করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি আবার এপ্রিলের ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাওয়ার ইঙ্গিত দেখে ঢাকার চার পাশের জেলাগুলোতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। সোমবার সাত জেলা অবরুদ্ধ থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, “সব বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না।
“শুধু মালবাহী ট্রাক এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু চলবে না। জেলাগুলো ব্লকড থাকবে, কেউ ঢুকতে পারবে না।”
দেশের মধ্যাঞ্চলের এই সাতটি জেলা হল- মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ। দেশের যে কোনো স্থান থেকে ঢাকায় ঢুকতে হলে মানিকগঞ্জ কিংবা নারায়ণগঞ্জ কিংবা মুন্সীগঞ্জ কিংবা গাজীপুর হয়েই আসতে হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব সিদ্ধান্ত জানানোর পর রেলপথ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রেন এই জেলাগুলোর উপর দিয়ে এলেও সেখানে থামবে না। আর বিআইডব্লিউটিএ ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি দূরপাল্লার সব বাস, লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই সিদ্ধান্ত জানানোর দিনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৪ হাজার ৬৩৬ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত এবং ৭৮ জনের মৃত্যুর খবর দেয়। এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা গত নয় সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে ১৪ এপ্রিল এক দিনে ৫ হাজার ১৮৫ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল।
দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউয়ের প্রেক্ষাপটে গত ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। এরপর মে মাসে সংক্রমণ কিছুটা কমে এলে বেশি কিছু বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়। তবে করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে জুনের শুরুতে দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু আবার বাড়তে থাকে।
এর মধ্যে চলমান সাধারণ বিধি-নিষেধের মেয়াদ গত ১৬ জুন এক ধাক্কায় এক মাস বাড়ানো হলেও উচ্চ সংক্রমণের কারণে সীমান্তের বিভিন্ন জেলায় অবরুদ্ধ অবস্থা জারি করছিল।
এর মধ্যে রয়েছে- সাতক্ষীরা, বাগেরহাটের মোংলা, যশোর পৌরসভা, অভয়নগর, বেনাপোল, শার্শা, কুষ্টিয়া সদর, চুয়াডাঙ্গা, দামুরহুদা, পুরো মাগুরা, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, নাটোর পৌরসভা ও সিংড়া এবং বগুড়া পৌরসভা। লকডাউনে থাকা চুয়াডাঙ্গা।
এরপর এখন ঢাকার চার পাশের জেলাগুলো মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ হল। মন্ত্রিপরিষদের আদেশে বলা হয়েছে, বিধি-নিষেধের সময়ে এই সাত জেলায় সার্বিক কার্যাবলি/চলাচল (জনসাধারণের চলাচলসহ) বন্ধ থাকবে।
তবে আইন-শৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।
সম্প্রতি বিধি-নিষেধ শিথিল করে অফিস খোলা হলেও এই সাত জেলার ক্ষেত্রে কী হবে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে। তিনি উত্তরে বলেন, “জরুরি সেবা ছাড়া সব কিছুই বন্ধ থাকবে।”
ঢাকার বিষয়ে নতুন কোনো বিধি-নিষেধ আসছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্তের পর রেলপথ বিভাগ এই সাত জেলায় ট্রেন না থামানোর সিদ্ধান্ত জানায়।
ফিচার বিজ্ঞাপন
শ্রীলংকা ভিসা (চাকুরীজীবী)
Australia Visa (for Govt Service Holder)
Singapore Tour with Universal Studio 4D/3N
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে সাত জেলায় লকডাউন করা হয়েছে, সেসব জেলায় রেলস্টেশন থাকলে সেখানে ট্রেন থামবে না। সেখান থেকে কোনো যাত্রী উঠবে না, নামবেও না এবং ওইসব এলাকা ট্রেনগুলো সরাসরি অতিক্রম করে চলে যাবে। লকডাউন করা জেলাগুলোতে সরাসরি কোনো ট্রেন চালু থাকলে সেসব জেলায় ট্রেনও যাবে না।”
এরপর রাতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ঢাকা থেকে সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়; যদিও বিকালে তারা এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে শুধু সাতটি জেলায় নৌযান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল।
রাতে বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাতটি জেলার লঞ্চ যোগাযোগসহ ঢাকা থেকে সারা দেশের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।”
ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুটে লঞ্চ চলাচল করে। পণ্য পরিবহন এবং জরুরি সেবা প্রদানকারী নৌযানের ক্ষেত্রে এই বিধি-নিষেধ থাকছে না। মিজানুর আরও জানান, সাতটি জেলা বাদে অন্য সব এলাকায় অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট রুটে নৌযান চলতে পারবে।
মহামারীর এক বছরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জেলা লকড ডাউন হলেও সেসব জেলার উপর দিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল করতে দেওয়া হয়েছিল। এবার মন্ত্রিপরিষদের ঘোষণায় স্পষ্ট কিছু বলা না হলেও সরকারের নির্দেশনা পাওয়ার কথা জানিয়ে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
সংগঠনের মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
“ঢাকার চারপাশের জেলাগুলো দিয়েই অন্যান্য জেলার যানবাহন চলে। যেহেতু এসব এলাকা লকডাউন, তাই দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকছে।”
এদিকে এসব জেলার উপর দিয়ে বাস চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপের লিখিত কোনো নির্দেশনা না পাওয়ার কথা জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তবে শুনেছি ঢাকার সাথে আন্তঃজেলার সকল রুটের গাড়ি চলাচল নন্ধ থাকবে।”
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে ঢাকার হাসপাতালগুলোয় রোগীর চাপ আবার বাড়তে শুরু করেছে। রোগী বেড়েছে হাসপাতালগুলোর আইসিইউতেও।
Source: bdnews24
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)২৬৯ বার পড়া হয়েছে




