেও থার্ড পার্টি ইনস্যুরেন্সের নামে দেশের অন্তত ৪০ লাখ গাড়ি ব্যবহারকারীকে প্রতি বছর এই টাকা বীমা কোম্পানির হাতে তুলে দিতে হতো। আর যাদের বীমার টাকা পরিশোধ থাকত না তারা রাস্তায় পুলিশ হয়রানির শিকার হতেন। তবে গতকাল সোমবার থেকে জারি হওয়া নতুন নিয়মে এখন থেকে আর কোনো যানবাহনে থার্ড পার্টি ইনস্যুরেন্সের বাধ্যবাধকতা থাকছে না। নতুন এই নিয়ম গতকাল থেকেই কার্যকর হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেশে ৪০ লাখের মতো বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে। প্রচলিত আইনে প্রতিটি গাড়ির বীমা বাধ্যতামূলক ছিল। দেশে মোটরযান সেক্টরে ফার্স্ট পার্টি এবং থার্ড পার্টি নামে দুই ধরনের বীমার প্রচলন রয়েছে। প্রচলিত নিয়মে নতুন গাড়ির ক্ষেত্রে ফার্স্ট পার্টি ইনস্যুরেন্স করা হয়। এতে বীমা প্রিমিয়ামও অনেক। গাড়ি ও যাত্রীদের বীমা কাভারেজও অনেক। ফার্স্ট পার্টি ইনস্যুরেন্স করা কোনো গাড়ি সংশ্লিষ্ট কাভারেজের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে বীমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির মূল্য এবং সিসির উপর প্রিমিয়াম নেয়া হয়। দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণও প্রদান করা হয়। তবে এই ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ক্ষেত্রে যে পরিমাণ দৌড়ঝাপ বা কাগজপত্র দিতে হয় তাতে বীমার ক্ষতিপূরণের একটি বড় অংশ নতুন করে ক্ষতির কবলে পড়ে। একেবারে নতুন গাড়িগুলোর ক্ষেত্রেই ফার্স্ট পার্টি ইনস্যুরেন্স কাভারেজ করা হয়। বিশেষ করে রেজিস্ট্রেশনের দু’চার বছর পর্যন্ত ফার্স্ট পার্টি কাভারেজ থাকে। ফার্র্স্ট পার্টি কাভারেজে বিভিন্ন ধরনের গাড়িকে বিভিন্ন অংকের প্রিমিয়াম প্রদান করতে হয়। প্রাইভেট গাড়ির ক্ষেত্রে একটি গাড়িকে এক বছরের প্রিমিয়াম বাবদ কমপক্ষে ৬৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রদান করতে হয়। গাড়ির সিসি, আসন, মূল্য, কাভারেজের ধরনের উপর এই প্রিমিয়াম নির্ভর করে। অথচ থার্ড পার্টি ইনস্যুরেন্স করা হলে গাড়ির প্রিমিয়াম ৫/৬ শ’ টাকা থেকে হাজার দুয়েকের মধ্যে নেমে আসে। একইভাবে মোটর সাইকেলের ক্ষেত্রে ফার্স্ট পার্টি এবং থার্ড পার্টি বীমার ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামের অংকে চার হাজার টাকারও বেশি ব্যবধান থাকে। ফার্র্স্ট পার্টি ইনস্যুরেন্সে বীমার ক্ষতিপূরণের কাভারেজ থাকলেও থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সে কোনো ধরনের কাভারেজ থাকে না। কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণও প্রদান করা হয় না। শুধুমাত্র ঘটনাস্থলে কেউ মারা গেলে ওই ব্যক্তির জন্য ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিধান রয়েছে।
দেশের ৪০ লাখেরও বেশি গাড়ি নিয়মিত বীমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বীমা করে থাকে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের পাশাপাশি মোট ৪৪টি জেনারেল ইন্সুরেন্স গাড়ির বীমা কাভারেজ দিয়ে থাকে। গাড়ির বীমা করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও কী ধরনের বীমা করা হবে তার কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না উল্লেখ করে একটি বেসরকারি বীমা কোম্পানির চট্টগ্রামের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, কী ধরনের বীমা করবেন গাড়ির মালিকই তা ঠিক করেন। তবে ব্যাংক ঋণে কেনা গাড়িগুলোর ফার্র্স্ট পার্টি ইন্সুরেন্স করানোর জন্য ব্যাংক থেকেই চাপ প্রয়োগ করা হয়।
বীমা কোম্পানির ওই কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে, মোটর সাইকেলের থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সে সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম ২৫৯ টাকা। অন্যদিকে ফার্র্স্ট পার্টি ইন্সুরেন্সে এই প্রিমিয়াম সর্বনিম্ন ৪ হাজার ৭৮২ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৯০২ টাকা। প্রাইভেট কারের ক্ষেত্রে থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সে সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম ৪১৪ টাকা ও সর্বোচ্চ ৭৫৯ টাকা। ফার্স্ট পার্টি ইন্সুরেন্সের প্রিমিয়াম সর্বনিম্ন ৬৪ হাজার ৭৮৩ টাকা ও সর্বোচ্চ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। বাসের ক্ষেত্রে থার্ড পার্টিতে সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম ১ হাজার ৯০৯ টাকা ও সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম ২ হাজার ২৭৭ টাকা। অন্যদিকে ফার্স্ট পার্টি ইন্সুরেন্সে সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম ৪ লাখ ৬৭ হাজার ২২৭ টাকা। ট্রাকের জন্য থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম ৭৮২ টাকা ও সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭৬১ টাকা। ফার্র্স্ট পার্টি ইন্সুরেন্সের সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম ৯৯ হাজার ৩৫৮ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সে কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ বা কাভারেজ না থাকলেও শুধুমাত্র আইনে থাকার কারণে লক্ষ লক্ষ গাড়ির মালিককে ইন্সুরেন্স করাতে হতো। এক্ষেত্রে বছরে অন্তত ৫শ’ কোটি টাকা গাড়ি মালিকদের পক্ষ থেকে ৪৪টি বীমা কোম্পানিকে প্রদান করা হতো। তবে এই টাকার কোনো সুফল কোনো গাড়ির মালিকই পেতেন না। গাড়ি আগুনে পুড়ে গেলে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এক টাকার ক্ষতিপূরণও বীমা থেকে পাওয়া যেতো না। অথচ বছর বছর এই টাকা দিয়ে বীমার কাগজটি নেয়া না হলে রাস্তায় রাস্তায় পুলিশের হয়রানি চরম আকার ধারণ করতো। বীমা করা না থাকলে মোটরযান আইনের ১৫৫ ধারায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। এই ৫ হাজার টাকা খড়গ থেকে বাঁচতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার অবৈধ লেনদেন হতো দেশে।
কিন্তু সরকারি একটি সিদ্ধান্ত এই বিপুল পরিমাণ অর্থ জলাঞ্জলি দেয়ার প্রচলিত অবস্থা থেকে দেশের সাধারণ গাড়ি ব্যবহারকারীদের রক্ষা করছে। গতকাল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। নয়া এই সিদ্ধান্তে গাড়ি মালিকই ইন্সুরেন্স করবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্সের জন্য কোনো ধরনের বাধ্য করা হবে না। কোনো গাড়ির থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স কাভারেজ না থাকলে পুলিশও মামলা করতে পারবে না।
ফিচার বিজ্ঞাপন
থাইল্যান্ড ভিসা (বেসরকারি চাকুরীজীবী)
সাজেক ভ্রমণ ৩ রাত ২ দিন
জাপান ভিসা প্রসেসিং (চাকুরীজীবী)
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত আয়োজন এখানে অপেক্ষা করছেপূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত ...
২৭৩ বার পড়া হয়েছে