নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের ফ্ল্যাটে বসবাসের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে। ফলে ফ্ল্যাটগুলো চলে যাচ্ছে মধ্য ও উচ্চবিত্তদের হাতে। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে রয়েছে ধীরগতি।

৮ বছরে বাস্তবায়ন হয়েছে ৩৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাহিদা না থাকায় ফ্ল্যাট বিক্রি হচ্ছে না। ফলে অন্য ব্লকের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অপেক্ষা করা হচ্ছে মেট্রোরেল প্রকল্প শেষ হওয়া পর্যন্ত। ‘ঢাকাস্থ উত্তরা ১৮ নং সেক্টরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য অ্যাপার্টমেন্ট ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পে বিরাজ করছে এ অবস্থা। বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চিফ ইঞ্জিনিয়ার আবদুল লতিফ হেলালী সোমবার বলেন, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য তৈরি হলেও এগুলো কিনতে যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন সেই টাকা তারা কোথায় পাবেন? তাছাড়া আমাদের ফ্ল্যাট তো খালি আছেই। তারা যদি কিনতে আসেন তাহলে এখনো তো নিতে পারেন।

কিন্তু যত ছোট অ্যাপাটমেন্টই তৈরি করেন না কেন, প্রকৃতপক্ষে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা তা নিতে পারবেন না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ভাসানটেকে বস্তিবাসীদের জন্য ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে ক’জন বস্তিবাসী ফ্ল্যাট কিনতে পেরেছেন? প্রকল্পের ধীরগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখন শুধু ‘এ’ ব্লকের কাজ করেছি। সেগুলো ফ্ল্যাট পুরোপুরি বিক্রি হচ্ছে না। এজন্য মেট্রোরেল চালু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। তাছাড়া রাস্তা তৈরি, অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতি চালু হলে ‘বি’ ও ‘সি’ ব্লকের কাজ শুরু হবে।

আইএমইডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ধার্য আয়ের সীমা অনুযায়ী কোনো জনগোষ্ঠীর বার্ষিক গড় আয় ৭৯ হাজার ৬০০ (মাসিক ছয় হাজার ৬৩৪) টাকার কম হলে নিম্নবিত্ত বলা হয়। এছাড়া ৭৯ হাজার ৬৮০ টাকা থেকে তিন লাখ ১১ হাজার ৬০০ টাকা (মাসিক ৬ হাজার ৬৪০-২৫ হাজার ৯৬৭ টাকা) হলে তাদের নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং বার্ষিক আয় ৩ লাখ ১১ হাজার ৬৮০ টাকা থেকে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৪০০ টাকা (মাসিক আয় ২৫ হাজার ৯৭৪-৮০ হাজার ৩৬৭ টাকা) হলে তাদের উচ্চবিত্ত বলা হয়।

কিন্তু এই সংজ্ঞা অনুসারে প্রকল্প এলাকা থেকে সংগৃহীত নমুনার মধ্যে চারজন বা প্রায় এক শতাংশ নিম্ন মধ্যবিত্ত, ৩৩৭ জন বা ৬৭ শতাংশ উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং ১৫৯ জন বা ৩২ শতাংশ ফ্ল্যাট মালিকের আয় উচ্চবিত্ত মানুষের আয় সীমার মধ্যে রয়েছে। যদিও প্রকল্পটি বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য হাতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু পর্যবেক্ষণে পাওয়া ফলাফলে প্রতীয়মান হয়েছে, নিম্ন আয়ের কোনো ব্যক্তি এই প্রকল্পের আওতায় কোনো ফ্ল্যাট পাননি। যা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পটির ‘এ’ ব্লকের ৬ হাজার ৬৩৬টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৬ হাজার ১৩২টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৫০৪টির নির্মাণ কাজ চলমান আছে। ইতিমধ্যেই ৮৪০টি ফ্ল্যাটের দখল হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্পটিতে শুধু ‘এ’ ব্লকের কার্যক্রম চলমান থাকায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের উদ্দেশ্য অনুযায়ী আবাসনের আংশিক বাস্তবায়িত হবে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Paradise island, Maldives, 4D/3N

মূল্য: ৯১,৯০০ টাকা জনপ্রতি

Maldives (Paradise Island) 3D/2N

মূল্য: ৪২,৯০০ টাকা

Thimpu-Paro-Dochala Pass-Punakha 6D/4N

মূল্য: ২৬,৯০০ টাকা

প্রথম পর্যায়ের ১৬৫৪ বর্গফুটের ফ্ল্যাটগুলো প্রতি বর্গফুট ৩ হাজার ৫০০ টাকা হিসেবে ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার টাকা এবং পরবর্তী পর্যায়ের ফ্ল্যাটগুলো প্রতি বর্গফুট ৪ হাজার ৮০০ টাকা হিসেবে ৭৯ লাখ ২৯ হাজার ২০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ফ্ল্যাটের এ মূল্য স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নেই। এ কারণে প্রকল্পের প্রথম উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট রাজউকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, ‘সি’ ব্লকটি যখন বাস্তবায়ন করা হবে। তখন সেখানে ৮৫০ বর্গফুটের ছোট ফ্ল্যাট তৈরি হবে। সেখানে নিম্ন আয়ের মানুষরা হয়তো ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন। তিনি জানান, রাজউকের কাজ হচ্ছে টাউটশিপ তৈরি করা। ২০-৫০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে।

আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি ১০টি অর্থবছরে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। ইতোমধ্যেই ৭টি অর্থবছর পার হয়েছে। ২০১৮-১৯ অষ্টম অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত প্রকল্পটিতে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৬৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। যা প্রকল্পটির সংশোধিত বরাদ্দ দেয়া অর্থের ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই তিন ব্লকের ২৪১ দশমিক ৪৪ একর জমিতে ১৮৩টি ভবনে মোট ১৫ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের লক্ষ্য ছিল। বর্তমানে শুধু ‘এ’ ব্লকের ৯৬ একর জমিতে ৭৯টি ভবনে ৬ হাজার ৬৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। এ ব্লকের জন্য আনুমানিক ৪ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। গত মার্চ মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা বা ৮১ দশমিক ৪০ শতাংশ অর্থ। বি ও সি ব্লকের কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।

– যুগান্তর

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



৯৭৩ বার পড়া হয়েছে