২০১৮ সালের ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশিদের জন্য ভারতের বরফে ঘেরা অঙ্গরাজ্য সিকিমে প্রবেশ করা ছিল প্রায় অসম্ভব। কারণ বাংলাদেশিদের জন্য সিকিম ভ্রমণে ছিল কঠোর নিষেধাজ্ঞা। তবে ওই বছরের ডিসেম্বরেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় বরফের ছোঁয়া পেতে আর বাধা থাকেনি বাংলাদেশিদের জন্য। সেই সময় থেকেই সিকিমের বরফের পাহাড়ের আলিঙ্গনে মেতে ওঠেন বাংলাদেশের হাজারও ভ্রমণপিপাসু।

বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া থেকে সড়কপথে ১৩৯ কিলোমটার দূরে অবস্থিত বরফে ঘেরা সিকিম। যার কোলজুড়ে রয়েছে হিমালয় পর্বতমালার তৃতীয় সর্বোচ্চশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা।

সিকিম হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে ছোট রাজ্য। এর আয়তন মাত্র সাত হাজার ৯৬ বর্গ কিমি হলেও ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে এ রাজ্যটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ছোট্ট এই রাজ্যের পশ্চিমে নেপাল, পূর্বে ভুটান, উত্তর ও উত্তর-পূর্বে চীন এবং দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক। সত্যজিৎ রায়ের রচিত ফেলুদা সিরিজের বই ‘গ্যাংটকে গণ্ডগোল’-এ যেমনটি বর্ণনা করা হয়েছিল, এ শহরটি যেন তার চেয়েও বেশি অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এক হাজার ৬৫০ মিটার উচ্চতায় গ্যাংটকের অবস্থান।

গ্যাংটক হচ্ছে এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর এবং পরিষ্কার শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানকার প্রধান সড়কে ময়লা ফেলা ও ধূমপান করা রাজ্যের আইন অনুযায়ী অপরাধ। শহরের প্রধান ফটক এমজি মার্গে সবসময় দেখা মেলে পর্যটকদের। এ রাস্তাটি ধরে হাঁটার সময় কখন যে সন্ধ্যা নেমে রাত হয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না। ব্যস্ত এই রাস্তাটিতে সারাদিন চক্কর দেওয়ার মধ্যেও যেন এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে।

এর আগে বাংলাদেশিদের সিকিম ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকাকালে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছি সেখানে যাওয়ার। কিন্তু কোনোভাবেই সেখানে যাওয়ার কোনো উপায় খুঁজে পাইনি। পরে ২০১৮ সালের শেষে হঠাৎ ঘোষণা এলো ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য সিকিম যাওয়ার অনুমতি পাওয়া যাবে। এ খবর শোনার পর থেকেই মনে মনে একটা প্রস্তুতি শুরু করে দিই। তার পর অনেক জল্পনা-কল্পনার শেষে, ওই বছরেরই ২৮ ডিসেম্বর সিকিমের উদ্দেশে প্রথমবারের মতো বের হয়েছিলাম। তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা থেকে শিলিগুঁড়ি হয়ে গ্যাংটক শহর যেতে লাগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা।

ফিচার বিজ্ঞাপন

কুনমিং ৪ দিন ৩ রাত

মূল্য: ৪২,৯০০ টাকা

সেবারের সিকিম ভ্রমণে গিয়ে আট দিন ছিলাম। ঘুমের সময় বাদে প্রতিটি মিনিটকে কাজে লাগিয়েছি। পায়ে হেঁটে ঘুরেছি শহরের প্রতিটি অলিগলি। বাংলাদেশি হিসেবে নিজেদের আত্মপরিচয় সেখানে তুলে ধরতে পেরে ভালোলাগা কাজ করেছে অনেক। আর তখনও বাংলাদেশিদের আনাগোনা কম থাকায় আতিথেওতাও কম পাইনি। সাদরে আমাদের স্বাগত জানিয়েছিলেন বিভিন্ন দোকানি থেকে শুরু করে হোটেল ও ট্যুর এজেন্সির মালিকরা।

সেবারের ভ্রমণে দো-দ্রুল মনেস্ট্রি, রুমটেক মনেস্ট্রি, তাসি ভিউ পয়েন্ট, গানেসটক, হানুমানটক, গ্যাংটক রূপওয়ে ক্যাবল কার, বাটার ফ্লাই ফল, নাগা ফল এবং পাহাড়ের সুউচ্চতায় বরফে ঘেরা সাঙ্গু লেক দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। এ ছাড়া নর্থ সিকিমের লাচুং, ইমাথাং ভ্যালি এবং ইন্দো চায়না জিরো পয়েন্টসহ নানা জায়গায় ভ্রমণ করেছিলাম। সেখানেই জীবনে প্রথমবারের মতো বরফ ও স্নো ফল দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। আর সেটির অনুভূতি যেন আজও মনের গভীরে দাগ কাটে।

২০১৮ ও ২০১৯ সালে মোট সাতবার সিকিম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। এখনও সিকিম যেন প্রতিটি মুহূর্তে আমাকে কাছে টানে। কেমন একটা আবেগ কাজ করে জায়গাটির প্রতি। পাহাড়-মেঘের খেলার ফাঁকে সবসময় উঁকি দেওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার গন্ধ পাই আজও, লকডাউনে বন্দি এই কংক্রিটের জঙ্গল থেকে।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত আয়োজন এখানে অপেক্ষা করছে

পূর্বাচল আমেরিকান সিটি | জীবনের সমস্ত ...



৩০১ বার পড়া হয়েছে