তামাক সেবন, আর্সেনিকসহ অসংখ্য রাসায়নিক, অ্যালকোহল এবং দূষণসহ নানা কারণে ক্যানসার হচ্ছে। ক্যানসারের আরেকটি কারণ হলো, রাত জাগা, রাতে কাজ করা। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন একটি জিনিস যা কোনো বস্তু বা পদার্থ কিংবা রাসায়নিক নয়, আদতে একটি অভ্যাস- তা হলো নাইট ডিউটি।

রাতে লাগাতার কাজ করাকে কার্সিনোজেনিক আখ্যা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিজ্ঞানীরা।

ডব্লিউএইচওর অধীন ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (আইএআরসি) সংস্থার গ্রুপ-২ মনে করছে, টানা রাত জাগলে শরীরের জৈব ঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লকের ভয়াবহ পরিবর্তন হয়। ফলে তৈরি হয় স্তন, প্রস্টেট, পায়ু, অন্ত্রসহ নানারকম ক্যান্সার।

গত জুনে ফ্রান্সের লিঁয়তে ডব্লিউএইচওর একটি বৈঠক হয়। এতে অংশ নেন ১৬টি দেশের ২৭ জন বিজ্ঞানী। তারা প্রত্যেকেই আইএআরসির সদস্য। গত প্রায় দেড় দশকে সারা দুনিয়ায় হওয়া অনেক গবেষণার সঙ্কলন করে তারা একপ্রকার নিশ্চিত যে, টানা নাইট শিফটে কাজ করার জেরে শরীরে জন্ম নিতে পারে ক্যান্সার।

ডব্লিউএইচওর ওই বিজ্ঞানীদের এ মূল্যায়ন সম্প্রতি বিজ্ঞানপত্রিকা ল্যান্সেট-অঙ্কোলজির জুলাই সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এর পরই সারা দুনিয়ায় আলোড়ন পড়েছে চিকিৎসক মহলে। বিষয়টি ফলাও করে ছেপেছে ইউরোপিয়ান সোসাইটি ফর মেডিকেল অঙ্কোলজির মতো ক্যানসার বিশেষজ্ঞদের সংগঠনও।

চিকিৎসকরা মনে করছেন, হাসপাতাল, হোটেল, সংবাদমাধ্যম, নিরাপত্তা এজেন্সি, তথ্যপ্রযুক্তি, কারখানার পাশাপাশি পরিষেবা ক্ষেত্রের এমন অনেক পেশা আছে, যাতে নিত্য নাইট ডিউটি করতে হয়।

ফিচার বিজ্ঞাপন

Cambodia (Phnom Penh & Siem Reap) 6D/5N

মূল্য: 43,900 Taka

ভারতীয় ক্যান্সার শল্য-চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘ডিউটি রস্টার তৈরির ব্যাপারে ভারতে যেহেতু পশ্চিমের মতো স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রতিফলন নেই, তাই টানা রাত জেগে কাজ করার কুপ্রভাব আমাদের দেশে ঢের বেশি।’

কেন টানা নাইট শিফটে কাজ করাকে কার্সিনোজেনিক বলা হচ্ছে? ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল খান বলেন, ‘প্রকৃতি আমাদের জন্য রাতকেই নির্দিষ্ট করে দিয়েছে ঘুমের জন্য। আমরা যদি কেউ টানা সেই নিয়মটা ভেঙে চলি, তাহলে আমাদের শরীরের জৈব ঘড়ি তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না। তখন শরীরের উপর চাপ বাড়ে। সেটা সামলাতে, বলা ভালো, তার প্রতিক্রিয়ায় সারা শরীরেই অসংখ্য ফ্রি র‌্যাডিক্যালস তৈরি হয়। সেগুলোই আসল খলনায়ক। বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসারপ্রবণ টিউমারের জন্ম দিতে এসব ফ্রি র‌্যাডিক্যালস ভূমিকা রাখে।’

তবে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সপ্তাহে একদিন বা মাসে চার-ছ’দিন নাইট ডিউটিতে তেমন কোনও সমস্যা নেই। সমস্যাটা তখনই, যখন দিনের পর দিন কেউ রাতেই কাজ করে চলেন, ইচ্ছা করে বা বাধ্য হয়ে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক মুখপাত্র বলছিলেন, নাইট শিফট বলতে শুধু নাইট ডিউটি করাকেই নয়, ভূমধ্যসাগর পেরোনো রাতভরের বিমানযাত্রাকেও এর আওতায় ফেলা হচ্ছে। সারা দুনিয়ায় প্রতি পাঁচজন কর্মীর মধ্যে একজন নাইটি ডিউটি করেন। তাই আশঙ্কাও অনেক বড়।

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।



৬৪২ বার পড়া হয়েছে