ঐতিহাসিক নিদর্শন মোড়াপাড়া জমিদারবাড়িসহ প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়ার ও দেখার জন্য মোটরবাইকে ছুটলাম। সঙ্গী দে-ছুট ভ্রমণ সংঘের সদস্য মারুফ। সকাল পৌনে ৯টায় অ্যাভেঞ্জার বাইক স্টার্ট। সাভার, আশুলিয়ার পথে বাইক ছুটছে। গাজীপুর হয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ। পুরো পথটাই যেন প্রকৃতির সন্তান। রূপসী গিয়ে বামে মোড়। কিছুক্ষণ চলার পরই মোড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে কষে একখান ব্রেক।

প্রথম দর্শনেই চোখ জুড়িয়ে যায়। বাড়ির দেয়ালজুড়ে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য। সামনে-পেছনে রয়েছে শাণবাঁধানো পুকুর। বিশাল উঠোন। ১৮৮৯ সালে জমিদার রাম রতন ব্যানার্জী এই বাড়িটি নির্মাণ শুরু করান। আর শেষ করেন তার নাতি জগদীস চন্দ্র ব্যানার্জী।

 জগদীস চন্দ্র ব্যানার্জীর দাদা রাম রতন ব্যানার্জী ছিলেন নাটোর এস্টেটের কোষাধ্যক্ষ। তিনি ছিলেন সৎ। তার সততার কারণেই উচ্চতর পদে আসীন হয়েছিলেন। কথিত আছে তিনি শুধু বাড়িটির ভিত্তি ও কাঠামো স্থাপন করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে প্রতাপ চন্দ্র ব্যানার্জী পুরনো বাড়ি ছেড়ে পেছনে গিয়ে বাড়ি করে বসবাস করেছেন।

১৯০৯ সালে বাড়িটি সম্পন্ন হওয়ার পর এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তি জগদীস চন্দ্র ব্যানার্জী নিজেই একজন জমিদার হয়ে উঠেন। তিনি ছিলেন দিল্লির দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। তার আমলে প্রজাদের সুযোগ-সুবিধার জন্য অনেক কিছুই তৈরি করেছিলেন। সেই সঙ্গে শাসক হিসেবেও ছিলেন অনেক কঠোর। প্রজারা ঠিকমতো খাজনা পরিশোধ না করলে ধরে এনে চুল কেটে দিতেন। অবাধ্য প্রজাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় জমিদার জগদীস চন্দ্র ব্যানার্জী কলকাতা চলে যান। দ্বিতীয়তলা বিশিষ্ট জমিদার বাড়িতে রয়েছে শতাধিক কক্ষ। আরও  রয়েছে পুরাতন সব বৃক্ষ।

৪০ একরের জমিদার বাড়িটি এখন মোড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাড়ির সামনে যতটা আকর্ষণীয় ঠিক তার উল্টো পেছনের অংশটা দিনের আলোতেই ভুতুড়ে পরিবেশ। জরাজীর্ণ ভগ্নদশায় থাকা ইমারতে খানিকটা সময় ফটোসেশন।

অতঃপর স্থানীয় কিশোর-তরুণদের সঙ্গে কিছুক্ষণ আড্ডা মেরে আবারো ছুটে চলা। বাইক চলছে। যে পথে যাই,সেই পথে না ফিরে অন্যপথে চলি। এতে ভ্রমণের মজাই আলাদা।নতুন কিছু দেখা ও চেনা যায়।

ফিচার বিজ্ঞাপন

কলম্বো ৩দিন ২ রাত

মূল্য: ১৭,৯০০ টাকা

Australia Visa for Businessman

মূল্য: 20,000 Taka

চলতে চলতে রূপগঞ্জের ফেরিতে ভেসে তিনশ’ ফিট পেরিয়ে জিন্দাপার্কের সামনে। স্থানীয় এক মসজিদে জোহর নামাজ আদায় করে বসে যাই পথের পাশে এক ঝুপড়ি হোটেলে। লাকড়ির চুলোয় রান্না করা। ভাত-ভর্তা,ডাল,গোস্ত আর বাইম মাছ। স্বাদের কথা আর নাই লিখলাম। জাস্ট ৫ জনের ভাত দুইজনেই সাবাড়। খাবার শেষে চাইলাম জিন্দাপার্কে হ্যামোকে ঝুলব। মারুফের বাধায় তা আর হলো না। বাইক স্টার্ট,তরিকুলের ডাকে ছুটলাম হাওর পানে। আজ এ পর্যন্তই। অন্য আরেক সংখ্যায় লিখব হাওর ভ্রমণের গল্প।

যোগাযোগ: গুলিস্তান-সায়েদাবাদ হতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ভুলতা পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে। রূপসী-ভুলতা বাসস্ট্যান্ড হতে সিএনজিতে মোড়াপাড়া জমিদারবাড়ি।

Source: Jugantor

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



১৬৬ বার পড়া হয়েছে