ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ২৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৫ কিলোমিটার সড়কই কাঁচা। ইউনিয়ন পরিষদের সময়কালের সড়কগুলোও ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে। প্রায় ছয় বছর ধরে ডিএনসিসির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের সড়ক, নর্দমাসহ কোনো উন্নয়ন কাজই হচ্ছে না। এ এলাকার সব জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। ওয়াসার পানি সরবরাহ সেবারও আওতার বাইরে অনেক জায়গা। কোনো উন্নয়ন হয়নি। বরং জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধার কথা বলে ২০১৬ সালের ৯ মে সাবেক ডুমনি ইউনিয়নসহ আটটি ইউনিয়ন ডিএনসিসিভুক্ত হয়। এসব এলাকা নিয়ে ডিএনসিসির ১৮টি ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে। ডুমনি ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা- ডুমনি, পাতিরা, মস্তুল, ঢেলনা, তলনা ও কাঁঠালদিয়া এলাকা নিয়ে ডিএনসিসির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় অর্ধলাখ। বালু নদবেষ্টিত খিলক্ষেত থানার অন্তর্ভুক্ত ডুমনি ইউনিয়নের উত্তরে উত্তরখান, দক্ষিণে বেরাইদ ও ভাটারা ইউনিয়ন। পূর্বে রূপগঞ্জ ও পশ্চিমে দক্ষিণখান এলাকা। ৩০০ ফুট সড়ক, কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্পও রয়েছে এ ওয়ার্ডে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এমএনপিএল এবং সম্প্রসারিত আই-এর অংশবিশেষ এ ওয়ার্ডে অবস্থিত।
জানা যায়, ডিএনসিসির এ ওয়ার্ডে আটটি গ্রাম রয়েছে। রাজধানী ঢাকার সিটি করপোরেশনভুক্ত গ্রাম হলেও বাস্তবচিত্র প্রত্যন্ত জনপদের চেয়েও নাজুক। সিটি করপোরেশনভুক্ত হওয়ার আগের চেয়ে এখনকার দুর্ভোগের মাত্রা কয়েকগুণ বেশি। সিটি করপোরেশনভুক্ত হওয়ায় বাসিন্দারা কোনো সুবিধাই দেখছেন না। বরং তারা অন্তহীন দুর্ভোগে পড়েছেন।
এবড়ো-খেবড়ো ভাঙাচোরা সড়কে চলাচলে এলাকাবাসী রীতিমতো নাকাল হচ্ছেন। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে জমে যায় হাঁটুপানি। পয়ঃবর্জ্য নিষ্কাশন বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। আবর্জনা পরিষ্কার, মশক নিয়ন্ত্রণ সেবারও বেহাল চিত্র। এ এলাকার সব জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ সেবারও আওতার বাইরে রয়েছেন তারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্যাস-ড্রেনেজ-পানি এবং বিদ্যুতের নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ সমস্যা নিরসনের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
কাঁঠালদিয়া এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক ডুমনি ইউনিয়নের মেম্বার নির্মল সরকার যুগান্তরকে বলেন, ডিএনসিসিভুক্ত হওয়ার পরও কাঁঠালদিয়ায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের আওতাভুক্ত থাকার সময় বছরে এলাকায় সামান্য কিছু হলেও বরাদ্দ দেওয়া হতো। ডিএনসিসিভুক্ত হওয়ার পর প্রায় ছয় বছরে কোনো বরাদ্দ পাননি তারা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এলাকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ডিএনসিসিভুক্ত করলেও বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ মিলছে না। কাউন্সিলর এলাকাবাসীকে শুধু আশ্বাস দিচ্ছেন, বাস্তবে আমরা কোনো উন্নয়ন দেখছি না।
ঢেলনা এলাকার বাসিন্দা চমক তারা বিবি যুগান্তরকে বলেন, ডিএনসিসিভুক্ত হওয়ার পরও তলনা, ঢেলনা ও মৈঞ্জারটেক এলাকার তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। সড়ক ভাঙাচোরা, নর্দমা নেই। পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা রয়েছে। ওয়ার্ডের সব এলাকার একই চিত্র। তবে এসব দেখার কেউ নেই।
ফিচার বিজ্ঞাপন
US Visa for Retired Person
ব্যাংকক-ফুকেট-ফিফি আইল্যান্ড-সাফারি ওয়ার্ল্ড
মালাওয়শিয়া ও ইন্দোনেশিয়া ৭দিন ৬রাত
পাতিরা এলাকার বাসিন্দা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ডুমনি ইউনিয়ন সিটি করপোরেশনভুক্ত হওয়ার সময় শুনেছিলাম আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে। বাস্তবে আমরা কোনো উন্নয়ন দেখছি না। বরং জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে। অপরিকল্পিতভাবে ভবন ও স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। সড়ক, নর্দমা, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এসব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ডিএনসিসির তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।
সরেজমিন দেখা যায়, উত্তরা-বিমানবন্দর সড়কের খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ড থেকে ইছাপুরা পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার ভেতরে গেলে ডিএনসিসির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড। এটিই ওই এলাকার প্রধান সড়ক। বালু নদের ওপারের রূপগঞ্জের বাসিন্দারাও এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। ভাঙাচোরা-কর্দমাক্ত এ সড়কে চলাচলে ডুমনি ও রূপগঞ্জের কয়েক লাখ মানুষকে অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইছাপুরা প্রধান সড়ক থেকে পাতিরার সুলতান বাড়ি সড়কটি এখনো কাঁচা। একই চিত্র ডুমনি স্কুলসংলগ্ন সড়কের। দীর্ঘদিন ধরে এসব সড়ক পাকা করার দাবি জানালেও আমলেই নিচ্ছে না জনপ্রতিনিধিরা।
জানা যায়, নতুনবাজার থেকে ১০০ ফুট সড়ক ধরে ৩ কিলোমিটার গেলেই ‘কাঁঠালদিয়া’ গ্রাম। এর পাশে রয়েছে- কুতুবদিয়া, আমদিয়া ও বাগদিয়া তিনটি গ্রাম। চারটি গ্রাম এক সময় ডুমনির ৯ নম্বর ওয়ার্ড ছিল। প্রায় আড়াই হাজার লোকের ওই এলাকায় ৯০ ভাগই হিন্দু। একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও একটি মন্দির রয়েছে ওই এলাকায়। বেশির ভাগ বাসিন্দা হয় দিনমজুর না হয় ছোটখাটো ব্যবসা করেন।
এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসির ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ডিএনসিসিভুক্ত হওয়ার পর এ এলাকার উন্নয়নে প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে অর্থছাড় না হওয়ায় এখনো উন্নয়ন কাজ শুরু হয়নি। তবে আমরা আশা করছি আগামী জানুয়ারিতে ওই এলাকার উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
৩২৪ বার পড়া হয়েছে





