নিদ্রাহীন রাত নিয়ে যতই কাব্য, গান আর রোমান্স থাকুক না কেন, বাস্তব ক্ষেত্রে এরপর কয়েকদিন ‘আঁখিপাতে’ ঘুম না থাকলে আতঙ্ক হয়, শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়তে হয়। নিজের ওপর আস্থাটাই হারিয়ে যায়। তখন যেকোনোভাবে একটু ঘুমই শুধু কাম্য হয়ে ওঠে। জীবনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় আমরা ঘুমাই। বয়স অনুযায়ী অবশ্য ঘুমের একটা স্বাভাবিক ছন্দ আছে। শিশুরা খুব বেশি ঘুমায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের এই সময়সীমা কমে যায়। বৃদ্ধরা স্বাভাবিকভাবেই কম ঘুমান। আসলে শারীরবৃত্তীয় প্রয়োজনের ওপরই নির্ভর করে ঘুমের এই মাপ। তবে খুম কম ঘুম বা খুব বেশি ঘুম কোনোটাই স্বাভাবিক নয়। চিকিৎসা শাস্ত্রের মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে ৪ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুম স্বাভাবিক এবং ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুম হলো আদর্শ। দেখা গেছে যারা ৯ ঘন্টা বা তারও বেশি ঘুমান, তাদের মধ্যে বিভিন্ন অসুখের প্রবণতা বেশি। সুতরাং বয়স অনুপাতে ঠিক সময় ঘুমই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।
ইনসমনিয়া আসলে কী?
ঘুম ও স্বপ্ন চিরকালই মনোবিজ্ঞানীদের কৌতুহলের বিষয়। বৈজ্ঞানিকদের মত ঘুমের মধ্যে দুই ধরনের দশা থাকে। একটিকে বলা হয় ‘আরইএম বা র্যাপিড আই মুভমেন্ট দশা’ আর একটি বলা হয় ‘এনআরইএম বা নন র্যাপিড আই মুভমেন্ট দশা’। এক ঘুমের মধ্যেই এই দুটি দশা ঘুরে ফিরে চলতে থাকে। আরইএম দশায় শরীরে গরম বেশি লাগে, পালস রেট ও রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং এই দশাতেই মানুষ স্বপ্ন দেখে। এটাকে বলা হয় পাতলা ঘুমের স্তর। এনআরইএম দশায় মানুষ গভীরভাবে ঘুমায়। ইনসমনিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে- ১. ইনিশিয়াল বা প্রাথমিক ইনসমনিয়া : যাদের ঘুম আসতে দেরি বা অসুবিধা হয়। ২. মিডল ইনসমনিয়া : যাদের ঘুম বার বার ভেঙে যায় এবং ৩. টারমিনাল ইনসমনিয়া : যাদের ঘুম তাড়াতাড়ি ভেঙে যায়। আর যাদের সব অসুবিধাই আছে, তাদের ক্ষেত্রে বলে গ্লোবাল ইনসমনিয়া।
চিকিৎসা : ইনসমনিয়া যে কারণে হয়েছে তার চিকিৎসাই প্রথমে করা হয়। তাছাড়া ইনসমনিয়ার জন্য আলাদা করে কিছু বিশেষ ওষুধ দেয়া হয়। কোনো কোনো রোগী অবশ্য শুধু ইনসমনিয়ার চিকিৎসাই করাতে চান, কিন্তু সেক্ষেত্রেও রোগীর কেস হিস্ট্রি নিয়ে বিচার-বিবেচনা করতে হয়। নিসমনিয়ার রোগীর চেহারায় একটা অবসাদ, ক্লান্তিভাব আসে। অনেক সময় রোগী নিজেই ঘুমের ওষুধ নিয়ে থাকেন। তার ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে। নিচের নিয়মগুলো মেনে চললে উপকার পেতে পারেন।
০ বিছানা শুধু ঘুমের জন্যই নির্দিষ্ট করে রাখুন। বিছানায় বসে টিভি দেখা, আড্ডা দেয়া, খাবার খাওয়া বন্ধ করুন।
০ খালি পেটে কখনো শুতে যাবেন না। তবে রাতে গুরুভোজ করবেন না। বেশি ভরা পেটে শুতে যাওয়া ঠিক নয়। আবার খেতেই সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়াটাও অনুচিত। খাওয়া ও শোয়ার মধ্যে সময়ের তফাত রাখুন।
০ শোয়ার আগে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন। দুধে থাকে ট্রিপটোফ্যান যা আপনাকে ঘুমাতে সাহায্য করবে।
০ নিয়মিত গোসল এবং শুতে যাওয়ার আগে আরামবোধ করলে ঘাড়, মুখ ও পা পানি দিয়ে মুছে নিতে পারেন।
০ ঘুমাতে যাওয়ার সময় সারাদিনের ক্লান্তি, বিপর্যয় বা উত্তেজনার কারণগুলো নিয়ে চিন্তা করবেন না।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Kolkata – Gangtok (Sikkim) 5D/4N
তুরস্ক ভিসা (বিজনেসম্যান)
Dubai City tour- Dhow cruise- Desert safari- Burj Khalifa 6D/5N
০ খুব বেশি উত্তেজিত হয়ে বিছানায় যাবেন না।
০ ঘুমের আগে কোনো ভারী কাজ বা অত্যাধিক মাথার কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
০ প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
০ দুপুরের ঘুম আপনার শুধু কর্মক্ষমতাই কমায় না, আপনার রাতের ঘুমও নষ্ট করে। অতএব, এটি বাদ দিন।
০ ঘুমাতে যাওয়ার আগে সিগারেট, তামাক, চা, কফি না খাওয়াই ভাল।
০ দুই-এক দিনের ঘুম না হওয়াতেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না। তবে নিয়মিত না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
০ ডা. ওয়ানাইজা
চেম্বার : জেনারেল মেডিক্যাল হাসপাতাল (প্রা.) লি., ১০৩, এলিফ্যান্ট রোড (তৃতীয় তলা), বাটা সিগন্যালের পশ্চিম দিকে, ঢাকা। মোবাইল : ০১৯১১৫৬৬৮৪২।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
১,০৭৭ বার পড়া হয়েছে





