নির্জন বনে হাঁটাপথ ধরে ঘুরে বেড়ানোর আকর্ষণ অন্য রকম প্রধান সড়কের পাশ ঘেঁষে উঁচু-নিচু বিশাল পাহাড়। এই পাহাড়ের নিচে বিশাল গর্জনবাগান। সড়কের পূর্ব পাশে নাফ নদী। তারপর মিয়ানমার সীমান্ত। নীল জলের শান্ত নাফ নদীতে পালতোলা নৌকা আর জেলেদের মাছ ধরার প্রতিযোগিতা, পাহাড়ের পাশে নির্জন সবুজ বনে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। এ রকম আনন্দ উপভোগ করতে হলে আপনাকে যেতে হবে দেশের সর্বদক্ষিণ সীমান্ত শহর টেকনাফে। সেখানকার গেম রিজার্ভে, নেচার পার্কে। সবাই টেকনাফে আসেন সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করতে। তবে এখানকার বনানীর আকর্ষণও কম নয়। এখানে আছে হেঁটে ঘুরে দেখার মতো বেশ কিছু জায়গা।
গেম রিজার্ভ
কক্সবাজার শহর থেকে ৮৮ কিলোমিটার দক্ষিণে টেকনাফের দমদমিয়া এলাকায় মুছনী
গ্রামে গেম রিজার্ভের অবস্থান। এটি দেশের একমাত্র গেম রিজার্ভ। সড়কপথে
কক্সবাজার শহর থেকে সেখানে যেতে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। বিশাল এই গেম
রিজার্ভ ঘুরে আপনি প্রকৃতি, বন্য পশুপাখি, গাছপালা, ফল-ফুলসহ নানা দুর্লভ
দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
নেচার পার্ক
টেকনাফ শহর থেকে প্রায় নয়
কিলোমিটার উত্তরে, মুছনী বন বিটের আওতাধীন দমদমিয়ায় টেকনাফ নেচার পার্ক
প্রতিষ্ঠা করা হয়। কয়েক হাজার শতবর্ষী গর্জনগাছে ভরপুর বিশাল এই বনের ভেতর
ভ্রমণের জন্য রয়েছে তিনটি হাঁটাপথ। এই পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে আপনি ক্লান্ত
হলে ভাবনার কিছু নেই, মোড়ে মোড়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিশ্রামাগার। পাহাড়ে
তৈরি করে রাখা হয়েছে একাধিক চৌকি। এখানে টাওয়ারে বসে নির্জন বনের হাতি,
হরিণ, বানর, নানা পশুপাখির ডাক মনভরে অবলোকন করতে পারেন। দেখবেন পাহাড় থেকে
নেমে আসা একাধিক ছড়া। ছড়ার ঠান্ডা ও শীতল জলে শরীর ভিজিয়ে নিতে মন আনচান
করবে। নেচার পার্কের বাইরে গাড়ি পার্কিং ও থাকার সুব্যবস্থা রয়েছে। নেচার
পার্কটি টেকনাফ গেম রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত।
গহিন বনের সরু কাঁচা পথ ধরে হাঁটলে নজরে পড়ে গাছে গাছে বন্য পশুপাখি এবং সেগুলোর হাঁকডাক। দূর থেকে শোনা যায় হাতির পালের গর্জন।
পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি করা চৌকিতে উঠে পুরো বনের চিত্র এবং নাফ নদী ও
মিয়ানমারের আরাকান সীমান্ত প্রত্যক্ষ করা যায়। বনে হাঁটার সময় হিংস্র বা
বন্য প্রাণী সামনে পড়ে গেলে অনেকে এই চৌকিতে উঠে রক্ষা করে। বলতে গেলে
প্রায় আড়াই ঘণ্টায় গহিন অরণ্য ঘুরে আসা যায়। বনের ভেতর হাঁটার জন্য
আঁকাবাঁকা তিন কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা রয়েছে। দল বেঁধে এই রাস্তায় হাঁটা
গেলে আনন্দের মাত্রা বাড়ে।
এখানে ভ্রমণে গেলে আরামদায়ক কাপড় ও জুতা পরে
নেওয়া ভালো। রোদ থেকে রক্ষার জন্য চশমা, টুপি ও সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার
করা যায়। বর্ষায় ছাতা ও পায়ে গামবুট থাকা দরকার। আর শীতকালে মোটা কাপড়
থাকলেই যথেষ্ট। বাইনোকুলার অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে যাবেন। নিতে হবে খাওয়ার পানি ও
হালকা খাবার। কারণ পুরো পার্কের ভেতর এসবের কোনো ব্যবস্থা নেই।
নিসর্গ
সহায়তা প্রকল্পের কর্মকর্তা বিশ্বজিত্ সেন জানান, বনের আশপাশে আদিবাসী
গ্রামে প্রবেশের আগে অনুমতি নিতে হয়। বনে প্রবেশের সময় ইকো-ট্যুর গাইড
সঙ্গে থাকলে কম সময়ে নিরাপদে পুরো বন ভ্রমণ করা যায়। বনের ভেতর যত্রতত্র
ময়লা-আবর্জনা ফেলা একেবারে নিষেধ। ছাড়া বন্য প্রাণীকে খাওয়ানো থেকেও বিরত
থাকতে হবে। জোরে আওয়াজ করা যাবে না, যাতে বনের পশুপাখি ভয় পায়। বনের
পশুপাখি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়াও নিষেধ। বন ঘুরে নিয়ে যেতে হবে স্মৃতি; কোনো
ফল, ফুল কিংবা লতাপাতা নয়। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুমে এই গেম
রিজার্ভ বেড়ানোর উত্তম সময়।
প্রকৃতি ব্যাখ্যা কেন্দ্র
নেচার
পার্কের ভেতর আধুনিক স্থাপত্যকলায় নির্মাণ করা হয় ‘ঐরাবত প্রকৃতি ব্যাখ্যা
কেন্দ্র’। দ্বিতল এই কেন্দ্রে নানা বন্য পশুপাখি ও ঐতিহাসিক প্রাকৃতিক
দৃশ্যপট সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রের ওপর থেকে দূরে গহিন বনে
পশুপাখির বিচরণও সহজে প্রত্যক্ষ করা যায়। এখানে অল্প খরচে রাত-দিন থেকে
বনের অজানা তথ্য সংগ্রহ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Maldives (Hulhumale Island) 3D/2N
Dubai (City Tour) 4D/3N
পানাম সিটি প্রাইভেট ডে লং ট্যুর
কুদুম গুহা
গেম রিজার্ভের অভ্যন্তরে রইক্ষ্যং এলাকায় কিংবদন্তির কুদুমগুহা অবস্থিত।
দুর্গম পাহাড় অতিক্রম করে কুদুম গুহায় যেতে হলে অবশ্যই বনপ্রহরী সঙ্গে নিতে
হবে।
আবদুল কুদ্দুস
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত আয়োজন এখানে অপেক্ষা করছেপূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত ...
১,০৫৫ বার পড়া হয়েছে




