সিলেটের দোয়ারাবাজার উপজেলার উত্তরে ভারতের চেরাপুঞ্জি, মেঘালয় রাজ্য। পূর্বে ছাতক উপজেলা, দক্ষিণ ও পশ্চিমে সুনামগঞ্জ জেলা। সুনামগঞ্জ থেকে দোয়ারাবাজারের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। সিলেট-হতে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ। দোয়ারাবাজার সুরমা নদীর উত্তরপারে হওয়ায় সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ নেই। ভারত সীমান্তের কাছে হওয়ায় খুব শীতও পড়ে এখানে।
১৯৮৪ সালে উপজেলা পরিষদ গঠনের পর ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছিল এই দোয়ারাবাজার উপজেলা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এ উপজেলায় রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ১১টি সেক্টরের মধ্যে একমাত্র এ উপজেলার সেক্টরই ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। জেলায় সর্বাধিক মুক্তিযোদ্ধার বসবাসও এই উপজেলায়।
এখানে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বাঁশতলা শহীদ স্মৃতিসৌধ এবং বাঁশতলা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থান। ভ্রমণপিপাসু বন্ধুদের কাছ থেকে প্রায় সময় বাঁশতলা শহীদ স্মৃতিসৌধ নাম শুনেছি।
ডাউক সড়ক থেকে সুনামগঞ্জ এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ সীমান্তবর্তী অঞ্চল নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পাঁচ নম্বর সেক্টর। পাঁচ নম্বর সেক্টরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার ছিলেন মেজর মীর শওকত আলী। পাঁচ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর ছিল সুনামগঞ্জ জেলার বাঁশতলা। এখানকার সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন হেলাল উদ্দিন। পাহাড়বেষ্টিত বাঁশতলা এলাকায় এবং তার আশপাশে মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা শহীদ হন, তাঁদের সমাহিত করা হয় বাঁশতলার এ নির্জনে।
সেই স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য নির্মাণ করা হয় বাঁশতলা স্মৃতিসৌধ। আমরা দাঁড়িয়ে আছি বাঁশতলার স্মৃতিসৌধ। চারপাশেই গাছগাছালি আর পাখির কিচির-মিচির আওয়াজ এক অন্যরকম পরিবেশের তৈরি করেছে। স্মৃতিসৌধের চারপাশের সৌন্দর্য পলকহীন চোখে উপভোগ করছি প্রকৃতির অকৃপণ দান।
স্মৃতিসৌধের পেছনে তাকালে বোঝা যায় দূরে পাহাড়গুলো আকাশ ছুঁয়েছে। যেন পাহাড়ে উঠতে পারলেই আকাশ হাতের মুঠোয়। ওপরে নীল আকাশ। নিচে থই থই জলরাশি, স্বচ্ছ আর নীল। স্মৃতিসৌধের বামপাশের রাস্তা দিয়ে কিছুটা হেঁটে দেখতে পেলাম সবুজ ছায়ায় মুক্তিযুদ্ধে নাম না জানা ১৪ জন শহীদের সারি সারি সমাধি।
কোলাহলমুক্ত পরিবেশে আমাদের প্রিয়জনরা ঘুমিয়ে আছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় শহীদের সারি সারি সমাধি আকাশছোঁয়া বৃক্ষ যেন এক একটি প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে সবুজ পাহাড়ের গায়ে শত শত বছরের পাথরের কারুকাজ। পাহাড়ের একপাশে ঘন কালো মেঘের অন্ধকার অন্যপাশে কাঠফাটা রোদ। এ যেন প্রকৃতির এক লীলা খেলা।
স্মৃতিসৌধ আর পাহাড়কে বিদায় জানিয়ে আমরা দশ মিনিট হেঁটে টিলার ওপর পাহাড়ি গ্রামে চলে এলাম। এখানে প্রায় ৩৬ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী পরিবারের বসবাস। যেদিকে চোখ যায় শুধু পাহাড় আর পাহাড়। এক পাহাড়ের সঙ্গে যেন আরেক পাহাড় আলিঙ্গন করছে। এরপর আমরা গেলাম চেলাই খালের ওপর স্লুইস গেট বা পানির ব্যারেজ দেখতে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
যমুনা রিসোর্ট প্রাইভেট ডে লং ট্যুর
বাউন্ডারি ও রেজিষ্ট্রেশন করে নিজের প্লট বুঝে নিন
বালি-লম্বক-গিলি আইল্যান্ড ৭দিন ৬ রাত
আকাশের সাথে মিতালী করেছে জলের ধারা, দূর থেকে দেখতে অসাধারণ লাগছিল কিন্তু ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে সময় এগিয়ে চলছে আর আমাদের শহর পানে ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে এলো।
যেভাবে যাবেন
বাঁশতলা স্মৃতিসৌধ যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলায়। সুনামগঞ্জ জেলা সদর থেকে বাঁশতলা যাওয়া যাবে। আবার ছাতক উপজেলা থেকেও বাঁশতলা যাওয়া যাবে। দিনরাত ঢাকা-সিলেট-সুনামগঞ্জ বাস চলাচল করে। সুবিধামতো সময়ে হানিফ, ইউনিক কিংবা শ্যামলী পরিবহনের বাসে চেপে বসলেই হবে। আমরা সিলেট-ছাতক-দোয়ারাবাজার হয়ে বাঁশতলা গিয়েছিলাম।
সন্ধ্যার বাসে সিলেট যাত্রা করলে রাত ১২টার মধ্যে সিলেট পৌঁছে রাতটুকু বিশ্রাম নিয়ে পরদিন বাঁশতলা। সকালে আম্বরখানা থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আপনাকে ছাতক আসতে হবে। ভাড়া মাথাপিছু ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
এবার ছাতক বাজার থেকে সুরমা নদী পার হয়ে আবার সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চেপে সরাসরি বাঁশতলা। তাছাড়া মাইক্রোবাস করেও যেতে পারবেন বাঁশতলা স্মৃতিসৌধে।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত আয়োজন এখানে অপেক্ষা করছেপূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত ...
১৭১ বার পড়া হয়েছে