সমস্যা: আমি স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছি। কিন্তু বিষয়টি পছন্দের নয় বলে ভর্তির পর থেকেই বিষণ্নতায় ভুগছি। এর মধ্যেই একজন ছেলের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সে খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের। যদিও ধীরে ধীরে আমরা ভালো বন্ধু হয়ে যাই। একসময় আবিষ্কার করি, আমাদের সবকিছুই যেন একই রকম। আরও কিছুদিন পর তার বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারি, আমাকে সে পছন্দ করে। তখন আমিও তার প্রতি দুর্বল হতে থাকি।
আমার দুর্বলতার কথা বন্ধুদের মাধ্যমে সে জেনে যায়। এরপর দূরত্ব সৃষ্টি করেছিল কিছুদিনের জন্য। আবারও সে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে শুরু করে। এরই মধ্যে জানতে পারি, সে অন্য এক মেয়েকে পছন্দ করে। আমার প্রথমে কিছুটা খারাপ লাগলেও মানিয়ে নিই। কিন্তু বিষণ্নতায় ভুগতে থাকি। আমি প্রচুর বই পড়ি। বই পড়ে বিষণ্নতা কাটানোর চেষ্টাও করি। বন্ধুদের সঙ্গ এড়িয়ে চলি। কারণ, ছেলেটা সব সময় আমার বন্ধুদের সঙ্গেই থাকে। তাকে দেখলে আমার মধ্যে একটা দুর্বলতা কাজ করে। আমার বন্ধুরা ক্ষণে ক্ষণে ছেলেটি এবং তার পছন্দের মেয়েটিকে নিয়ে বিভিন্ন কথা বলতে থাকে। এসব আমি এড়িয়ে চলতে চাই, কিন্তু প্রচণ্ড বিষণ্নতায় ভুগতে থাকি এসব নিয়ে। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। কিন্তু কোনোভাবেই পারছি না।
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক
পরামর্শ: এটি খুবই দুঃখজনক যে তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছ অথচ পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়তে পারলে না। অনেক শিক্ষার্থী এভাবে স্বপ্নভঙ্গের কষ্ট নিয়ে লেখাপড়া করতে থাকে। এ কারণে পরবর্তী সময়ে তাদের ফল খুব একটা ভালো না-ও হতে পারে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটির জন্য অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী লেখাপড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও প্রবণতার মূল্যায়ন হওয়া খুব প্রয়োজন। এই বিষণ্ন অবস্থায় পড়ার সময় তোমার এমন একটি ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব হলো যে অত্যন্ত অন্তর্মুখী। ওর সঙ্গে তোমার রুচির মিল রয়েছে বলে ঘনিষ্ঠতা হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। তবে ছেলেটি যখন বুঝতে পারল তোমাদের সম্পর্কটি বন্ধুত্বের সীমা কিছুটা অতিক্রম করছে এবং তুমি তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছ, তখন এ ব্যাপারে সে সতর্ক হতে পারত। যদি তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব ছাড়া অন্য কোনো সম্পর্কে তার আগ্রহ না থাকে, তাহলে সেটি তোমাকে সরাসরি বলতেও পারত। তা না করে একেবারে হঠাৎ করে তোমার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে সে তোমাকে কতটা কষ্টে ফেলে দিয়েছিল, সেটি বোঝার ক্ষমতা তার সম্ভবত ছিল না। হতে পারে সে হয়তো কিছুটা দ্বন্দ্বের মধ্যেও ছিল।
তুমিও তখন এতটাই অসহায় বোধ করছিলে যে তাকে এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করার উদ্যোগটি নিতে পারোনি। আবার ছেলেটি আগের আচরণের কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে যখন পুনরায় যোগাযোগ করতে শুরু করল, তুমি তার কাছে এর কোনো ব্যাখ্যা চেয়েছিলে কি না জানি না। যদি সেটি না করে থাকো, তাহলে হয়তোবা তোমার মনে হয়েছিল, সে তোমাকে ভালোবাসে বলেই এটি করেছে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Cairo, Alexandria & Sharm El Sheikh 6D/5N
বেইজিং ও কুনমিং ৭ দিন ৬ রাত
Dubai City tour- Dhow cruise- Desert safari- Burj Khalifa 6D/5N
তুমি সম্ভবত সেই সময়ে খুব খুশি হয়েছিলে বলে আর কিছু জানতে চাওনি। তবে সেটি জানতে চাওয়ার অধিকার কিন্তু তোমার ছিল। এরপর যখন জানলে যে সে অন্য একটি মেয়ের প্রতি দুর্বল, তখন খুব বড় একটি ধাক্কা খেলে। তুমি অনেক মানসিক যুদ্ধ করেছ প্রত্যাখ্যাত হওয়ার তীব্র কষ্টকে মোকাবিলা করার জন্য। মনটিকে অন্যদিকে ব্যস্ত রেখেছ নিজেকে একটু আরাম দেওয়ার জন্য। সেটি করতে করতে তুমি বন্ধুদের সঙ্গও ত্যাগ করেছ, যা তোমাকে আরও বেশি একাকী করে দিয়েছে। ভেতরে এ ধরনের শূন্যতার অনুভূতি হলে, আমরা যদি কাছের বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করি এবং কান্নাকাটি করি, তাহলে কিছুটা হালকা হওয়া সম্ভব হয়। দুর্ভাগ্যবশত, তোমার বন্ধুরা যথেষ্ট সহমর্মী হতে পারছে না, তা বোঝা যাচ্ছে। তারা ছেলেটি এবং তার পছন্দের মেয়েটির গল্প করে বারবার তোমার কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের এড়িয়ে যাওয়াটি তোমাকে এ মুহূর্তে কিছুটা সাহায্য করছে ঠিকই, তবে এটি তোমার নিজের মানসিক শক্তি তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
তুমি যখন কিছুটা সামলে নিতে পারবে, বন্ধুদের শ্রদ্ধার সঙ্গে বলবে, ওরা যেন তোমার কষ্ট বাড়িয়ে না দিয়ে বরং তোমার জায়গাতে নিজেদের দেখতে চেষ্টা করে। ছেলেটিকে বাদ দিয়ে ওরা যেন তোমাকে আলাদা করে সময় দেয়, সেই অনুরোধটি তাদের করতে পারো। পরিবারে যদি খুব কাছের বিশ্বস্ত কেউ থাকে, তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেও নিজেকে হালকা করতে পারো। কারও কাছে নিজের ভঙ্গুর সত্তাকে তুলে ধরা কিন্তু দুর্বলতার লক্ষণ নয়। আমরা সবাই জীবনের কিছু পর্যায়ে গোটা অস্তিত্ব নড়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিতে পড়ে যেতে পারি। আবার নিজেকে প্রকাশ করে, কাছের মানুষদের সহায়তা নিয়ে আমরা উঠে দাঁড়াবার শক্তি অর্জন করতে পারি। নিজেকে যদি আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হও, তাহলে ইচ্ছে হলে ছেলেটিকেও মৌখিক বা লিখিতভাবে জানাতে পারো, ওর এই দ্বৈত ভূমিকা তোমার কতটা মনঃকষ্টের কারণ হয়েছে। নিজেকে তুমি অবশ্যই অনেক বেশি গ্রহণ করবে এবং যেমন আছ, ঠিক তেমনি করেই ভালোবাসবে, কেমন?
পরামর্শ দিয়েছেনঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম।
প্রথম আলো থেকে সংগ্রহীত।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
১২৩০ বর্গফুটের দক্ষিণমুখি ফ্ল্যাট মাত্র ৩৭ লক্ষ টাকায়!১২৩০ বর্গফুটের দক্ষিণমুখি ফ্ল্যাট মা...
৩৯৩ বার পড়া হয়েছে





