করোনা মহামারির ভয়াবহতম বিস্তারের মধ্যে বাড়তি উদ্বেগ হিসেবে এসেছে ডেঙ্গু জ্বর। বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের মানুষ এমনিতেই দিশেহারা। এমন পরিস্থিতিতে নতুন মহাবিপদ ডেঙ্গু। দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন রোগী পাওয়া গেছে ৩০৬ জন। এরমধ্যে ২৭৩ জন ঢাকার। চলতি বছরের ১৪ জুলাই প্রথম ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর খবর আসে।

বুধবার (১৮ আগস্ট) নাগাদ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে এ বছর চিকিৎসা নেওয়া ৬ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ হাজার ৭৩৩ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা প্রটোকল আপডেট করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন। আপডেট প্রটোকলের ব্যাপারে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। ডেঙ্গুকে দৃশ্যমান শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, ডেঙ্গু মশাবাহিত একটি রোগ। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে সামনে দেখা দেবে মহাবিপদ।

বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। সেই বছর আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ালেও ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটা কম ছিল। গত বছর ১ হাজার ৪শ ৫ জন রোগী হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নেন। চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে এর চেয়ে বেশি রোগী আক্রান্ত হওয়ায় জনস্বাস্থ্যের উপর চাপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তুলনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতরের মুখপাত্র ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি তাতে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি নয়, কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এটি অত্যন্ত উদ্বেগের। আমরা মনে করি, এ বিষয় নিয়ে সম্মিলিতভাবে সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগ যেভাবে কাজ করছে, এই কাজের গতি বাড়িয়ে দিলে খুব সহজেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব।’

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, ডেঙ্গু এডিস মশার কামড়ে হয়। নগরীর চার পাশের ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকা, নোংরা ড্রেন পরিষ্কার না করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে মশার প্রজনন বেড়ে গেছে। অথচ নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলে এবং মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করলেই মশাবাহিত এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Maldives (Centara Ras Fushi Resort & Spa) 3D/2N

মূল্য: ৫৯,৯০০ টাকা

Kandy- Negombo & Colombo 5D/4N

মূল্য: 27,900 Taka

এ বছর বাংলাদেশে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বেশি হচ্ছে। চোখ, নাক ও ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ, বমি, পেটব্যথা, খাদ্যনালী, মূত্রনালিসহ বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষরণের উপসর্গ নিয়েই ডেঙ্গুতে আক্রান্তরা হাসপাতালে বেশি আসছে। জ্বর, মাথাব্যথার উপসর্গ অপেক্ষাকৃত কমই পাওয়া যাচ্ছে। বেশিরভাগ রোগীরই রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা ২০ হাজারের কম পাওয়া যাচ্ছে। এ কারণেই এবারের ডেঙ্গু অন্যবারের চেয়ে আলাদা বলে মনে হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গু চিহ্নিত একটি রোগ। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। এটা উদ্বেগজনক। বর্তমানে কারো সর্দি, কাশি ও জ্বর হলে ডেঙ্গু ও করোনা দুটোর পরীক্ষা এক সাথে করতে হবে। ডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল ছাড়া কোনো ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শে চলতে হবে।

সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, এবার ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। রোগীর রক্তক্ষরণ হচ্ছে, প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। তাই সোসাইটি অব মেডিসিনের পক্ষ থেকে করোনা ও ডেঙ্গুর চিকিৎসা প্রটোকল আপডেট করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ১৩টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী শনিবার থেকে ৭ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ চলবে। তিনি বলেন, এবার ডেঙ্গুতে তরুণদের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এজন্য এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। জমাট বাঁধা স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার জন্ম হয়। মশা নিধন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবহেলা করলে সামনে মহাবিপদ নিশ্চিত।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



২৩৬ বার পড়া হয়েছে