আমরা রাজস্থানের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিলাম ৩ অক্টোবর। দুর্গাপূজার নির্ঘণ্ট অনুসারে সেদিন ছিল পঞ্চমী তিথি। আমাদের ট্রেন ছিল অনন্যা এক্সপ্রেস। কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে। এবার আমদের টিম তিন পরিবারের। আমার, আমার শ্যালিকার আর এক বন্ধুর পরিবার। ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১০ জন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। রাজস্থান ভ্রমণের আনন্দে সবাই আমরা খুশির মেজাজে। স্টেশনের ওয়েটিং রুমে বসেই ফ্রাইড রাইস আর চিকেন চাপ সহযোগে মধ্যাহ্ন আহারটা জমে গেল। এর পরই সাড়ে ১২টার মধ্যে ট্রেন স্টেশনে দিয়ে দিলো। আমরা নিজ নিজ জায়গায় ব্যাগ গুছিয়ে আরাম করে বসলাম। তবে আমাদের সিটগুলো এক বগিতে হয়নি। আমার পরিবারের বি২ আর বাকি দুই পরিবারের বি৪। কিছু করার নেই, সবই ভারতীয় রেলের কৃপা।

ট্রেন নির্ধারিত ১টা ১০ মিনিটেই ছাড়ল। তখনও দেখছি আমাদের কুপের সাইড আপার ও লোয়ার সিট ফাঁকা, কেউ আসেনি। কিন্তু ট্রেন কিছুটা গড়িয়েই দাঁড়িয়ে গেল। ভাবলাম, হয়তো ছাড়ার আগে ব্রেক চেক করছে। কিন্তু রহস্যটা যে অন্য জায়গায়, তা কিছুক্ষণ পরই পরিষ্কার হলো।

অবাঙালি দুই বন্ধু পরিবার, তারাও রাজস্থান যাচ্ছে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। এক বন্ধুর পরিবার সময়মতই পৌঁছে গেল স্টেশনে। কিন্তু অপর বন্ধুর পরিবার ট্রেন ছাড়ার মুহূর্তে স্টেশনে এসে হাজির। তখন ট্রেনে চেপে যাওয়া বন্ধু অপর বন্ধুর জন্য ট্রেনের চেন টানতেই ট্রেন কিছুটা গড়িয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আর এ ঘটনার কারণেই যে বন্ধু চেন টেনে ট্রেন দাঁড় করিয়েছে, তাকে রেল পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, ট্রেনের চেন কখন, কেন টানতে হয় তা না জানলে মহা বিপদ। ইতোমধ্যে দেরি করে আসা বন্ধু দৌড়ে এসে ট্রেনে উঠতে সক্ষম হলেও তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে ট্রেনে উঠতে পারেনি। এদিকে ট্রেন আবার চালু হলো। ওই দুই পরিবারের কাছে এ যেন এক চরম দুর্ভাগ্যজনক ভ্রমণ শুরু হলো।

আমাদের কুপের সাইডে যে সিটগুলো ফাঁকা ছিল, সেগুলো তাদেরই। শেষ পর্যন্ত এক বন্ধু আর অপর বন্ধুর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও বোন ট্রেন জার্নি করতে পারলেন। বাকিরা জিআরপির হাতে বন্দী।

কিছু সময়ের মধ্যেই ওদের সাথে আলাপ হলো আমাদের। যে বন্ধুর দেরি করার জন্য তাদের এই সমস্যা হলো, তাকে দেখলাম খুব আত্ম বেদনায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। অবশ্য এই মানুষটির সাথে উচ্চ মহলে যোগাযোগ থাকায় ট্রেনে বসেই ফোন মারফত বিশেষ ক্ষমতাবলে রেল পুলিশকে সামান্য ফাইন দিয়ে সেই বন্ধু ও নিজের পরিবার ছাড়ার ব্যবস্থা করে ফেলেন। শেষ পর্যন্ত তারা প্লেনে দিল্লি গিয়ে ওখান থেকে গাড়িতে জয়পুর যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন। আর এরা ট্রেনে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Singapore Tour with Universal Studios & Sentosa 5D/4N

মূল্য: ৩৮,৯০০ টাকা

Cairo, Alexandria & Sharm El Sheikh 6D/5N

মূল্য: 57,900 Taka

কলম্বো ৩দিন ২ রাত

মূল্য: ১৭,৯০০ টাকা

ট্রেন এগিয়ে চলছে। আমাদের সাথে ওই অবাঙালি পরিবারের বেশ ভালোই আলাপ জমেছে। একে অপরের খাবার আদান-প্রদান হচ্ছে। ভদ্রলোকের নাম জানলাম বিজয় কাপুর, পেশায় এক মাঝারি শিল্পপতি। সবাই একসাথে আনন্দ করতে করতে যাবে বলেই প্লেন বাদ দিয়ে ট্রেনে যাত্রার ব্যবস্থা করেছিলেন। মিস্টার কাপুরের মুখে শুনলাম, ওরা অনলাইন মারফত জয়পুরে হোটেল বুক করেছেন। খুব ভালো হোটেল কম দামে পেয়েছেন। আমার কোন দিনই অনলাইনের প্রতি বিশ্বাস নেই। তাই মিস্টার কাপুরকে বললাম, ‘আপনি একবার হোটেলে ফোন করে আপনার বুকিং চেক করে নিন।’ ভদ্রলোক দেখলাম অনলাইনের প্রতি খুব বিশ্বাস। কিন্তু আমার কথাটা শুনে বুকিং হোটেলে ফোন করতেই শুরু হলো দ্বিতীয় সমস্যা। তারা যে রুম বুকিং করেছেন সেই রুম হবে না। এ আরেক সমস্যা ভদ্রলোকের মাথায় চেপে বসল। আমাদের সাথে অল্প সময়ের পরিচয়ে আমিও যেন ওদের সমস্যার ভাগিদার হয়ে গেছি নিজের অজান্তেই। শেষ পর্যন্ত জয়পুরে আমাদের বুকিং করা ত্রিবেণী রেসিডেন্সিতেই ওদের রুম বুকিং করা হলো।

৪ অক্টোবর প্রায় দুই ঘণ্টা লেট করে ট্রেন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জয়পুর স্টেশনে এসে পৌঁছলো। ট্রেন থেকে নেমে অটো ভাড়া করে আমরা হোটেলের দিকে চললাম। প্রায় ১০ মিনিটের মধ্যেই এসে হাজির হলাম ত্রিবেণী রেসিডেন্সির সামনে। ওই দুই পরিবারও আবার একত্রিত হলো। আমাদের নির্ধারিত তিনটি সুপার ডিলাক্স রুমে আমরা দুই রাতের অতিথি হলাম। হোটেলের রুম দেখে আমরা খুব তৃপ্ত। কারণ রুমগুলো খুব পরিষ্কার ও যথেষ্ট বড়। অবস্থানগত বিচারেও হোটেলটি বেশ উন্নত। রুমের ব্যালকনি থেকেই রাজস্থান বিধানসভা ভবন রাতের আলোতে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করল।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

Online Shopping BD (Facebook Live)



৯১৪ বার পড়া হয়েছে