ছোটবেলায় ভূগোল পড়ে ভাবতাম, আন্দামান একটা দ্বীপ যেখানে সেলুলার জেল আছে আর কেউ সেখানে গেলেই তাকে জেলে ঢুকিয়ে অত্যাচার করা হয়। বড় হওয়ার পরে ভুল ধারণাটা ভেঙ্গে গেলেও, মনের গভীরে ভয়টা যেন রয়েই গিয়েছিল। এবং সেটার প্রমাণ পেলাম আন্দামান পৌঁছনোর কয়েক মুহূর্ত আগেই। আকাশ থেকে আন্দামানকে দেখে কিন্তু একটাই কথা মনে হয়েছিল— স্বপ্নের দেশ!
অদ্ভুত এক ভয় মিশ্রিত অনুভূতি নিয়ে সেলুলার জেলের সামনে পৌঁছলাম। কিন্তু বাইরে থেকে জেলের গোবেচারা পাঁচিলটা দেখে ভয়টা ভেঙ্গে গেল। ভেতরে ঢুকে সব কিছু দেখতে দেখতে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ, ভাললাগা সেই সঙ্গে চাপা একটা কষ্ট অনুভব করলাম। লাইট অ্যান্ড সাউন্ড দেখতে দেখতে পৌঁছে গিয়েছিলাম স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে।
পোর্ট ব্লেয়ারের সবচেয়ে কাছের দ্বীপ রস আইল্যান্ড। এক সময় ইংরেজদের বাস ছিল এই দ্বীপেই। বর্তমানে ভারতীয় নৌ-সেনা সেখানকার বাড়িঘর সংরক্ষণ করছে।
রস থেকে একটু দূরেই রয়েছে নর্থ বে আইল্যান্ড। সেখানে বসতি নেই। কিন্তু নানারকম আন্ডারওয়াটার খেলাধুলোর আয়োজন রয়েছে। স্কুবা ডাইভিং, সি-ওয়াক, স্নর্কলিং-এর মতো নানা অ্যাডভেঞ্চারের সাক্ষী হতে পারে পর্যটকরা।
নীল ও হ্যাভলক— এই দুটি দ্বীপ আন্দামানের প্রধান আকর্ষণ। নীল দ্বীপের জলের রং আর স্বচ্ছতা দেখে যে কেউ প্রেমে পড়ে যেতে বাধ্য। এ ছাড়াও রয়েছে ভরতপুর, লক্ষ্মণপুর, সীতাপুর সৈকত।
হ্যাভলক দ্বীপটি যেন একটু অহংকারী, দামীও বটে। আসলে এখানে আছে রাধানগর বিচ। পৃথিবীর বিখ্যাত বিচগুলোর মধ্যে তার স্থান একেবারে উঁচুর দিকে। তবে ওখানে পৌঁছে মনে হল এই সৈকতের অহংকার করা মানায়। পাহাড়, জঙ্গল, সাদা বালি আর আকাশী নীল জল নিয়ে রাধানগর অসাধারণ।
হ্যাভলক থেকে বোটে চড়ে চল্লিশ মিনিট সমুদ্র পাড়ি দিলেই পৌঁছনো যায় এলিফ্যান্ট বিচ। এখানেও ব্যবস্থা রয়েছে জলের নানা খেলার। যদি কিছুই করতে ইচ্ছে না করে, তা হলে নীল জলে গা ডুবিয়ে বসে থাকাতেও মানা নেই।
ফিচার বিজ্ঞাপন
Sheraton Maldives Full Moon Resort 3D/2N
বাউন্ডারি ও রেজিষ্ট্রেশন করে নিজের প্লট বুঝে নিন
Dubai City tour- Dhow cruise- Desert safari- Burj Khalifa 6D/5N
আন্দামান ভ্রমণের সব থেকে চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা ছিল বারাতাং দ্বীপ দর্শন। কারণ সেখানে আজও বাস করে জারোয়া উপজাতির মানুষজন। তবে সেখানে যেতে হলে রওনা গিতে হয় ভোর তিনটের সময়।
রাস্তা বেশ খারাপ। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে পৌঁছে গেলাম চেক পোস্টে। কিন্তু তা খুলবে সকাল ছ’টায়। তখনই সেখানে প্রায় তিনশো গাড়ির লাইন।
চেক পোস্ট পেরিয়ে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার পথ ‘জারোয়া ল্যান্ড’। এখানে ছবি তোলা বা গাড়ি থামানো একেবারে নিষিদ্ধ। ধরা পড়লে হতে পারে জেল, জরিমানা। প্রায় ঘণ্টা দুয়েকে পর যেখানে পৌঁছলাম সেখানে বিশাল এক বার্জ অপেক্ষা করছিল আমাদের জন্য। দু’-তিনটে বাস, গোটা চারেক সুমো গাড়ির সঙ্গে প্রায় শ’দুয়েক মানুষ উঠে পড়লাম বার্জে। এক সময় বার্জ থামল গিয়ে বারাতাং দ্বীপে। সেখান থেকে বোটে করে ম্যানগ্রোভের অরণ্য আর ব্যাক ওয়াটারের মধ্যে দিয়ে চললাম চুনা পাথরের গুহা দেখতে। বোট থেকে নেমে প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে গুহায় পৌঁছতে হয়। যাত্রাপথ কষ্টকর ছিল ঠিখই, কিন্তু সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা ছিল দারুণ।
আন্দামানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু যারা প্রথম বার ওই ভূখন্ডে যাবেন, প্রতি মুহূর্তেই মুগ্ধতায় আপ্লুত হবেন এটা নিশ্চিত।
ফিরে আসার সময় নিজেকেই নিজে কথা দিলাম— তোমার সঙ্গে দেখা করতে আবারও আসব আন্দামান।
প্রাসঙ্গিক কথাঃ “ঢাকা বৃত্তান্ত”প্রচলিত অর্থে কোন সংবাদ মাধ্যম বা অনলাইন নিউজ সাইট নয়। এখানে প্রকাশিত কোন ফিচারের সাথে সংবাদ মাধ্যমের মিল খুঁজে পেলে সেটি শুধুই কাকতাল মাত্র। এখানে থাকা সকল তথ্য ফিচার কেন্দ্রীক ও ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত। “ঢাকায় থাকি”কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে এসব তথ্য একত্রিত করার ফলে তা ঢাকাবাসীকে সাহায্য করছে ও করবে। আসুন সবাই আমাদের এই প্রিয় ঢাকা শহরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। আমরা সবাই সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করি।
কুইক সেল অফার
Online Shopping BD (Facebook Live)৪৪৮ বার পড়া হয়েছে



