দেশে বেশির ভাগ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি জাপান থেকে আসে। জাপানে ব্যবহৃত এই গাড়িগুলো পুনরায় যখন বাজারে বিক্রি হয়, তখন এই গাড়িগুলোকে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বলে। সাধারণত পাঁচ বছরের বেশি পুরোনো গাড়ি রিকন্ডিশন্ড বাজারে আসে না। তাই গাড়ি কেনার আগে জাপানি গাড়ি নির্মাতা-প্রতিষ্ঠানগুলো সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে হবে। তারপর সেই প্রতিষ্ঠানের নির্মিত গাড়ির মডেল এবং সাল অনুসারে গাড়ির ধারণা নেওয়ার জন্য ইন্টারনেটে ভিডিও বা ছবি দেখা যেতে পারে। পছন্দ হলে এবার গাড়ি বিক্রেতার কাছে যাওয়ার পালা।
ব্র্যান্ড মূল্য
বাংলাদেশের রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রীত গাড়ির নাম টয়োটা। গাড়ি নির্মাতা এই প্রতিষ্ঠানের পরেই রয়েছে হোন্ডা। এ ছাড়া নিশান, মাজদা, মিতশুবিশিসহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় জাপানি গাড়ি নির্মাতা-প্রতিষ্ঠানের গাড়ি দেশে জনপ্রিয়। ব্র্যান্ড পছন্দ হলেই জেনে নিতে হবে যে গাড়িটি কিনতে যাচ্ছেন, সেই গাড়িটি দেশের বাজারে কতটা জনপ্রিয়। বেশি বিক্রীত গাড়ির যন্ত্রাংশ সহজে পাওয়া যায়। যে মডেল যত বেশি জনপ্রিয়, সেই মডেলের গাড়ির যন্ত্রাংশ তত বেশি সহজলভ্য। গাড়ি রাস্তায় চললে যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হবে। আর সহজে কেনা গেলে দামেও সাশ্রয়ী হবে।
গাড়ির চেহারা
কথায় আছে, আগে দর্শনদারি পরে গুণ বিচারি। সে হিসেবে যে গাড়িটি কিনবেন, তার ভেতর-বাহির আপনার পছন্দের সঙ্গে মিলিয়ে নিন। প্রতিটি গাড়ি মডিফাই করার সুযোগ রয়েছে। তাই মনের মতো ৮০ শতাংশ পেলে আর ২০ শতাংশ বাজার (আফটার মার্কেট) থেকে যন্ত্রাংশ কিনে সংযোজন করা যায়। গাড়ির রং, আসনের বর্তমান অবস্থা, ইঞ্জিনের বাইরের চেহারাসহ (আউটলুকিং) ভেতর ও বাইরেটা দেখে নিতে হবে।
নিলাম বা পরিদর্শনশিট
দেখা শেষ হলে শুরু হবে গুণের বিচার। জাপানের নিলাম প্রতিষ্ঠানগুলো (অকশন হাউস) গাড়ি উপস্থাপনের সময় গাড়ি-সম্পর্কিত একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। এই অকশনশিটটি সাধারণত জাপানি ভাষায় হয়ে থাকে। একটি অকশনশিট পড়েই গাড়ি সম্পর্কে সব জেনে যাবেন, এমন ধারণাও ভুল। অকশন বা ইন্সপেকশনশিট সম্পর্কে মেভেন অটোসের স্বত্বাধিকারী মো. আশফাক ইবনে আবদুল আওয়াল বলেন, অকশনশিটে সর্বোচ্চ গ্রেড হলো এস বা সিক্স। এই গাড়িগুলো প্রায় নতুন (ব্র্যান্ড নিউ) গাড়ির মতো। তবে কেউ আপনাকে নিশ্চিত করে বলতে পারবে না যে এই গ্রেডের গাড়ি কিনে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবেন কি না। কারণ গাড়িগুলো তেমন ব্যবহার না হওয়ার ফলে এর যন্ত্রাংশের কী অবস্থা তা জানা যায় না। যেমনটা একটি নতুন স্মার্টফোনও দুই দিন পরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে অকশনশিট দেখে আপনি গাড়ি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পাবেন। তিনটি তারকা দেওয়া যে গ্রেড থাকে, সেটির গাড়ি না কেনাই উত্তম। কারণ এই গাড়িগুলো দুর্ঘটনাজনিত বা আগুনে পুড়ে যাওয়া, বন্যায় ডুবে যাওয়া অথবা খুব বেশি পরিবর্তন করা বা হাইলি মডিফায়েড গাড়ি হতে পারে। গাড়ির গ্রেডের চেয়েও গাড়ি কত কিলোমিটার চলেছে তা দেখা গুরুত্বপূর্ণ।
অকশনশিট পরীক্ষা করা
গাড়ি পছন্দ হয়ে গেলে গাড়ির চেসিস নম্বর নিয়ে অকশনশিটকে তৃতীয় পক্ষের নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে যাচাই করা যায়। ৮-১০ ডলার (দেশি টাকায় ৮০০-১০০০ টাকা) খরচ করে অকশনশিটের সত্যতা যাচাই করা যায়। গাড়ির কোনো নকল অকশনশিট, মাইলেজ টেম্পারিং বা গাড়ির রং বদল করা হয়েছে কি না, তা এই পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায়। বেশির ভাগ গাড়ির অকশনশিট যাচাই করা গেলেও কিছু কিছু গাড়ি সম্পর্কে তৃতীয় পক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাওয়া যায় না। তবে প্রতিবেদনটি না পেলেই যে গাড়ি খুব খারাপ, এমন ভাবারও কারণ নেই।
গাড়ির বিক্রেতা সম্পর্কে জানা
আপনি যে দোকান থেকে গাড়ি কিনবেন বলে ঠিক করেছেন, তার সম্পর্কে তথ্য জানার চেষ্টা করতে হবে। একজন গাড়ি আমদানিকারকের ওপর গাড়ির মূল্য নির্ভর করে। যিনি সারা বছরে ৪০০-৫০০ গাড়ি আমদানি করেন আর যিনি চার-পাঁচটি গাড়ি আমদানি করেন, তাঁরা সমান মানের হতে পারেন না। কারণ যত বেশি আমদানি, তত বেশি অভিজ্ঞতা। আর বেশি গাড়ি আমদানি করলে আমদানিকারক জাপানের বিক্রেতার কাছেও বাড়তি সুবিধা পান। এ ছাড়া জাপান থেকে অকশনে গাড়ি কেনার পর সেই গাড়িটি জাপানেই সামনাসামনি দেখার সুযোগ থাকে। যাঁদের প্রতিনিধি জাপানে থাকেন, তাঁরা এই কাজগুলো দক্ষতার সঙ্গে করতে পারেন। অনেক আমদানিকারকের জন্য এই সুবিধা নেওয়া কঠিন বটে। তাই বিশ্বস্ত বিক্রেতার কাছ থেকে গাড়ি কিনলে ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা কম।
গাড়ির পুনর্নিরীক্ষণ
ফিচার বিজ্ঞাপন
Australia Visa for Businessman
থাইল্যান্ড ভিসা (বেসরকারি চাকুরীজীবী)
বাংকক-পাতাইয়া-কোরাল আইল্যান্ড-ফুকেট-সাফারি ওয়ার্ল্ড ৬দিন ৫ রাত
গাড়ি পছন্দ হলে সেই গাড়িটির ইঞ্জিন, সাসপেনশন, হুইল অ্যালাইনমেন্ট, চেসিস কন্ডিশন, আন্ডার বডি চেক করার জন্য বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। রহিমআফরোজ, নাভানা লিমিটেড অথবা আকিজ অটোমোবাইল সেন্টার এ ক্ষেত্রে জনপ্রিয়। পছন্দের গাড়িটিকে নিয়ে চলে যান গাড়ির চেকআপে। চেসিসে সমস্যা রয়েছে—এমন গাড়ি কেনা থেকে সাবধান। হাইব্রিড গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে গাড়ির ব্যাটারির অবস্থাও পরীক্ষা করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়।
রয়েছে প্রি-অর্ডারের সুযোগ
ডিজিটাল যুগে প্রি-অর্ডার দিয়েও রিকন্ডিশন্ড গাড়ি কেনার সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে গাড়ির ছবি দেখে গাড়ি বিক্রেতা আপনাকে গাড়ি কিনতে সহযোগিতা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে বুকিং মানি দিয়ে গাড়ি পছন্দ করে নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকে। অনেক গাড়ি বিক্রেতা যেসব গাড়ি জাপান থেকে জাহাজে উঠে যায়, সেসব গাড়ির মধ্য থেকেও গাড়ি পছন্দ করার সুবিধা দিয়ে থাকেন।
মিলবে ঋণ
গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে শুরু করে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সুদে লোন দিয়ে থাকে। গাড়ির শোরুমে আপনার যে পরিমাণ লোনের দরকার, তা উল্লেখ করে ব্যাংকের সঙ্গেও লেনদেন করার সুযোগ রয়েছে।
পরীক্ষামূলক চালনা
সবকিছু চেক করার পর গাড়ি মনঃপূত হলে তা চালিয়ে দেখতে হবে। নিজে ড্রাইভ না পারলে অভিজ্ঞ চালককে দিয়ে গাড়িটি চালানোর স্বাচ্ছন্দ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। গাড়ির শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্রটির প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। গাড়ির কোথাও জং পড়েছে কি না, ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হবে।
বিক্রয়োত্তর সেবা
অনেক গাড়ি আমদানিকারকের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়ার জন্য সার্ভিস সেন্টার থাকে। যে গাড়িটি কিনবেন, সেই গাড়িতে বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। গাড়ির জন্য সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ। তাই সময়মতো সার্ভিস সেন্টারে পাঠালে গাড়ির কার্যক্ষমতা অটুট থাকে।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)৩৩৬ বার পড়া হয়েছে





