বিশ্ব সেপসিস দিবস উপলক্ষে সংক্রমণ প্রতিরোধে এসকেএফের সহায়তায় ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অতিথি ছিলেন ডিজিএইচএসের সাবেক মহাপরিচালক আবুল ফায়েজ, বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইনফেকসাস অ্যান্ড ট্রপিক্যাল ডিজিজের প্রেসিডেন্ট মো. ইসমাইল পাটোয়ারী, রোগনিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডিরেক্টর সিডিসির পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, এনসিডিসির লাইন ডিরেক্টর রোবেদ আমিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিডিসির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার অনিন্দ্য রহমান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফজলে রাব্বি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এফডিএসআরের উপদেষ্টা আবদুন নূর তুষার।বিজ্ঞাপন

সেপসিস কী, কেন

হাসপাতালে মৃত্যুর প্রধান কারণ সেপসিস। এটি ইনফেকশনের সঙ্গে জড়িত। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অতিরিক্ত হয়ে গেলে তখন সেপসিস হতে পারে। কেননা, তখন সেপসিস কেবল রোগের বিরুদ্ধে নয়, শরীরের অঙ্গপ্রত্যাঙ্গের বিরুদ্ধেও কাজ করে। ফলে শরীর অকেজো হয়ে যায়। এটা ছোঁয়াচে রোগ নয়। একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না। তবে শরীরের কোনো স্থান আক্রান্ত হলে সংক্রমণের স্থান থেকে রক্তস্রোতের মাধ্যমে অন্য স্থানও আক্রান্ত হতে পারে। বেঁচে থাকলে অনেক সময় পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। দ্রুত হৃৎস্পন্দন, ঠান্ডা, কাঁপুনিসহ জ্বর, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, শ্বাসকষ্ট, অপ্রত্যাশিত মানসিক অবস্থা, ২৪ ঘণ্টায় প্রস্রাব না হওয়া, অচেতন হয়ে পড়া, দুর্বলতা, রক্তচাপ কমে যাওয়া—এগুলো সেপসিসের লক্ষণ। যেকোনো বয়সের যে কারও সেপসিস হতে পারে। সারা বিশ্বে অ্যাডাল্ট সেপসিস মারাত্মকভাবে অবহেলিত।

সেপসিস প্রতিরোধে করণীয়

প্রথমত, অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ও পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আর সে জন্য যা করণীয়, তা–ই করতে হবে। সেপসিস রোগীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে আক্রান্ত করে। বিশ্বে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায়, তার ৫ জনের ১ জন বা ২০ শতাংশ মানুষ মারা যায় সেপসিসে, অর্থাৎ মানুষ ক্যানসারের চেয়ে বেশি মারা যায় সেপসিসে। কোভিড বাস্তবতায় ইনফেকশনজনিত রোগ ‘কি রোল’ প্লে করছে। করোনা মহামারিতে সমন্বিত একটা উদ্যোগ নেওয়া হলে ইনফেকশন কমানো যেত। এখনো বাংলাদেশে রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা অত্যন্ত কম। তাই অনেক কিছুর দরকার হলেও করা সম্ভব হয় না। সমাজের প্রত্যেক মানুষকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন হতে হবে। স্টেকহোল্ডারদেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আছে।

সংক্রমণ কমানোর জন্য সব হাসপাতালে ইনফেকশন প্রিভেনশন টিম আছে। তাদের জন্য রয়েছে আইপিসির একটা গাইডলাইন। অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে একটা পর্যবেক্ষক দল রয়েছে। পলিসি লেভেলে যাঁরা আছেন, তাঁদের জন্য প্রতিবছর কর্মশালার আয়োজন করা হয়। যুক্তিসংগতভাবে যতটুকু সম্ভব, ততটুকু অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে বলি। অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন, বিপণন, সংরক্ষণ—এগুলো নজরদারির মধ্যে আছে। গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা নিরাপদ বিশ্ব রেখে যেতে ব্যর্থ হব।

সমন্বিত ব্যবস্থার বিকল্প নেই

সেপসিস প্রতিরোধ গড়ে টিকে থাকার সঙ্গে আমাদের আগামী প্রজন্মের সুরক্ষা সরাসরি যুক্ত। সেপসিসের সঙ্গে একটা বিশাল গোষ্ঠী যুক্ত। এর সঙ্গে মেডিকেলের পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরু করে মাইক্রোবায়োলজিস্ট, ফার্মেসির দোকানদার, আইনের সঙ্গে যুক্ত একটা বড় গোষ্ঠী-সবাই যুক্ত। মনে রাখতে হবে, কোয়ালিফায়েড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক কেনা বা বেচা যাবে না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটা নীতিমালা করা ও সেই নীতিমালা প্রয়োগ করার কোনো বিকল্প নেই।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Australia Visa (for Private Service Holder)

মূল্য: 20,000 Taka

Dubai (City tour- Abu Dhabi tour) 4D/3N

মূল্য: 16,900 Taka

Singapore Tour with Universal Studio 4D/3N

মূল্য: ২৬,৯০০ টাকা

যেখানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ

আমাদের দেশে একজন জ্বরের রোগীকে যে রক্ত, প্রস্রাব পরীক্ষা করে এর আসল কারণ বের করতে হবে, সেই সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠেনি। অনেক অ্যান্টিবায়োটিক লেখার আগে মাইক্রোবায়োলজিস্টের কনটেন্ট লাগে। সেটা বাংলাদেশের প্রায় কোনো হাসপাতালেই নেই। অ্যান্টিবায়োটিক একটা শক্তিশালী অস্ত্রের মতো। এটা ভালো বা মন্দ—যেকোনো কিছুই করতে পারে। তাই এর সদ্ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। দুঃখের বিষয়, আজ বিশ্ব সেপসিস প্রতিরোধ দিবসে আমাদের বলার মতো কোনো অর্জন নেই।

২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কি সম্ভব

২০৩০ সালের ভেতর বিশ্ব সেপসিস নিয়ন্ত্রণ সংস্থা যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে, বাংলাদেশ সেটি পূরণ করতে পারবে কি না, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। কেননা, এর প্রথম পর্যায়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো গবেষণা। বাংলাদেশে সেপসিস নিয়ে এখনো গুরুত্বপূর্ণ কোনো গবেষণা হয়নি। মহামারিতে প্রায় ২০ হাজার চিকিৎসক ও নার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন হাসপাতাল পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে কিছু হাসপাতালকে মডেল বানানো হয়েছে। অন্য হাসপাতালগুলোকেও সেভাবে তৈরি করা হবে। কোন রোগে কোন কোন অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে, সেটার একটা নীতিমালা তৈরি করে সব হাসপাতালে দিতে হবে। এখানে আইনের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আছে। আমাদের যোগাযোগব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত হয়েছে। ওষুধ নিয়ে একটা জাতীয় নীতিমালা আইন মন্ত্রণালয়ে শেষ দিকে রয়েছে। সবাইকে নিষ্ঠার সঙ্গে যাঁর যাঁর কাজটা করতে হবে। কেননা, কোনো একক উদ্যোগে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



২১৫ বার পড়া হয়েছে