লেজার, ল্যাসিক, চোখে ছানি, শিশুদের চশমা পরতে না দেয়া, চোখে সুরমা পড়া কিংবা মাথাব্যথার সাথে চোখের সম্পৃক্ততা নিয়ে রয়েছে নানা ভ্রান্তি। এসব ভুল ধারণা ও তার সমাধান নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ আই হাসপাতালের ভিট্রিও-রেটিনা সার্জন ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান। 

বয়স হলে মানুষের চোখে যে ছানি পড়ে সেটি সাদা না হওয়া পর্যন্ত অপারেশন করা যায় না। এই ধারনা কতটুকু যৌক্তিক?-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান বলেন, বৃদ্ধ বয়সে শরীরের চুল পেকে যায়, দাঁত নড়ে যায়, শরীর দুর্বল হয়ে যায়। তেমনি কারও কারও চোখে ছানিও পড়ে। আল্লাহ তায়ালা চোখের ভিতর লেন্স দিয়েছেন। আমরা বাইরে যেসব দৃশ্য দেখতে চাই, সেই লেন্সটা আলোর রশ্মিগুলোকে পেছনে ফোকাস করে। এই লেন্সটা ঘোলা হয়ে যায়। তখন এই লেন্সটা অপারেশন করে কৃত্রিম একটি লেন্স যেটা মানুষের তৈরি সেটা চোখে সেট করে দেয়া হয়। এলেন্স স্টেশন স্থাপন করলে আবার চোখে ভালো দেখা যায়। কিন্তু প্রচলিত একটি কথা আছে যে ছানিটা না পাকলে বা সাদা না হলে সেটি অপারেশন করা যায় না। এটি আগেকার দিনের প্রচলিত ভুল ধারণা। কারণ তখন অপারেশনের সময় ছানি পুরোপুরি সাদা না হলে সেটিকে কেটে বের করা অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। সেক্ষেত্রে ছানিটি ভেঙে যাওয়ার অনেক আশংকা ছিল। কিন্তু বর্তমানে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় ছানি অপারেশনের সময় ফেকো সার্জারি করা হয়। এই অপারেশনের সময় আগের মত চোখ অর্ধেকটা কাটতে হয় না। এক্ষেত্রে ১ থেকে ২ মিলিমিটার ছোট একটা ছিদ্র করেই চোখের ভিতর একটি মেশিন প্রবেশ করিয়ে ছানিটিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে বের করে আনা হয়।

তিনি বলেন, আগে মেশিন চোখের ভিতর প্রবেশ করানোর কারণে ছানি খুব বেশি পেকে গেলে বা সাদা হলে চোখ অপারেশন করতে অনেক অসুবিধা হতো। এমনকি পরবর্তীতে চোখ ভালো করতে অনেক সমস্যা হয়। কিন্তু এখনকার যুগে চোখে ছানি পড়লে সেটি সাদা না হওয়া পর্যন্ত বা ছানিটি পেকে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় না।  চোখে ছানি পড়ে চোখে ঝাপসা দেখা গেলেই  সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে  চোখের ছানি অপারেশন করে নিতে হয়। এর ফলে অপারেশনের কয়েকদিনের মধ্যেই চোখে আবার স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায়।

শিশুরা অনেক কাছ থেকে টিভি দেখলে চোখ নষ্ট হতে পারে।  এটা কতটুকু সঠিক?-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান বলেন, কোন শিশু টেলিভিশন কাছ থেকে  দেখলে বুঝে নিতে হবে বাচ্চাটি অবশ্যই দূর থেকে চোখে ভালো দেখছে না।  তার চোখে কোন সমস্যা থাকতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুটিকে কিছুদিনের জন্য পর্যবেক্ষণ করতে হবে।  তাকে কিছুদিনের জন্য অভ্যাস করিয়ে নিতে হবে দূর থেকে টিভি দেখার জন্য। কিন্তু তারপরও অভিভাবকরা চাইলে শিশুর চার বছরের আগেই চোখের পরীক্ষা করাতে পারবেন।

এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বুঝে নেন, শিশুটির চোখে মাইওপিয়া সমস্যা রয়েছে।  তখন তাকে মাইনাস পাওয়ারের চশমা পরতে হবে। চোখে যাদের মাইওপিয়া সমস্যা রয়েছে তারা যেকোনো জিনিস কাছে থেকে দেখতে পান কিন্তু তারা দূরে দেখতে পান না। তাই শিশুটির স্কুলে যাওয়ার বয়সের আগেই চোখ পরীক্ষা করে নিতে হবে। এরপর যদি মনে হয় তাদের চশমা নিতে হবে তখন চোখের পাওয়ার অনুযায়ী তা দিতে হবে।

শিশুরা চোখে চশমা পড়লে তাদের  অভ্যাস হয়ে যাবে। এটি মনে করে মা-বাবারা চিকিৎসকের উপদেশ থাকা সত্ত্বেও শিশুদের চশমা পরতে দিচ্ছেন না।  এ ধারণা কতটুকু সত্যি?-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান বলেন, শতকরা ২০ শতাংশ মানুষের চোখের গঠন এমন যে তারা দূরের জিনিসটাকে ঠিকমত দেখতে পারেনা। এজন্য তাদের কিছুটা সাহায্যের প্রয়োজন। সেজন্য চশমা পড়তে হয়। একটি শিশু যখন চোখে দূরের জিনিস দেখতে পারে না, তখন থেকে  চশমা না পড়লে বেড়ে ওঠার সাথে সাথে তার চোখের পাওয়ারও পরিবর্তন হয়ে যায়। ৮ থেকে ১০ বছরের মধ্যে কারো কারো ক্ষেত্রে চোখ দেখতে  বড়দের মতো হয়। সেক্ষেত্রে চোখ নরমাল হলে তার আর চশমা পরতে হয় না। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাদের ছোটবেলা থেকেই চশমা লাগে পরবর্তীতে তাদের চোখটা আর নরমাল হয় না। তাদের পরবর্তীতে সবসময়ই চশমা পরতে হয়। তবে এক্ষেত্রে চশমা পড়লে চোখ খারাপ হয়ে যাবে কিংবা চশমা পরে থাকলে চোখ ঠিক থাকবে এগুলো ভুল ধারণা। কারণ চোখের পাওয়ার শেপের উপর ডিপেন্ড করছে। তাই শিশুদের যখন চশমা প্রয়োজন তখন চশমা পড়তে হবে। আর প্রতি বছর চশমার পাওয়ার চেক করে নতুন পাওয়ারের চশমা পরতে হবে।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Moscow & St.Petersburg 6D/5N

মূল্য: 145,000 Taka

Maldives (Paradise Island-Water Vila & Hulhumale) 4D/3N

মূল্য: ৬৯,৯০০ টাকা

অনেকেই মনে করেন লেজার বা ল্যাসিক করার পর চোখে আর চশমা পরতে হয় না। এটি কি সঠিক?-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান বলেন, লেজার বা লাইট এনার্জি দিয়ে আমরা নানা রকম কাজ করি। যদি লেজার দিয়ে চোখের কর্নিয়ার সেইপ চেঞ্জ করে থাকি তাহলে সেটাকে বলা হয় ল্যাসিক। ল্যাসিকের মাধ্যমে চোখের কর্নিয়ার সেপ বা গঠন পরিবর্তন করে চশমা পড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। শুধু মাইনাস পাওয়ারই নয়, প্লাস পাওয়ার এর ক্ষেত্রেও ল্যাসিক করা যায়। চোখের লেন্সটি অস্বচ্ছ হয়ে গেলে সেটিকে ছানি বলে। সেই অস্বচ্ছ লেন্সটি বের করার জন্য লেজার ব্যবহার করা হয়। কারো চোখের রেটিনাতে লেজার করা হলে সেক্ষেত্রে তার চোখের কর্নিয়া বা লেন্সের লেজার করা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে তার চশমা পরা থেকে মুক্তি হচ্ছে না। ডায়াবেটিস রোগীদের যাতে রক্তক্ষরণ না হয়, সেজন্য চোখের রেটিনায় লেজার করা হয়।

গ্রামে-গঞ্জে প্রচলিত একটা কথা আছে, চোখে সুরমা পড়লে এবং চোখে শামুক-ঝিনুকের পানি লাগালে চোখ ভালো থাকে। এ কথাটির সত্যতা কতটুকু?-এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. নিয়াজ আব্দুর রহমান বলেন, গ্রামেগঞ্জে কোন শিশু খেলতে গিয়ে চোখে আঘাত পেলে অভিভাবকরা চোখে শামুক ঝিনুকের পানি লাগায়। এটা চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। চোখের আলসার হতে পারে। এমনকি চোখটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চোখে আঘাত পেলে সাথে সাথে পরিষ্কার পানির ঝাপটা দিতে হবে। অথবা চিকিৎসকের কাছে গিয়ে এন্টিবায়োটিক ড্রপ দিতে হবে।

সূত্র: ডক্টর টিভি

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

১২৩০ বর্গফুটের দক্ষিণমুখি ফ্ল্যাট মাত্র ৩৭ লক্ষ টাকায়!

১২৩০ বর্গফুটের দক্ষিণমুখি ফ্ল্যাট মা...



৩২৭ বার পড়া হয়েছে