যখন মানুষের প্রাণহানির কথা আসে, তখন অন্য কোনো প্রাণী—হাঙর, সাপ বা কুমির ততটা মারাত্মক নয়, যতটা মশা। কিন্তু ডেঙ্গু জ্বরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জীবন বাঁচানো ও নিরাময়ের ক্ষেত্রে একধরনের মশা আশ্চর্যজনকভাবে শক্তিশালী মিত্রে রূপান্তরিত হয়েছে।

ডেঙ্গু জ্বর একটি ভাইরাসবাহিত রোগ, যা এডিস ইজিপ্টি মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। শরীরে তীব্র ব্যথা সৃষ্টির কারণে এর ডাকনাম ‘ব্রেকবোন ফিভার’। প্রতিবছর প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মানুষ ডেঙ্গুতে সংক্রমিত হয়। আর ২০ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণ তাপমাত্রা মশার ভৌগোলিক পরিসর সম্প্রসারিত করেছে। ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।

ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রামের গবেষকেরা অবশ্য এমন এক যুগান্তকারী কাজ করছেন, যা হয়তো মানুষের মঙ্গলের জন্য ডেঙ্গুকে পরাজিত করতে পারে। এই যুগান্তকারী কাজটি ‘ওলবাকিয়া’ নামের ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়া ও এডিস ইজিপ্টি মশার ওপর নির্ভরশীল।

‘ওলবাকিয়া’ একটি সাধারণ ও নিরীহ ব্যাকটেরিয়া। যা ফলের মাছি, মৌমাছি, মথ, প্রজাপতিসহ সব ধরনের পোকামাকড়ে ৬০ শতাংশ পাওয়া যায়। কিন্তু এটি এডিস ইজিপ্টি মশায় পাওয়া যায় না। এক দশকের বেশি আগে গবেষকেরা ওলবাকিয়া সম্পর্কে একটি বিস্ময়কর বিষয় আবিষ্কার করেন। যদি এডিস ইজিপ্টি মশাকে ওলবাকিয়া দেওয়া হয়, তবে তা তাদের ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিতকরণে বাধা দেয়।

গবেষকেরা জানতে পেরেছেন যে, মশা যখন সঙ্গম করে, তখন তাদের মধ্যে ওলবাকিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। মশার এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ডেঙ্গুর বিস্তারে তা বাধা দেয়। এসব প্রাথমিক গবেষণা একটি গবেষণাগারে করা হয়েছে। পরবর্তী ধাপ হলো, এই পদ্ধতি বাস্তব জগতে কাজ করবে কি না, তা পরীক্ষা করা। যদি ওলবাকিয়াবাহী মশা একটি এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে তা কি ডেঙ্গু রোগ কমাতে পারবে?

এ নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার ইয়োগিয়াকার্তায় গবেষণা করছে ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগের বিস্তার বন্ধে কাজ করা অলাভজনক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রাম। ‘র‌্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল’-এর অংশ হিসেবে গবেষকেরা জাকার্তার বিভিন্ন অংশে ওলবাকিয়া মশা ছেড়ে দেন। দেশটির মধ্যে ইয়োগিয়াকার্তায় ডেঙ্গু জ্বরের হার সর্বোচ্চ।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Moscow & St.Petersburg 6D/5N

মূল্য: 145,000 Taka

Email Marketing

মূল্য: ৫,০০০ টাকা

জনবসতিপূর্ণ পাড়া–মহল্লায় মশা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি অবশ্যই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি প্রচলিত সমাধান। জনসাধারণের আস্থা অর্জনের জন্য গবেষকেরা স্থানীয় কমিউনিটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তাঁরা শহরের হাজারো মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করেছেন। এই প্রকল্প নিয়ে মানুষের প্রশ্ন ও উদ্বেগের জবাব দিয়েছেন। এই প্রচেষ্টায় বছরের পর বছর গেছে। কিন্তু এই কাজের মূল্য রয়েছে।

গত জুন মাসে দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ওলবাকিয়াবাহী মশা ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৭৭ শতাংশ কমিয়েছে। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা ৮৬ শতাংশ কমেছে।

এখন ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রাম শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, ফিজিসহ বিশ্বের যেসব দেশের শহরগুলোতে ডেঙ্গু একটি হুমকি, সেখানে এই প্রচেষ্টা সম্প্রসারিত করার জন্য কাজ করছে। এই প্রচেষ্টা শুধু ডেঙ্গু নয়, জিকা, ইয়েলো ফিভার ও এডিস ইজিপ্টি মশার কারণে সংক্রমিত অন্যান্য রোগপ্রতিরোধের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে।

এই রোগের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর ওপর ওয়ার্ল্ড মসকিটো প্রোগ্রামের করা গবেষণার প্রভাবের কথা বাড়িয়ে বলা কঠিন। স্বাস্থ্যসেবার খরচে কোটি কোটি ডলার সাশ্রয় ও অসুস্থতার কারণে কোটি কোটি ঘণ্টার উৎপাদনশীলতা নষ্ট রোধ করার মাধ্যমে এই প্রচেষ্টায় ব্যয় করা প্রতি ডলার ৪ ডলার সমপরিমাণের অর্থনৈতিক সুবিধা ফিরিয়ে দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

Online Shopping BD (Facebook Live)



১৪৩ বার পড়া হয়েছে