বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় কাগজ নাহয় নৌকা বানানোর কাজেই লাগল। আমাদের শৈশবে এমন নৌকা, উড়োজাহাজ, শাপলা ফুল—কত কিছুই না ছিল। এখনো হয়তো অলস প্রহরে কেউ বানায় কাগজের ফুল-পাতা। শখে বানানো কাগজের ফুল হারিয়ে গেলেও ক্ষতি নেই। তবে কাজের কাগজ হারিয়ে গেলে বিপদ, নষ্ট হলেও চলবে না সেসব কাগজ।

ব্যক্তির নাম এবং যে বিষয়ের কাগজ, তা রাখার ফাইলে লিখুন (লেবেল বা ট্যাগ, ড্রয়ার বা কেবিনেট খুললেই দেখা যাবে)। একই বিষয়ের একাধিক ফাইলে নম্বর দিন, সময় উল্লেখ করাও ভালো। তাড়াহুড়াতেও খুঁজে পাবেন। নোটবুকও করতে পারেন, যাতে ফাইলের রং, নম্বর এবং অবস্থান লেখা থাকবে (প্রয়োজনে বাড়ির যে কেউ কাগজটা খুঁজে পাবে)। এমন পরামর্শই দিলেন ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসমিয়া জান্নাত। জানালেন কাগজ সংরক্ষণের উপায়।

সনদ
উপযোগী অ্যালবামে (স্বচ্ছ প্লাস্টিকের তৈরি) রাখুন। প্রথমে পরিষ্কার শুকনা কাপড়ের সাহায্যে পাউডার দিয়ে মুছে নিন সনদ। এরপর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে অ্যালবামে রাখুন। আর্দ্র আবহাওয়াতেও ভালো থাকবে। এসব কাগজ লেমিনেটিং না করানোই ভালো, দরকারে (যেমন বিদেশে পড়া) লেমিনেটিং খোলা এক ঝক্কি। পিন বা স্ট্যাপলার এড়িয়ে চলুন। ৩ থেকে ৬ মাস পর দেখুন সনদ ঠিক আছে কি না। প্রয়োজনে অ্যালবাম বদলান।

পত্রিকা ম্যাগাজিন ক্যালেন্ডার
স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সংরক্ষণ করুন। দরজার বাইরে হোল্ডার বা ‘হ্যাঙ্গিং (ঝোলানো) পকেট’–জাতীয় কিছুর ব্যবস্থা করা যায়। হকার ওখানেই রোজ পত্রিকা রাখবেন। পুরোনো হয়ে গেলে মুখবন্ধ প্লাস্টিকের বাক্সে রাখুন। এ ধরনের কালির কাগজ ফ্রিজে বিছাবেন না, স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে পারে।

ভালোবাসার বইগুলো
সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন বইগুলো পরিষ্কার করুন। ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কারের সময় ধুলা উড়ে অন্য কিছুতে পড়ে। টিস্যু বা শুকনা কাপড় চেপে চেপে পরিষ্কার করলে এ রকম হয় না (একদিক দিয়ে মোছা হলে ভাঁজের উল্টো দিক দিয়ে মুছুন, প্রয়োজনে একাধিক টিস্যু বা কাপড় নিন)। কাপড় দিয়ে মুছলে ওই কাপড় শুধু বই পরিষ্কারের জন্য রাখুন। মোছা শেষে ডিটারজেন্টে ধুয়ে শুকিয়ে রাখুন। বই ও আসবাব পরিষ্কার করুন ঘর ঝাড়ামোছার পর; কারণ, ঘর ঝাড়ার সময় ফ্যান বন্ধ রাখলেও আসবাবে ধুলা উড়ে আসেই।

কয়েকটি বই, এরপর শুকনা নিমপাতা, আবার কিছু বই-অথবা বইয়ের পেছনে তাকের ফাঁকা অংশে শুকনা নিমপাতা—যেকোনোভাবে রাখতে পারেন। বইয়ের তাকে ফুলদানিতে তাজা নিমপাতা আর কিছু ফুল রেখে সাজাতেও পারেন। তবে বইয়ের পাতায় নিমপাতা রাখলে দাগ পড়তে পারে। নিমপাতা যত দিন ঝুরঝুরে না হয়, তত দিন কার্যকর। রাসায়নিক পদার্থ এড়িয়ে চলাই ভালো। পোকার হাত থেকে বাঁচাতে কাপড়ের মধ্যে ন্যাপথলিন বেঁধে রাখুন।

একটির ওপর আরেকটি বই নয়, পাশাপাশি রাখুন (বইয়ের নামও যেন দেখা যায়)। উঠিয়ে রাখা বই (রোজকার ব্যবহার্য নয়) বছরে একটি পুরো দিন (বর্ষা–পরবর্তী মৌসুমে কোনো ছুটির দিন হতে পারে, যখন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই) বারান্দায় পাটিতে খোলা অবস্থায় রোদে রাখতে পারেন (নইলে ছত্রাক হতে পারে)। সম্ভব হলে বেশ কয়েকবার কিছু পৃষ্ঠা এগিয়ে বা পিছিয়ে দিন, যাতে অন্য পৃষ্ঠাগুলোতেও রোদ লাগে। 

ফিচার বিজ্ঞাপন

পানাম সিটি প্রাইভেট ডে লং ট্যুর

মূল্য: ৯০০ টাকা জন প্রতি

Vietnam & Cambodia 9D/8N

মূল্য: 75,900 Taka

Maldives (Fun Islands) 3D/2N

মূল্য: ৩৯,৯০০ টাকা

কোথায় রাখি, কেমনে রাখি
প্রয়োজনীয় কাগজ সাধারণত তালা দেওয়া আসবাবে রাখা হয় (ফাইল কেবিনেটেও)। দেয়াল ঘেঁষে কোনো আসবাব রাখবেন না। স্যাঁতসেঁতে দেয়ালের পাশে তো নয়ই। যেখানে আসবাব ভিজে যায়, সেখানেও নয়। মুখ সামান্য খোলা ছোট প্যাকেটে করে ন্যাপথলিন রাখতে পারেন ভেতরে।

বছরে নিদেনপক্ষে ১ থেকে ২ বার দেখে নিন কোনো কাগজ নষ্ট বা ময়লা হচ্ছে কি না (বদ্ধ জায়গাতেও ধুলা ঢুকতে পারে)। প্রয়োজনে ফাইল বদলান। মূলত ৩ থেকে ৬ মাস পর শুকনা কাপড় দিয়ে ফাইল-কাগজ পরিষ্কার করা প্রয়োজন। পরিষ্কার করে রাখার আগেই কেবিনেটের ভেতরটা (দরজার ভেতর দিকসহ) পরিষ্কার করুন, কেবিনেটে বিছানো কাগজ বা কাপড় বদলান। তবে নিয়মিত আসবাবের বাইরের দিক পরিষ্কারের সময় কেবিনেট খোলারই প্রয়োজন নেই (খুললে ধুলা ঢোকার ঝুঁকি বাড়বে)।

 প্রযুক্তির সাহায্য নিন
প্রয়োজনীয় কাগজ স্ক্যান করে রাখুন। গুগল ড্রাইভের মতো স্থানেও সংরক্ষণ করতে পারেন। কাগজ হারিয়ে গেলে, ভিজে গেলে বা দেশের বাইরে পাসপোর্ট হারিয়ে গেলেও এগুলো কাজে আসে।

স্বাস্থ্যকে নয় অবহেলা
স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কাগজ—পুরোনো থেকে নতুন—তারিখ অনুযায়ী রাখুন। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের ডায়াগনস্টিক রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সহযোগী পরামর্শক শেখ নাফিস-উর রহমান জানালেন, সময়ের সঙ্গে এক্স-রে–জাতীয় ফিল্ম নষ্ট হয়েই যায়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে (সিডি) রাখা ভালো, বিশেষত সিটি স্ক্যান ও এমআরআই–জাতীয় পরীক্ষা। পরীক্ষা করানোর সময়ই সিডির জন্য বলে রাখুন। অনেক আগের ফিল্মের সিডি করা যায় না (যন্ত্রের স্মৃতিধারণ ক্ষমতার সংকীর্ণতার কারণে)। এগুলো শুষ্ক স্থানে (নির্দিষ্ট প্যাকেটে) রাখুন। একই প্যাকেটে একাধিক ফিল্ম থাকলে মধ্যে কাগজের পরত দিয়ে রাখতে পারেন। ভেজা হাতে ফিল্ম ধরবেন না। তবে সতর্কতা সত্ত্বেও একসময় নষ্ট হয়ই। আলট্রাসনোগ্রামের চকচকে কাগজও সহজেই হালকা হয়ে আসে, এর চেয়ে এগুলোর পেপার প্রিন্ট টেকসই।

Courtesy By: prothomalo

প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।

কুইক সেল অফার

Online Shopping BD (Facebook Live)



৪৪৬ বার পড়া হয়েছে