একুশ শতকের সম্পদ হলো ডেটা। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি সাইবার অপরাধও ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অপরাধী চক্রগুলো নানাভাবে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। সচেতনতার অভাব এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী।
অনলাইন জগতের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ই–মেইল, পাসওয়ার্ড, নাম, জন্মতারিখ, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুব সহজেই এখন অন্যরা হাতিয়ে নিতে পারছে এবং এসব তথ্য দিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ করে যাচ্ছে। স্পাম লিংক, মেইল, পেনড্রাইভ কিংবা অ্যাপের মাধ্যমে এসব তথ্য চুরির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে। আমরা কীভাবে স্পাম লিংক চিনব?
১. কাছের মানুষ যখন নীরব ঘাতক
আমরা আমাদের চারপাশের কাছের মানুষকে খুব বেশি বিশ্বাস করি। তাই তাঁরা যখন কোনো লিংক আমাদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বা ই–মেইলে পাঠান, তখন আমরা কোনো কিছু বিবেচনা না করেই সেটিতে প্রবেশ করি। হতে পারে তখন আপনার অজান্তেই আপনার সব ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সচেতন থাকতে হবে। যদি আমাদের কোনো লিংক নিয়ে সন্দেহ হয়, তবে তা ক্লিক করার আগে যিনি পাঠিয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে নেবেন যে এটা কিসের লিংক। নাহলে একটি ভুল সিদ্ধান্ত আপনার নিজের অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
২. সব লিংক কিন্তু লিংক নয়
ধরুন, আপনাকে কেউ একটি লিংক পাঠিয়েছে। আপনার প্রথম কাজ হবে লিংকটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। এ ক্ষেত্রে আপনি লিংকটির ডোমেইন ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।
ধরুন, একটি লিংক https://facebok.com/prize এ রকম। কিন্তু এটি আসলে একটি ভুয়া লিংক। আপনি যদি লিংকটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন, তবে দেখবেন যে ফেসবুক বানানটি ভুল আছে। সঠিক বানানটি হবে facebook। এভাবেও আপনারা সতর্ক হতে পারেন।
আবার ধরুন, এমন একটি লিংক https://arena.world.xyz/account । আগের লিংকটিতে হতে পারে ফেসবুক আপনি বেশি ব্যবহার করেন বলে সেটার বানান সম্পর্কে আপনার ধারণা আছে। কিন্তু এ লিংক সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা নেই। তাহলে লিংকটি আসলে কী বিষয়ক ওয়েবসাইট, সেটি দেখতে চাইলে শুধু arena.world লিখে ব্রাউজারে সার্চ করতে পারেন। পুরো লিংকটি কপি করে ব্রাউজারে ওপেন করবেন না। এরপর আপনি একটি ধারণা পাবেন। যদি আপনার মনে হয় যে লিংকটি স্পাম নয়, তাহলে আপনি সেটিতে প্রবেশ করতে পারেন।
৩. সাধারণ জ্ঞান হতে পারে বাঁচার হাতিয়ার
কিছুদিন আগে আমার মেসেঞ্জারে একটি লিংক এল। ফেসবুকের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সে তার ব্যবহারকারীদের পুরস্কার দিচ্ছে। তারপর একটু চিন্তা করলাম। ২০০৪ সালে ফেসবুক যাত্রা শুরু করে। ২০ বছর পূর্তি হবে ২০২৪ সালে। তাহলে এটি নিঃসন্দেহে একটি স্পাম লিংক।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Australia Visa for Lawyer
Cambodia (Phnom Penh & Siem Reap) 6D/5N
Cambodia (Siem Reap & Angkor Wat) 3D/2N
অনেকে বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের নামে এ রকম লিংক তৈরি করে মানুষকে ফাঁদে ফেলে। সে ক্ষেত্রে আমাদের ওই প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে আগে থেকেই যদি কোন ধারণা থাকে, তাহলে আমরা বিপদ এড়াতে পারব।
৪. লোভ খুব খারাপ জিনিস
লোভ শব্দটা অনেক ক্ষেত্রেই খারাপ অর্থে ব্যবহৃত হয়। আর সেটা যদি হয় টাকা কিংবা দামি কোনো পুরস্কারের, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। এই ধরনের জাঁকজমকপূর্ণ বিজ্ঞাপন কিংবা লিংকে প্রবেশ করবেন না।
এত সহজেই যদি আপনি এত টাকার মালিক হয়ে যেতে পারেন, তাহলে তো পরিশ্রম শব্দটিই থাকত না। অনেকে আবার এ রকম লিংক শেয়ার করার জন্য টাকা পেয়ে থাকেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে। তাঁরা তো নিজের ক্ষতি করেনই, সঙ্গে আরও দশজনের ক্ষতি করে বসেন। তাই কিছু বিষয়ে সংযত থাকা ভালো।
৫. যেকোনো লিংক থেকে অ্যাপ ইনস্টল নয়
একদম বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম থেকে মুঠোফোনের জন্য অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করা উচিত। কেননা, কোনো অ্যাপের মাধ্যমেও আপনার সব তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। এবং সেই অ্যাপ একবার আপনার ফোনে ইনস্টল হয়ে গেলে সেটি গুপ্তচরের কাজ করবে। তাই সন্দেহজনক কোনো লিংক থেকে অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকুন।
অনেকের মনের মধ্যে একটি প্রশ্ন থাকে, আমার তথ্য চুরি হলে কার কী লাভ হবে। আসলে আপনার তথ্য অনেক মূল্যবান। সেটি তারা আরও উচ্চমূল্যে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বেচে দেবে। আবার খারাপ কোনো মানুষ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন।
আপনার যদি মনে হয় যে আপনার কোনো তথ্য চুরি হয়েছে বা কেউ আপনাকে ব্ল্যাকমেল করছে, তাহলে আপনার নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য নিন। কোনো কিছু অন্যকে শেয়ার করার আগে তা অবশ্যই নিজে যাচাই করে নেবেন। অন্যকে ভালো রাখুন, নিজে ভালো থাকুন।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
১৬২ বার পড়া হয়েছে