ঘর সাজাতে সব সময়ই দামি জমকালো জিনিস লাগবে, তেমন কিন্তু নয়। ছিমছাম আসবাব আর হালকা উপকরণ ব্যবহারে অন্দরের সাজ হয়ে উঠতে পারে অনন্য। প্রয়োজন একটু বুদ্ধি খাটানো আর সৃজনশীলতার।
নারায়ণগঞ্জের ভূঁইয়াপাড়ার বাড়িটিই দেখুন। ১ হাজার ৪০০ বর্গফুট, অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই। সমান আসবাব আর অল্প জিনিসের ব্যবহারে ঘরগুলো পেয়েছে প্রশস্ততা। পরিশীলিত রঙের ব্যবহার মনকে করে শান্ত। এই বািড়র গৃহকর্ত্রী নাসরীন হক পেশায় ছিলেন আইনজীবী। তাঁর স্বামী রমজান ভূইয়া একজন ব্যবসায়ী। ছোট বেলা থেকেই বেঞ্চের প্রতি দুর্বলতা ছিল নাসরীন হকের। স্কুলে যখন বন্ধুদের সঙ্গে বেঞ্চে বসে ক্লাস করতেন বা আড্ডা দিতেন, সেই বিষয় খুব টানত তাঁকে। বাসার বাসিন্দারাও বেশ আড্ডাপ্রিয়। এসব ভেবেই নাসরীন তাঁর অন্দরসজ্জায় প্রাধান্য দিয়েছেন বেঞ্চকে। গতানুগতিক আসবাব থেকে একটু বৈচিত্র্য হলো আবার পুরোনো বাড়ি পেল নতুন রূপ।
বাড়ির বাসিন্দাদের পছন্দের রং ধরে নাসরীন হক নিজেই সাজিয়েছেন একেকটি ঘর।
নাসরীন বলছিলেন, প্রতিটি বাসার মানুষ যেমন আলাদা, তেমনি আলাদা তাঁদের জীবনযাপনের গল্প। অন্দরসাজে যদি সেটি ফুটিয়ে তোলা যায়, তবেই না ঘর হয়ে ওঠে অনন্য।
ভূঁইয়াপাড়ার এই বাসার ছবি তুলতে যখন আমরা নারায়ণগঞ্জে যাই, তখন বেশ কিছুটা অবাক হয়েছিলেন আমাদের আলোকচিত্রী। কারণ, পাঁচতলার পুরোনো এই বাড়ির বাইরে থেকে দেখে সত্যিই বোঝার উপায় নেই যে এর পঞ্চম তলার অন্দরের রয়েছে এক নান্দনিক রূপ। অনেকেই ভাবেন, পুরোনো বাসা আর কী সাজাব? এই ভুলটা ভাঙবে তাঁদের এই বাড়ি দেখে। নাসরীন হক তাঁর সৃজনশীলতা দিয়ে সাজিয়েছেন পুরো বাড়ি। বাড়িজুড়ে রং, আলোর ব্যবহারে কৌশলে ঘরগুলো সেজেছে নতুন সাজে। রঙের পাশাপাশি কারুকাজহীন আসবাব, পুরোনো আসবাবে নতুন রং, নিচু আসবাব পুরোনো ঘরগুলোকে দিয়েছে নতুন ভাষা।
আগেই বলেছি, নাসরীন হকের বেঞ্চ খুব প্রিয়। উৎসব-আনন্দে সব সময়ই জমজমাট এই বাসা। বাসার মানুষদের এই আন্তরিকতার প্রকাশ ঘটেছে প্রতিটি ঘরেই। গল্প-আড্ডার জন্য প্রতিটি ঘরেই আছে বেঞ্চ। তবে এতে কিন্তু একঘেয়েমিপনা আসেনি। কারণটা বেঞ্চের নকশার বৈচিত্র্য। বাড়িতে কেবিনেট তৈরির সময় যে কাঠগুলো পড়েছিল, সেগুলো দিয়ে বানানো এই বেঞ্চগুলো। যে ঘরে যিনি থাকছেন, তাঁর পছন্দ এবং কাজের ধরন অনুযায়ী তৈরি হয়েছে একেকটি বেঞ্চ। আয়েশ করে বসার জন্য বসার ঘরের বেঞ্চটা একটু বড়ই বটে। এদিকে নাসরীন হকের মেয়ে সাজতে ভালোবাসেন, তাই সাজের আয়নার সামনে রাখা হয়েছে খোলা বেঞ্চ, গোলাপি রঙের আবহ। ছেলে ও বউয়ের ঘরের বেঞ্চটা জোড়া। আরেক মেয়ের ঘরে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য সমতল বেঞ্চ। এদিকে কিছু কিছু আসবাবে নাসরীন হক নিজেই দিয়েছেন হালকা পেইন্টিংয়ে রঙের ছোঁয়া, যাতে কারুকাজহীন আসবাবের মাঝে একটু বৈচিত্র্য আসে। ঘরের বেশির ভাগ আসবাব লো হাইট। এতে ঘর যেমন বড় দেখায়, তেমনি চোখে আসে প্রশান্তি।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Canada Visa for Businessman
Dubai City tour- Dhow cruise- Desert safari- Burj Khalifa 6D/5N
থাইল্যান্ড ভিসা (বিজনেসম্যান)
রিসাইকেল মানে একই জিনিসের পুনর্ব্যবহার করতে ভালোবাসেন নাসরীন হক। নিজের সৃজনশীলতায় আনেন নান্দনিকতার ছোঁয়া। যেমন পুরোনো কাঠের ফুলদানির এক পাশ খুলে বসিয়ে দিয়েছেন আয়নার নিচে, বানিয়েছেন সাজের টেবিল। ‘বসার ঘরের বেঞ্চেরও একটা গল্প আছে। ভাগনির বাসায় বেড়াতে গিয়ে দেখলাম, ছাদে পুরোনো দিনের দুটি চেয়ার পড়ে আছে, জানলাম, সেগুলো তাঁর দাদাশ্বশুরের। চেয়ার দুটির নকশা বেশ টানল। যেহেতু ওরা ব্যবহার করছে না, তখন ভাগনির কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে এলাম চেয়ারগুলো। একটা পায়া ভাঙা ছিল, যে কারণে একসঙ্গে রাখা যাচ্ছিল না। তখন দুটি চেয়ার জোড়া লাগিয়ে সাদা রং করে বানিয়ে ফেললাম বেঞ্চ।’ একইভাবে নিজের পুরোনো শাড়িতে ব্লকের নকশায় তৈরি করেছেন ঘরের পর্দা। বাসার দরজার পুরোনো কাঠ দিয়ে বানিয়েছেন সিঁড়ি।
বাড়িজুড়েই নানা রঙের মেলা। মজার ব্যাপার হলো, পর্দা দিয়ে আসা আলোকচ্ছটা তৈরি করেছে এই রঙের মায়া। নাসরীন হকের দুই মেয়ের পছন্দ লাল ও গোলাপি রং, ছেলে ও ছেলের বউয়ের হলুদ, স্বামীর পছন্দ কালো। প্রতিটি ঘরের অনুষঙ্গের পাশাপাশি পর্দায়ও আছে পছন্দ অনুযায়ী রঙের ছোঁয়া। ভিন্ন ভিন্ন রঙের পর্দার ভেতর আলো এসে পুরো ঘরে দিয়েছে সেই রঙের আবহ।
যেমন ছেলের ঘরে হলুদ পর্দায় প্রতিফলিত আলোর ছটায় হলুদের পরশ। এদিকে রান্নাঘরে সাদার সঙ্গে লালের সমন্বয়, খাবার ঘরে সবুজ, বসার ঘরে নীল রঙের পরিমিত ব্যবহার ঘরকে শুধু প্রশান্তি দেয়নি, প্রকাশ ঘটিয়েছে বাড়ির
কৃতজ্ঞতা: নাসরীন হক, ছবি: সুমন ইউসুফ
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)৬৮৯ বার পড়া হয়েছে